যশোরে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে মাকে হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন পালিত ছেলে শেখ শামস (২২)।
রোববার (২৫ মে) বিকেলে যশোরের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. রহমত আলী তার জবানবন্দি নথিভুক্ত করেন। পরে তাকে যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেওয়া হয়।
এর আগে শনিবার (২৪ মে) বিকেলে যশোর নগরের মণিহারের ফলপট্টিতে নিজের শামস মার্কেটের দোতলার বাসার শোয়ার ঘর থেকে খালেদা সিদ্দিকী রুমির (৬২) রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
নিহত খালেদা সিদ্দিকী রুমি শহরের মণিহার প্রেক্ষাগৃহ এলাকার শেখ শাহজাহানের মেয়ে। কোনো সন্তান না থাকায় তিন মাস বয়স থেকে শামসকে দত্তক নিয়ে লালন-পালন করেছিলেন তিনি।
এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় শনিবার রাতেই নিহত রুমির ভাতিজা জোবায়ের তানভীর সিদ্দিকী হত্যা মামলা করেন। মামলার এজাহারভুক্ত একমাত্র আসামি শেখ শামস। তাকে মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে রোববার দুপুরে আদালতে পাঠালে হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দেন তিনি।
মামলা সম্পর্কে জানতে চাইলে যশোর আদালতের পরিদর্শক রোকসানা খাতুন বলেন, ‘আজ দুপুরে আসামি শামসকে শোর কোতোয়ালি থানা থেকে আমলি আদালতে আনা হয়। তিনি হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতের কাছে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। এর পর তাকে আদালত কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেয়।’
এ বিষয়ে নিহতের স্বজনরা বলেন, ‘প্রায় ২০ বছর আগে তিন মাস বয়সী শামসকে খুলনা থেকে দত্তক এনেছিলেন রুমি ও শেখ শাহজাহান দম্পতি। শাহজাহান প্রায় আট বছর আগে মৃত্যুবরণ করেন। ফলপট্টি এলাকায় তাদের শামস মার্কেট রয়েছে। মার্কেটের দোতালায় রুমি ও তার পালক সন্তান শামস থাকতেন। অর্থনৈতিকভাবে সচ্ছল রুমির পালক সন্তানটি মাদকসেবী।’
পুলিশ জানিয়েছে, শনিবার সকালে ফলপট্টির দোকানিরা মোটরের লাইনে পানি না পেয়ে খালেদাকে ডাকাডাকি করেন। কিন্তু ঘর থেকে কোনো সাড়াশব্দ না পেয়ে চলে যান। পরে এদিন দুপুরে আবারও ডাকাডাকি করলে ভেতর থেকে কেউ দরজা না খোলায় দোকানিরা ৯৯৯–এ কল করেন। পরে পুলিশ গিয়ে ডাকাডাকি করে। পরে শামস দরজা খুললে খালেদার লাশ উদ্ধার করা হয়।
এ ঘটনায় কোতোয়ালি থানার ওসি আবুল হাসনাত বলেন, ‘পালক ছেলে শামস মাদকাসক্ত। বিভিন্ন সময়ে মাদকের টাকার জন্য তিনি মা রুমিকে মারধর ও বাড়ির আসবাব ভাঙচুর করতেন। মাদক সেবনের টাকা না পেয়ে মাকে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করেছেন।’
আপনার মতামত লিখুন :