জীবনযুদ্ধে হেরে গেলেন কলেজছাত্রী সুমাইয়া আক্তার ছায়া (১৯)। আট দিন ঢাকার একটি হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছিলেন। অবশেষে বুধবার (৬ আগস্ট) দিবাগত রাতে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ছায়া যশোর সদর উপজেলার চুড়ামনকাটি ইউনিয়নের দোগাছিয়া গ্রামের বাসিন্দা মারফত বিশ্বাসের মেয়ে। তিনি হৈবতপুরের কাজী নজরুল ইসলাম ডিগ্রি কলেজের মানবিক বিভাগের শিক্ষার্থী এবং এবারের এইচএসসি পরীক্ষার্থী ছিলেন।
নিহতের বড় বোন মিতু জানান, গত ২৫ জুলাই দুপুরে যশোর শহরের দড়াটানা এলাকা থেকে রিকশাযোগে খড়কি এলাকায় বোনের বাসায় যাচ্ছিলেন ছায়া। পথে হঠাৎ বৃষ্টি শুরু হলে তিনি রিকশায় থাকা পলিথিনের পর্দা পায়ের নিচে চেপে ধরতে গিয়ে সামান্য নিচু হন। এ সময় অসাবধানতাবশত ওড়না রিকশার চাকায় পেঁচিয়ে গলায় ফাঁস লেগে যায়। মুহূর্তেই ছায়া রিকশা থেকে রাস্তায় পড়ে যান।
পথচারীরা ছায়াকে উদ্ধার করে প্রথমে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পর অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়। ২৯ জুলাই রাতে অপারেশনের পর তাকে আইসিইউতে রাখা হয়।
ঢাকার মিটফোর্ড হাসপাতালের নিউরোসার্জারি বিভাগের চিকিৎসক ডা. ফিরোজ আহমেদ আল-আমিন বলেন, ‘দুর্ঘটনায় ছায়ার স্পাইনাল কর্ড ছিঁড়ে যায় এবং মেরুদণ্ডে মারাত্মক ক্ষতি হয়। অপারেশন করেও স্পাইনাল কর্ড জোড়া লাগানো সম্ভব হয়নি। শুরু থেকেই তার অবস্থা অত্যন্ত সংকটাপন্ন ছিল। সব চেষ্টা সত্ত্বেও তাকে বাঁচানো যায়নি।’
বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) সকাল সাড়ে ৮টার দিকে মরদেহ বাড়িতে পৌঁছালে স্বজনদের আহাজারিতে পরিবেশ ভারি হয়ে ওঠে। জোহরের নামাজের পর স্থানীয় বিশ্বাসপাড়া জামে মসজিদের সামনে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে ছায়াকে।