গাজীপুরে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ নার্সিং কলেজের অ্যাকাডেমিক ও প্রশাসনিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে অনির্দিষ্টকালের জন্য কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচি পালন শুরু করেছে শিক্ষার্থীরা।
এ সময় তারা অযোগ্য তিন শিক্ষককে অন্যত্র বদলিসহ বিভিন্ন দাবিতে বিক্ষোভ করেন। বুধবার (১৩ আগস্ট) থেকে এই কর্মসূচি শুরু হয়েছে।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, কলেজের তিন শিক্ষকের বিরুদ্ধে রয়েছে অযোগ্যতা, পাঠদানের সুশৃঙ্খল পরিবেশ বিনষ্ট করা, নারী শিক্ষার্থীদের শারীরিক হয়রানি ও মানহানি এবং শিক্ষার্থীদের নানাভাবে হয়রানি ও হুমকি দেওয়ার অভিযোগ। এই অভিযোগের ভিত্তিতে শিক্ষার্থীরা কয়েক মাস ধরে ওই শিক্ষকদের অন্যত্র বদলির দাবি জানিয়ে আসছিল।
গত ২ ফেব্রুয়ারি থেকে ৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা কলেজের একাডেমিক ও প্রশাসনিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জন করেছিলেন। ৭ ফেব্রুয়ারি সকালে কর্তৃপক্ষের আশ্বাস পাওয়ার পর তারা আন্দোলন স্থগিত করেছিল।
তবে অভিযুক্ত তিন শিক্ষক—নার্সিং ইনস্ট্রাক্টর মো. জামাল উদ্দিন ভ’ইয়া, মো. তাজুল ইসলাম ও মো. মোখলেসুর রহমান—অদ্যাবধি অন্যত্র বদলি করা হয়নি। এতে কলেজের শিক্ষার শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বিঘ্নিত হচ্ছে এবং শিক্ষার্থীদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।
শিক্ষার্থীরা ৩১ জুলাই তাদের দাবি মেনে নেওয়ার জন্য ৭ কার্যদিবসের আল্টিমেটাম ঘোষণা করেছিল। এরপর কলেজ কর্তৃপক্ষ ১২ আগস্ট নতুন পাঠদানের রুটিন ঘোষণা করে। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ওই রুটিনে পাঠদানের জন্য অভিজ্ঞ পাঁচ শিক্ষককে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি, যা শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিক্ষোভের কারণ হয়েছে।
শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ নার্সিং কলেজের স্টুডেন্টস ওয়েলফেয়ার অর্গানাইজেশন (এসডব্লিউও)-এর সভাপতি মেহেদী হাসান চয়ন জানান, দাবি মেনে নেওয়া না হলে কলেজের চারটি বর্ষের শিক্ষার্থীরা অ্যাকাডেমিক ভবনের সামনে বিক্ষোভ শুরু করেছে।
এক সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, ওই তিন শিক্ষককে অন্যত্র বদলি করা, শিক্ষার সুশৃঙ্খল পরিবেশ ফিরিয়ে আনা এবং ঘোষিত ক্লাস রুটিন প্রত্যাহার করে অভিজ্ঞ শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্ত করে নতুন ক্লাস রুটিন ঘোষণা করা। দুপুর ১২টা থেকে শিক্ষার্থীরা অনির্দিষ্টকালের জন্য শাটডাউন কর্মসূচি পালন শুরু করে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত প্রতিদিন অ্যাকাডেমিক ভবনের সামনে বিক্ষোভ চালানো হবে।
কলেজের অধ্যক্ষ উম্মে সালমা খানম জানান, শিক্ষার্থীদের স্মারকলিপি পেয়েছেন এবং তা নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের কাছে পাঠানো হয়েছে। তিনি বলেন, ইতোমধ্যেই শিক্ষার্থীদের দাবি অনুযায়ী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। তার যোগদানের আগে ফেব্রুয়ারি মাসে অধ্যক্ষ পদে নতুন নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল।
এ ছাড়া শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার ঘোষিত ক্লাস রুটিনে কিছু শিক্ষক অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। শিক্ষার্থীরা তিন শিক্ষককে অন্যত্র বদলির জন্য চাপ দিচ্ছে। তবে সরকারি বিধি অনুযায়ী অধ্যক্ষের ক্ষমতার মধ্যে নয়। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করা হচ্ছে।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন