গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ (জিএমপি) জানিয়েছে, টঙ্গীর টি অ্যান্ড টি কলোনির জামে মসজিদের খতিব মুফতি মোহাম্মদ মুহিবুল্লাহ মিয়াজীর অপহরণের অভিযোগ মিথ্যা। পুলিশের তদন্তে জানা গেছে, মুহিবুল্লাহ নিজেই পায়ে শিকল লাগিয়ে অপহরণের নাটক সাজিয়েছিলেন।
মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের সদর দপ্তরে সংবাদ সম্মেলন করে এ তথ্য জানান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশন) মোহাম্মদ তাহেরুল হক চৌহান।
মোহাম্মদ তাহেরুল হক চৌহান সংবাদ সম্মেলনে বলেন, মুহিবুল্লাহর দেওয়া অপহরণের বর্ণনা এবং স্থান-সময়সহ অন্যান্য তথ্য যাচাই করার পর কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। ঘটনার সময় এলাকার সিসিটিভি ফুটেজে তার অপহরণের কোনো চিহ্ন দেখা যায়নি।
তিনি বলেন, তদন্ত করতে গিয়ে জানা গেছে- ২২ অক্টোবর সকালে হাঁটতে বের হলে একটি অ্যাম্বুলেন্স তার পথরোধ করে। তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে নাকি অপহরণ করতেই অ্যাম্বুলেন্সে ওঠানো হয়। কালো কাপড়ে চোখ বেঁধে তাকে শারীরিক নির্যাতন করা হয়। পরে পঞ্চগড়ের স্থানীয় লোকজন জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯-এ কল করলে সদর থানার পুলিশ তাকে উদ্ধার করে। পঞ্চগড় সদর হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে তিনি টঙ্গী পূর্ব থানার পুলিশের সহায়তায় পঞ্চগড় থেকে গাজীপুরে নিজের বাসায় ফেরেন।
তিনি আরও বলেন, মামলার তদন্তকারী দল বাদীর বাসা থেকে ঘটনাস্থল পর্যন্ত বিভিন্ন স্থানের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ ও তথ্য প্রযুক্তির সহায়তা নেন। তদন্তকালে দেখা যায়, এজাহারে চার থেকে পাঁচজনকে বাদীকে জোর করে অ্যাম্বুলেন্সে তোলার কথা বলা হলেও তিন ঘণ্টার মধ্যে কোনো অ্যাম্বুলেন্সের চলাচলের দৃশ্য সিসি ক্যামেরায় দেখা যায়নি। এছাড়া যেসব স্থানের কথা বাদী উল্লেখ করেছেন, সেগুলিও যাচাই-বাছাই করা হয়েছে।
পুলিশ জানায়, মুহিবুল্লাহর অসুস্থতার কারণে তিনি ঘটনাস্থলে অচেতনভাবে বিভিন্ন কথাবার্তা বলেছিলেন। ঘটনার পর মুহিবুল্লাহ পঞ্চগড় থেকে গাজীপুরে ফিরে আসেন এবং গত ২৪ অক্টোবর টঙ্গী পূর্ব থানায় একটি অপহরণের মামলা দায়ের করেন।
তদন্তকালে জানা যায়, মুহিবুল্লাহ নিজে শ্যামলী পরিবহনের বাসে পঞ্চগড়ে গিয়েছিলেন। তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় এ রহস্য উদ্ঘাটন করা হয়েছে। এ ঘটনায় মুহিবুল্লাহর বাসের সহযাত্রী এবং বাসের সুপারভাইজারও পুলিশের হেফাজতে রয়েছেন।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার (ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ জাহিদুল হাসান বলেন, ‘এই ঘটনায় অন্য কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠী জড়িত কি না, অথবা তিনি কারো প্ররোচনায় এই কাজ করেছেন কি না, তা এখনও স্পষ্ট নয়। মামলাটি তদন্তাধীন রয়েছে এবং তদন্তের পর প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মুহিবুল্লাহ আজ আদালতে জবানবন্দি দেবেন।’


