কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলায় সারের দাবিতে গাছের গুঁড়ি ফেলে রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন স্থানীয় কৃষকরা।
রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর) বিকেলে উপজেলার পাইকেরছড়া ইউনিয়নের ভূরুঙ্গামারী-সোনাহাট স্থলবন্দর সড়কের শহীদ মোড় এলাকায় শত শত কৃষক রাস্তায় অবরোধ গড়ে তোলেন এবং সারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেন। প্রায় দুই ঘণ্টাব্যাপী চলা এ বিক্ষোভে সোনাহাট সেতুর দুই প্রান্তে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েন পথচারী ও যাত্রীবাহী যানবাহনের যাত্রীরা।
খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) দীপ জন মিত্র, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আব্দুল জব্বার এবং ভূরুঙ্গামারী থানার ওসি আল হেলাল মাহমুদ ঘটনাস্থলে পৌঁছে কৃষকদের সঙ্গে কথা বলেন। পরে উপজেলা প্রশাসনের কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দিলে সন্ধ্যায় অবরোধ তুলে নেন কৃষকেরা।
সারের দাবিতে বিক্ষোভে অংশ নেওয়া কৃষকরা বলেন, ‘চলতি আমন মৌসুমে ইউরিয়া, টিএসপি, এমওপি ও ডিএপি সারের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। দোকানে দোকানে ঘুরেও চাহিদা মতো সার পাওয়া যাচ্ছে না। এতে কৃষকের ঘরে হাহাকার শুরু হয়েছে। সময়মতো জমিতে সার প্রয়োগ করতে না পেরে আমরা দিশেহারা হয়ে পড়েছি। এভাবে চলতে থাকলে ফলনে মারাত্মক প্রভাব পড়বে এবং উৎপাদন ব্যয় কয়েক গুণ বেড়ে যাবে।’
কৃষকরা আরও জানান, এখন ধান গাছে ইউরিয়া ও টিএসপি দেওয়ার সময়। কিন্তু বাজারে পর্যাপ্ত সার নেই। কোথাও কোথাও থাকলেও দাম স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি। সরকার যদি এখনই ব্যবস্থা না নেয়, তবে ফসলের মারাত্মক ক্ষতি হবে।
তাদের অভিযোগ, সরকারি গুদামে পর্যাপ্ত সার মজুত থাকা সত্ত্বেও ডিলারদের অনিয়ম, বাজার ব্যবস্থাপনার শিথিলতা এবং সরবরাহ ব্যবস্থার দুর্বলতার কারণে এ সংকট তৈরি হয়েছে। জরুরি ভিত্তিতে সার সরবরাহ নিশ্চিত না হলে খাদ্য উৎপাদনে নেতিবাচক প্রভাব পড়ার পাশাপাশি কৃষকরা বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়বেন বলেও তারা আশঙ্কা প্রকাশ করেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) দীপ জন মিত্র বলেন, ‘সারের দাবিতে সড়ক অবরোধের খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে যাই এবং কৃষকদের সঙ্গে কথা বলি। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। কৃষকেরা চাহিদা অনুযায়ী সার সরবরাহের আশ্বাস পেয়ে অবরোধ তুলে নেন।’
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন