ঢাকা বৃহস্পতিবার, ১৭ জুলাই, ২০২৫

সারা দেশে আ. লীগকে নিশ্চিহ্ন করার অভিযান চালাতে হবে: আবু হানিফ

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশিত: জুলাই ১৬, ২০২৫, ০৭:৪৯ পিএম
কিশোরগঞ্জে গণপদযাত্রা শেষে বক্তব্য দেন গণঅধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদ সদস্য ও গণমাধ্যম সমন্বয়ক আবু হানিফ। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

‘জুলাই শহীদ দিবস’ উপলক্ষে গণহত্যার বিচার ও গণহত্যায় জড়িত ফ্যাসিস্টদের রাজনীতি নিষিদ্ধকরণ এবং রাষ্ট্র সংস্কারের দাবিতে গণপদযাত্রা করেছে গণঅধিকার পরিষদ কিশোরগঞ্জ জেলা।

বুধবার (১৬ জুলাই) বেলা সাড়ে ১২টায় শহরের পুরান থানা এলাকা থেকে পদযাত্রা শুরু হয়ে শহরের বিভিন্ন এলাকা প্রদক্ষিণ করে পুনরায় পুরান থানায় এসে শেষ হয়।

গণঅধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদ সদস্য ও গণমাধ্যম সমন্বয়ক আবু হানিফ বলেন, ‘আজ সকালে গোপালগঞ্জে পুলিশের গাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও হামলা করেছে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগ। দুপুরে সমাবেশস্থলে ককটেল বিস্ফোরণ ও হামলা চালিয়েছে নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগ।’

‘পুলিশ প্রশাসনের উপস্থিতিতে এমন ঘটনা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। আওয়ামী লীগ এতদিন নিরাপদে ছিল, আজকের এই হামলার দায় তাদের নিতে হবে। ছাত্র-জনতা ও অন্যান্য রাজনৈতিক দলকে সঙ্গে নিয়ে সারাদেশে আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন করার অভিযান চালাতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আজ ১৬ জুলাই—একটি ঐতিহাসিক দিন। এই দিনে রংপুরে আবু সাঈদ এবং চট্টগ্রামে ওয়াসিমরা পুলিশের গুলির সামনে বুক পেতে দিয়েছিলেন। তাদের সেই আত্মত্যাগ আন্দোলনে নতুন মাত্রা যোগ করে, যার চূড়ান্ত রূপ ফ্যাসিস্ট হাসিনার পতনে গড়ায়।’

আবু হানিফ বলেন, ‘জুলাই অভ্যুত্থানের এক বছর পূর্ণ হলেও এখনও সেই আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়ন হয়নি। দেশের ৫৩ বছরের রাজনৈতিক ধারার পরিবর্তনের কোনো লক্ষণ নেই। সংস্কারের দৃশ্যমান অগ্রগতিও অনুপস্থিত। এখনও আওয়ামী লীগ বিভিন্ন জায়গায় গুপ্ত হামলা চালাচ্ছে, যা প্রশাসনের নীরবতায় সম্ভব হচ্ছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘জুলাই গণহত্যায় জড়িত বহু আসামি এখনো ধরা-ছোঁয়ার বাইরে। রাজনৈতিক দলগুলো ক্ষমতার স্বার্থে এই শহীদদের আত্মত্যাগ ভুলে গেছে। নিজেদের মধ্যে বিরোধে লিপ্ত হয়ে তারা পরাজিত শক্তিকে সুযোগ করে দিচ্ছে। তাই এমন পরিস্থিতি যেন সৃষ্টি না হয় যাতে আওয়ামী লীগ পুনরায় ফিরে আসার সুযোগ পায়। আওয়ামী লীগ ইস্যুতে জুলাইয়ের ঐক্যকে পুনরায় গড়ে তুলতে হবে।’

কিশোরগঞ্জে গণঅধিকার পরিষদ জেলা শাখার গণপদযাত্রা। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

‘আগামী নির্বাচন হবে ব্যতিক্রমধর্মী। তরুণ ভোটাররা এবার ভোটের হিসাব বদলে দেবে। দেশের মানুষ গতানুগতিক রাজনীতির পরিবর্তন চায়, ক্ষমতা ও পেশিশক্তির রাজনীতি আর দেখতে চায় না। জনগণ এবার চাঁদাবাজ ও দখলবাজদের প্রত্যাখ্যান করবে,’—বললেন তিনি।

পদযাত্রায় আরও বক্তব্য রাখেন—গণঅধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় সহ-দপ্তর সম্পাদক মোখলেছুর রহমান উজ্জ্বল। তিনি বলেন, ‘এক বছরেও গণহত্যার কোনো আসামিকে আটক করা হয়নি। এর দায় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকেও নিতে হবে। আওয়ামী লীগকে বিচারের আগে আর রাজনীতি করতে দেওয়া হবে না।’

সভায় সভাপতিত্ব করেন গণঅধিকার পরিষদ কিশোরগঞ্জ জেলা শাখার সহ-সভাপতি শফিকুল ইসলাম এবং সঞ্চালনায় ছিলেন সাধারণ সম্পাদক অভি চৌধুরী।

এ ছাড়াও বক্তব্য রাখেন—সহ-সভাপতি শহিদুল ইসলাম শহিদ, মাসুদুল ইসলাম সোহেল, আলহাজ্ব শামসুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইমতিয়াজ কাজল ও ইমরান হাসান, অর্থ সম্পাদক আশিকুর রহমান মাহফুজ, সহ-আইন সম্পাদক ফজল মোল্লা, যুব অধিকার পরিষদের সভাপতি সোহাগ মিয়া, সাধারণ সম্পাদক হাসান আহমেদ রমজান, ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি ইমন খান, সাধারণ সম্পাদক পায়েল চৌধুরী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল এবং শ্রমিক অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক প্রমুখ।