ঢাকা শুক্রবার, ০১ আগস্ট, ২০২৫

সাপুড়ের প্রাণ নেওয়া সাপকে চিবিয়ে খেলেন আরেক সাপুড়ে

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি
প্রকাশিত: জুলাই ৩১, ২০২৫, ০৯:৪৬ এএম
জনসম্মুখে কিং কোবরা সাপটিকে কাঁচা অবস্থায় চিবিয়ে খান সাপুড়ে মোজাহার। ছবি- সংগৃহীত

কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরীতে সাপ ধরতে গিয়ে বিষধর সাপের ছোবলে মারা গেলেন এক সাপুড়ে। আর পরে সেই সাপটিকেই কাঁচা চিবিয়ে খেলেন আরেক সাপুড়ে। ঘটনাটি এলাকায় ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে।

বুধবার (৩০ জুলাই) সকাল ১০টার দিকে নাগেশ্বরী উপজেলার বল্লভের খাষ ইউনিয়নের ডাক্তারপাড়ার সাপুড়ে বয়েজ উদ্দিন পাশের ইউনিয়ন কালীগঞ্জের কাপালিপাড়ার ইমরান আলীর বাড়িতে সাপ ধরতে যান। ঘরের ইঁদুরের গর্তে আশ্রয় নেওয়া একটি বড় কিং কোবরা এবং তার ১৫-১৬টি বাচ্চাকে খাল খুঁড়ে বের করেন বয়েজ উদ্দিন। বাচ্চাগুলো ধরার পর বড় সাপটিও হাতে নেন তিনি। কিন্তু বস্তায় ভরার আগেই হঠাৎ ছোবল মারে সাপটি।

প্রথমে বিষক্রিয়া না হলেও কিছু সময় পর বাড়িতে এসে ধীরে ধীরে নিস্তেজ হয়ে পড়েন বয়েজ উদ্দিন। এরপর ভুরুঙ্গামারী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

তার মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে বাড়িতে ভিড় করেন এলাকাবাসী ও বেশ কয়েকজন ওঝা। তাদের মধ্যে ছিলেন ভূরুঙ্গামারীর বলদিয়া বাজার এলাকার মোজাহার, যিনি এলাকায় ‘সাপ খাওয়া মোজাহার’ নামে পরিচিত। বয়েজ উদ্দিনের স্বজনদের অনুরোধে তিনি বাড়িতে গিয়ে মরদেহ দেখেন ও নিশ্চিত করেন যে, বয়েজ আর বেঁচে নেই।

এরপর বয়েজ উদ্দিনের ধরা কিং কোবরাটি ও তার বাচ্চাগুলো মোজাহারকে দিয়ে দেওয়া হয়। পরে তিনি গাবতলা বাজারে গিয়ে জনসম্মুখে সেই কিং কোবরা সাপটিকে কাঁচা অবস্থায় চিবিয়ে খান। সাপ খাওয়ার এ দৃশ্য দেখতে বাজারে ভিড় জমায় শত শত মানুষ।

ঘটনার বিষয়ে মোজাহার বলেন, এই সাপই বয়েজ উদ্দিনকে মেরেছে শুনেই বুঝেছিলাম সে বাঁচবে না। মরার পর তারা আমাকে ডাকে, আমি গিয়ে সব নিশ্চিত করি। এরপর বড় সাপটি এনে এখানে মেরে রক্ত-মাংস খেয়েছি। এটা আমার পুরোনো অভ্যাস। বাচ্চাগুলো ছেড়ে দেব।

ভুরুঙ্গামারী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. এস.এম. আবু সায়েম বলেন, সাপে কাটলে সময় নষ্ট না করে সরাসরি হাসপাতালে আনতে হবে। অ্যান্টিভেনম আমাদের কাছে মজুত আছে। ঝাড়ফুকের কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। বর্ষায় সাপের উপদ্রব বাড়ে, তাই সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।

এদিকে স্থানীয়ভাবে জানা যায়, চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করলেও বয়েজ উদ্দিনকে জীবিত মনে করে সন্ধ্যা পর্যন্ত বাড়িতে ঝাড়ফুক চলে।