শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে টানা ছয় দিনের ছুটির ফাঁদে পড়ছে দেশের সর্ববৃহৎ বেনাপোল স্থলবন্দর। এ সময় ভারতের পেট্রাপোল বন্দরের সঙ্গে বেনাপোল বন্দরের আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য বন্ধ থাকবে। তবে বিশেষ ব্যবস্থায় ইলিশ মাছ আমদানি চালু থাকবে। পূজার ছুটির কারনে অনেক শিল্প প্রতিষ্ঠানে কাঁচামালের সংকট দেখা দিতে পারে। তবে এ ছুটিতে বেনাপোল কাস্টম হাউজ ও বন্দরে পণ্য খালাস এবং বাংলাদেশ ভারতের মধ্যে পাসপোর্টযাত্রী চলাচল স্বাভাবিক থাকবে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে বেনাপোল সিএন্ডএফ এজেন্ট এসোসিয়েশনের সাধারন সম্পাদক এমদাদুল হক লতা জানান, পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে দুর্গাপূজা ও বাংলাদেশে সাপ্তাহিক ছুটির কারণে টানা ছয় দিন আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য বন্ধ থাকবে বলে ওপারের সিএন্ডএফ এজেন্ট থেকে পত্র দিয়ে আমাদের জানিয়েছেন। তবে ভারতে বন্ধ থাকলেও বেনাপোলে কাস্টম ও বন্দরে কাজকর্ম স্বাভাবিক থাকবে।
ভারতের পেট্রাপোল ক্লিয়ারিং এজেন্টস স্টাফ ওয়েল ফেয়ার এসোসিয়েশনের সাধারন সম্পাদক কার্ত্তিক চক্রবর্তী জানান, দুর্গাপূজা উপলক্ষে ভারতে ২৮ সেপ্টেম্বর থেকে ২ অক্টোবর ও ৩ অক্টোবর বাংলাদেশে সাপ্তাহিক ছুটি মিলে টানা ছয় দিনের ছুটিতে পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে বেনাপোল বন্দরের সঙ্গে সব ধরনের আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য বন্ধ থাকবে। আগামী ৪ অক্টোবর (শনিবার) সকাল থেকে আবারও এ পথে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য চালু হবে। তবে ইলিশ মাছ আমদানি চালু থাকবে বিশেষ ব্যবস্থায়।
বেনাপোল স্থলবন্দরের পরিচালক শামীম হোসেন জানান, ওপারে দুর্গাপুজার ছুটি থাকায় ২৮ সেপ্টেস্বর থেকে ২ অক্টোবর পর্যন্ত দু‘দেশের মধ্যে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ থাকবে বলে ওপারের কাস্টমস কর্তৃপক্ষ ও সিএন্ডএফ এজেন্টরা আমাদের জানিয়ে দিয়েছেন। ৩ অক্টোবর সাপ্তাহিক ছুটি থাকায় ওইদিনও আমদানি-রপ্তানি হবে না। এ সময়ে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ থাকলেও বেনাপোল বন্দরে লোড-আনলোড ও কাস্টমসে কাজ চলবে। বন্দরে মালামাল আনলোড করে ভারতীয় খালি ট্রাক ফিরে যেতে পারবে। ইলিশ মাছ রপ্তানি অব্যাহত থাকবে। ৪ অক্টোবর সকাল থেকে দু’দেশের মধ্যে পুনরায় আমদানি-রপ্তানি শুরু হবে বলে বলে তিনি জানান।
বেনাপোল চেকপোস্ট ইমিগ্রেশন পুলিশের ওসি ইলিয়াছ হোসেন মুন্সী জানান, ভারতে পুজার ছুটির কারনে বেনাপোল-পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে পণ্য পরিবহন বন্ধ থাকলেও ভারতের সাথে পাসপোর্টযাত্রী চলাচল স্বাভাবিক থাকবে। ভারত থেকে আগত বা বাংলাদেশ থেকে ভারতগামী পাসপোর্ট যাত্রীগন স্বাভাবিক নিয়মে যাতায়াত করতে পারবেন।
উল্লেখ্য, দেশের অর্থনীতিতে বেনাপোল বন্দরের ভূমিকা অপরিসীম। বেনাপোল থেকে কোলকাতার দুরত্ব ৮৪ কিলোমিটার। এ কারণে এ পথে আমদানিকারকরা আমদানিতে আগ্রহ বেশি। প্রতিদিন বেনাপোল বন্দর দিয়ে ৩শ’ থেকে সাড়ে ৩শ’ পণ্য বোঝাই ট্রাক আসে ভারত থেকে। আর ১০০ ট্রাক পণ্য রপ্তানি হয় ভারতে। এ ছাড়াও শিল্প প্রতিষ্ঠানের কাঁচা মালামালের পাশাপাশি বিভিন্ন খাদ্যদ্রব্য আসে এই বন্দর দিয়ে। ভারত থেকে আমদানিকৃত পণ্যের ৯০ ভাগই আসে বেনাপোল বন্দর দিয়ে। টানা ছয় দিন আমদানি-রপ্তানি বন্ধ থাকায় এর প্রভাব বাজারে পড়বে বলে আশংকা করছেন ব্যবসায়ীসহ বন্দর ব্যবহারকারীরা।