ঢাকা শনিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

যশোরে মাদরাসা শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের পর হত্যা

যশোর প্রতিনিধি
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১২, ২০২৫, ১১:২৩ পিএম
মণিরামপুর থানা। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

যশোরের মণিরামপুরে মাদরাসা শিক্ষার্থী মাহমুদা সিদ্দিকা (১৩) পর হত্যার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ।

শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) মণিরামপুর থানায় অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে একটি মামলা হয়েছে।

নিহত মাহমুদা সিদ্দিকা উপজেলার রোহিতা গ্রামের আরিফুল হকের মেয়ে।

জানা গেছে, গত ৯ সেপ্টেম্বর রোহিতা গ্রামের একটি পুকুর থেকে ওই কিশোরীর নগ্ন মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। প্রথমে রটানো হয়, রুটি চুরির অপবাদ সইতে না পেরে সাঁতার না জানা কিশোরী পুকুরে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। আগের দিন মাদরাসা থেকে ফেরার পথে গ্রামের একটি দোকান থেকে রুটি চুরি করায় তার মা জনসমক্ষে তাকে জুতা পেটা করেন। অনেকেই মনে করেন, এতে অভিমানে সে আত্মহত্যা করতে পারে। তবে, পরিবারের বাধা সত্ত্বেও মণিরামপুর থানা পুলিশ মরদেহ ময়নাতদন্তে পাঠায়। এরপরই কিশোরীর মৃত্যুরহস্য উন্মোচিত হতে থাকে।

অপরাধী ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ড আড়াল করার জন্য কূটকৌশলের আশ্রয় নেয়। ধারণা করা হচ্ছে, দোকানের রুটি চুরির অপবাদকে সামনে এনে ঘটনাটিকে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দিতেই মরদেহ পুকুরে ফেলে দেওয়া হয়। তবে, পুলিশ কয়েকটি বিষয়কে সামনে রেখে এ ঘটনায় জড়িতকে শনাক্ত করার চেষ্টা চালাচ্ছে।

নিহতের মা জানান, মৃত্যুর আগের দিন দোকান মালিক আলী হাসান রুটি চুরির কথা জানালে তিনি সেখানে গিয়ে মেয়েকে জুতা দিয়ে মারপিট করে বাড়িতে আনেন। ওইদিন বেলা আনুমানিক সাড়ে তিনটা পর্যন্ত তার মেয়ে গোয়ালঘর পরিষ্কারের কাজ করেছে। এরপর কখন বাড়ি থেকে বের হয়, তা তিনি জানতে পারেননি। প্রাপ্তবয়স্ক মেয়ের সম্মানের কথা ভেবে কাউকে না জানিয়ে তারা নিজেরাই তাকে খুঁজতে শুরু করেন। পরদিন পুকুর থেকে মেয়ের মরদেহ উদ্ধার হয়।

স্থানীয় কলেজছাত্রী মিম জানান, ওইদিন বেলা সাড়ে তিনটার দিকে প্রাইভেট পড়তে যাওয়ার সময় তিনি ওই কিশোরীকে পুকুরে গোসল করতে দেখেন, কিন্তু ফেরার সময় তাকে আর দেখেননি।

নিহত কিশোরীর বাড়ি থেকে পুকুরে যেতে একটি ঘন বাগান পার হতে হয়। তাদের বাড়িও অনেকটা নির্জন এলাকায়। অনেকের ধারণা, গোসল শেষে বাড়ি ফেরার পথে কিশোরী ধর্ষণের শিকার হয়। এরপর ঘটনা ধামাচাপা দিতে তাকে হত্যা করা হয়। পরে ধর্ষণের আলামত নষ্ট করতে এবং পুরো ঘটনাকে আত্মহত্যা হিসেবে চালানোর জন্য কিশোরীর মরদেহ সুযোগ বুঝে পুকুরে ফেলে দেওয়া হয়।

ময়নাতদন্তকারী কর্মকর্তা ডা. বাবুল কিশোর প্রতিবেদন দাখিলের আগে এ বিষয়ে সরাসরি মন্তব্য করতে রাজি হননি।

এ ঘটনায় থানায় ধর্ষণসহ হত্যা মামলা নথিভুক্ত হওয়ায় কিশোরী মাহমুদা সিদ্দিকার ওপর ঘটে যাওয়া নৃশংসতার বিষয়টি পরিষ্কার।

মণিরামপুর থানার ওসি বাবলুর রহমান খান এ ঘটনায় থানায় হত্যা মামলার কথা নিশ্চিত করেছেন।