ঢাকা বুধবার, ০২ জুলাই, ২০২৫

ছাত্রী মোটা না চিকন দেখতে ইমোতে কল দেন শিক্ষক

রূপালী ডেস্ক
প্রকাশিত: জুলাই ১, ২০২৫, ০৯:৪৯ পিএম
ছবি- সংগৃহীত

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) বায়োটেকনোলজি অ্যান্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. আজিজুল ইসলামের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানি ও অশালীন আচরণসহ একাধিক গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। গত ২২ জুন, বিভাগের সভাপতির কাছে ডজনখানেক ছাত্রী লিখিত অভিযোগ জমা দেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাকে বিভাগীয় কার্যক্রম থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য বিরত থাকার নির্দেশ দিয়েছে।

অভিযোগকারীদের মধ্যে ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের এক ছাত্রী লিখেছেন, ‘‘স্যার আমাকে ইমোতে ভিডিও কল দেন। আমি রিসিভ না করায় পরে অডিও কল দেন। বলেন, ‘তোমরা মোটা হয়েছ না চিকন হয়েছ দেখার জন্য ভিডিও কল দিয়েছি।’ এরপর বলেন, ‘তোমার কি কথা বলার লোক আছে?’ আমি বলি ‘না।’ তখন বলেন, ‘এখন বলছ কেউ নাই, পরে দেখব কোনো ছেলের হাত ধরে ঘুরছ।’’

তিনি আরও অভিযোগ করে বলেন, ‘শিক্ষকটি ক্লাসে তার উচ্চতা নিয়ে কুরুচিপূর্ণ জোকস করেন, বিয়ের পর স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক নিয়ে মন্তব্য করেন, এমনকি মেন্সট্রুয়েশন সাইকেল নিয়ে সবাইকে সামনে এনে তাকে অপমান করেন, যা আমার জন্য খুবই অপমানজনক। এভাবে বিভিন্ন সময় উনি ক্লাসে বাজে ইঙ্গিতপূর্ণ কথা বলার পাশাপাশি বডি শেমিং করেন এবং হুমকি দেন যে তার কোর্সে ভালো রেজাল্ট করতে পারব না।’

এ বিষয়ে বিভাগটির অন্য শিক্ষার্থীরা বলেন, অভিযুক্ত শিক্ষক আজিজুল ইসলাম দীর্ঘদিন থেকে ছাত্রীদের সঙ্গে কুরুচিপূর্ণ ও অশালীন ব্যবহার করে আসছেন।

তারা বলেন, স্যার হোয়াটসঅ্যাপে কুরুচিপূর্ণ মেসেজ দেয় আমাদের। এছাড়াও ইচ্ছাকৃতভাবে পরীক্ষার নম্বর কমিয়ে দেওয়া, রুমে ডেকে ব্যক্তিগত ও পারিবারিক জীবন নিয়ে আপত্তিকর জিজ্ঞাসা, ক্লাসে সবার সামনে আজেবাজে ইঙ্গিত করা, ছাত্রীদের রাতে ভিডিও কল দেওয়া, কল না ধরলে রেজাল্ট খারাপ করানোর হুমকিও দেয়।

অভিযুক্ত সহযোগী অধ্যাপক ড. আজিজুল ইসলাম সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘আমি কাউকে হেনস্তা করিনি। আমার কথা ও কাজকে ভুলভাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে। এটি একটি পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র। আমি আন্তরিকতা নিয়েই কথাগুলো বলেছি, কিন্তু সবাই সমানভাবে নেয়নি।’

বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. একেএম নাজমুল হুদা গণমাধ্যমকে বলেন, ‘অভিযোগ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে একাডেমিক কমিটির সভায় বিষয়টি তোলা হয়। প্রাথমিক তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত অভিযুক্ত শিক্ষককে বিভাগীয় কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।’