খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল বিতরণে অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার অভিযোগে ঝালকাঠির কেওড়া ইউনিয়নে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শনিবার (১ নভেম্বর) সকালে ইউনিয়নের সারেঙ্গল বাজারে ভুক্তভোগী কার্ডধারী ও স্থানীয়রা এ কর্মসূচি পালন করেন।
বিক্ষোভকারীরা বলেন, ‘সারেঙ্গল বাজারের ‘নীরব স্টোর’-এ ডিলার মো. জালাল আহম্মেদ সিকদার সরকারের নির্ধারিত প্রতি কেজি ১৫ টাকার পরিবর্তে চাল বিক্রি করেছেন অতিরিক্ত দামে। তারা জানান, প্রতি কার্ডে ৩০ কেজি চালের বিপরীতে যেখানে ৪৫০ টাকা নেওয়ার কথা, সেখানে তিনি ৫৫০ টাকা নেন—অর্থাৎ ১০০ টাকা বেশি।’
তারা আরও বলেন, ‘ডিলার শুক্রবার দিন চাল বিতরণ কার্যক্রম সম্পন্ন করেছেন, যাতে তার দুর্নীতির বিষয়টি আড়াল করা যায়। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক ও সচেতন সমাজের কেউ উপস্থিত হতে পারেননি বিষয়টি না জানার কারণে।’
সারেঙ্গল গ্রামের বাসিন্দা আবদুল জব্বার মোল্লা বলেন, ‘ডিলার আমার কাছ থেকে ৫৫০ টাকা নিয়েছে। অথচ সরকারের নির্ধারিত দাম ৪৫০ টাকা। আমি সহ আরও অনেকের কাছ থেকে ১০০ টাকা বেশি নেওয়া হয়েছে।’
এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে কেওড়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি এম. এ. মান্নান লাবু বলেন, ‘খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল বিতরণে চরম অনিয়ম ও দুর্নীতি হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে ডিলারের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে।’
অভিযুক্ত ডিলার জালাল আহম্মেদ সিকদার অভিযোগ স্বীকার করে বলেন, ‘শহরে কার্ড আনা-নেওয়ার যাতায়াত খরচ আছে, তাই ৫০ থেকে ১০০ টাকা নেওয়া হয়েছে।’
তবে এই অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের আইনসঙ্গততা নিয়ে তিনি সরাসরি মন্তব্য করতে পারেননি।
এ বিষয়ে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক (ভারপ্রাপ্ত) বি. এম. শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘বাড়তি টাকা নেওয়ার বিষয়ে আমি জেনেছি। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফারহানা ইয়াসমিন বলেন, ‘অভিযোগ পাওয়ার পরই খাদ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তাকে অবহিত করেছি। ভুক্তভোগীদের অতিরিক্ত নেওয়া টাকা ফেরত দিতে বলা হয়েছে। তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হলে ডিলারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
সরকারি ‘খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির’ আওতায় হতদরিদ্র কার্ডধারীরা ৩০ কেজি করে চাল প্রতি কেজি ১৫ টাকায় কেনার সুযোগ পান। তবে চাল বিতরণে অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার ঘটনাটি স্থানীয়দের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে।



