বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি বলেছেন, ‘ইসলাম আমাদের মানবতার কল্যাণে কাজ করা শিখিয়েছে, ন্যায় প্রতিষ্ঠা করা এবং শান্তি বজায় রাখা শিখিয়েছে। ইসলামের আলোকেই সমাজে ইতিবাচক দিক-নির্দেশনা তুলে ধরা, এটি সম্ভব ইমাম এবং খতিবদের পক্ষে। ইমাম এবং খতিব সমাজের জ্ঞানী, প্রজ্ঞাবান এবং নেতৃত্ব প্রদানকারী। আপনাদের নেতৃত্বের কারণেই সমাজে আলো ছড়িয়ে পড়া সবচেয়ে বেশি নির্ভর করে, যেটা একজন রাজনীতিবিদের পক্ষে কঠিন হয়ে দাঁড়ায়।’
বুধবার (২৯ অক্টোবর) দুপুরে লক্ষ্মীপুর জেলা মডেল মসজিদ মিলনায়তনে ইমাম-খতিব কনফারেন্সে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সানে সাহাবা জাতীয় খতিব ফাউন্ডেশন লক্ষ্মীপুর জেলা শাখার ব্যানারে এ আয়োজন করা হয়।
এ্যানি চৌধুরী বলেন, ‘ইমাম সেই প্রজ্ঞাবান ও জ্ঞানী ব্যক্তি, যিনি অন্ধকারে নিমজ্জিত সমাজকে অন্ধকার থেকে আলোর উম্মোচন করে দেয়। এই সমাজে আপনারা অত্যন্ত সম্মানিত ব্যক্তি। বিগত কিছু বছর আপনারা যেমন বাধাগ্রস্ত হয়েছেন, আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছেন, আলো ছড়িয়ে দিতে পারেননি, আমরা রাজনৈতিক দলগুলোও সেখান থেকে বঞ্চিত ছিলাম। বঞ্চিত ছিলাম বলেই, সবাই মিলে একসঙ্গে আন্দোলন-সংগ্রাম করেছি। সর্বশেষ জুলাই আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছি।’
তিনি বলেন, ‘আমরা রাজনৈতিক দল, একেকজন একেক আদর্শের অনুসারী। কিন্তু দেশের গণতন্ত্র, দেশের জন্য, সমাজের জন্য সর্বশেষ শেষ বেলায় দিনের শেষে আমাদের সেই ঐক্যটাকে সুদৃঢ় রাখতে হবে। কেননা আমাদরে উদ্দেশ্য এক, সুন্দর একটা বাংলাদেশ গড়া। জুমার দিন খুতবার মাধ্যমে সচেতনতা বৃদ্ধি করা, সৃষ্টি করা এবং এই সচেতনতার মধ্য দিয়ে সমাজ উপকৃত হচ্ছে। সেখানে শিক্ষা, স্যানিটেশন, স্বাস্থ্য এবং সন্ত্রাস এবং মাদকবিরোধী কথাগুলো আপনারা যদি সবসময় উঠিয়ে নিয়ে না আসেন, তাহলে এই সমাজ যে অন্ধকারে ছিল, সেই অন্ধকারের দিকেই যাবে। কিন্তু না, এখানেই আমাদের ঐক্য, এখানেই আমাদের সম্মান, এখানেই আমরা সুদৃঢ় ঐক্যটা স্থাপন করতে চাই। আমরা এদেশের সাধারণ মানুষ সবাই মিলেমিশে থাকার জন্য লড়াই করেছি, সংগ্রাম করেছি। আমাদের এ লড়াই-সংগ্রাম করেই যেতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এখন যুগের পরিবর্তন, সময়ের পরিবর্তন হয়েছে। এ সময়টি আমাদের জন্য খুব চ্যালেঞ্জিং। এটাকে ওভারকাম করে টার্গেটে পৌঁছার জন্য নিজেদের নীতি-নৈতিকতা যেন অবক্ষয় না হয়। মাদকমুক্ত সমাজ যেন আমরা প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হই। মাদক আমাদের জন্য বিরাট চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে, যেখানে যায় পুরো দেশে মনে হয় মাদক একটা এজেন্সি দিয়ে কাজ করছে। এখান থেকে এই সমাজকে যদি মুক্ত করতে না পারি তাহলে দিনের পর দিন আমাদের ভালো দিকগুলো হারিয়ে যাবে। যতই রাষ্ট্র এবং রাজনৈতিক সংস্কার করি, যত নাগরিক উন্নয়নের কথা বলি, ইজ্জত সম্মান যদি না থাকে, সন্ত্রাসমুক্ত, মাদকমুক্ত সমাজ ব্যবস্থা চালু করতে না পারি, তাহলে আমরা পিছিয়ে যাব।’
ফাউন্ডেশনের লক্ষ্মীপুর জেলা কমিটির সভাপতি মাওলানা মুজাহিদুল হকের সভাপতিত্বে এতে প্রধান অতিথি ছিলেন টুমচর ইসলামিয়া কামিল মাদ্রাসার সাবেক অধ্যক্ষ শায়খুল হাদিস আল্লামা হারুন আল মাদানী ও প্রধান আলোচক ছিলেন শানে সাহাবা জাতীয় খতিব ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মুফতি শামীম মজুমদার।
ফাউন্ডেশনের সদস্য মাওলানা ইমরান বিন বোরহানের সঞ্চালনায় এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন শানে সাহাবা জাতীয় খতিব ফাউন্ডেশনের মহাসচিব মুফতি শরীফ উল্লাহ তারেকী, জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি এ আর হাফিজ উল্যা ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের জেলা সেক্রেটারি জহির উদ্দিন প্রমুখ।

