কক্সবাজার বিমানবন্দর থেকে ছেড়ে আসার সময় এক চাকা (বাম পাশের ল্যান্ডিং গিয়ার) খুলে পড়া বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ফ্লাইটটি পাইলটের প্রথম চেষ্টাতেই নিরাপদে অবতরণে সক্ষম হয়। তবে অবতরণের আগের তিন মিনিট ছিল অত্যন্ত উত্তেজনাকর।
শুক্রবার (১৬ মে) সময় তখন বেলা দুইটা ১৯ মিনিট। ঢাকার বিমানবন্দরে এটিসি ফ্লাইটটি দেখতে পেয়ে পাইলটকে জিজ্ঞেস করা হয়, ‘আপনি কী এই অবস্থায় রানওয়ে ১৪ দিয়ে অবতরণের বিষয়টি কনফার্ম করছেন?
ককপিটে থাকা পাইলট ক্যাপ্টেন জামিল বিল্লাহ বলেন, ‘অ্যাফার্ম (হ্যাঁ নিশ্চিত করছি)।’
ককপিট থেকে অবতরণের নিশ্চয়তা পেয়ে এটিসি থেকে জানানো হয়, ‘রানওয়ে ১৪ অবতরণের জন্য প্রস্তুত আছে। আপনি অবতরণ করতে পারেন।’
এটিসির বার্তা পাওয়ার ৯০ সেকেন্ড পর দুপুর ২টা ২২ মিনিটে ফ্লাইটটি ঢাকায় নিরাপদে অবতরণ করে। এরপরও এটিসি থেকে ক্যাপ্টেন জামিলের সঙ্গে চলে কথোপকথন।
ফ্লাইটটি নিরাপদ ল্যান্ডিং সম্পন্নের পর এটিসিকে ককপিট থেকে জানানো হয়, ‘আলহামদুলিল্লাহ আমরা নিরাপদে অবতরণ করেছি। কন্ট্রোল টাওয়ারকে অনেক অনেক ধন্যবাদ। আপনাদের সহযোগিতা ছিল প্রশংসনীয়।’
এটিসি থেকে ফের জানতে চাওয়া হয়, ‘আপনি কী কনফার্ম করছেন আপনি নিরাপদে অবতরণ করেছেন? ‘
ককপিট থেকে ক্যাপ্টেন বলেন, ‘হ্যাঁ, আমি আবারও নিশ্চিত করছি।’
এটিসি থেকে ফের জিজ্ঞেস করা হয়, ‘আপনি কী কনফার্ম করছেন সবকিছু একেবারে স্বাভাবিক রয়েছে?’
তখনও পাইলট জামিল ফের নিশ্চিত করে বলেন, ‘এভরিথিং ইজ অ্যাবসালুটলি ফাইন (সবকিছু ঠিক আছে)।’
এটিসি থেকে বলা হয়, ‘আলহামদুলিল্লাহ, ধন্যবাদ আপনাকে।’
তখন ক্যাপ্টেন জামিল এটিসিতে বার্তা পাঠিয়ে বলেন, ‘আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ। কক্সবাজার এবং চট্টগ্রামের এটিসিকে আমার পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জানাবেন।’
এটিসি থেকে পাইলটকে অবগত করে বলা হয়, ‘আপনার বার্তাটি কক্সবাজার ও চট্টগ্রামে পৌঁছে দেওয়া হবে। আপনি ট্যাক্সিওয়েতে অবস্থান করুন।’
বিমানের কর্মকর্তারা জানান, শুক্রবার বেলা দেড়টায় কক্সবাজার থেকে ঢাকাগামী বিজি ৪৩৬ ফ্লাইটটি ৭১ যাত্রী নিয়ে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের উদ্দেশে উড্ডয়ন করে। কক্সবাজারে রানওয়েতে টেক অফের সময় এয়ারক্রাফটটির ল্যান্ডিং গিয়ারের বাম পাশের একটি চাকা যান্ত্রিক কারণে খুলে যায়। তবে পাইল ফ্লাইটটি ঢাকায় এনে নিরাপদে জরুরি অবতরণ করেন।
এভিয়েশন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এমন জটিল পরিস্থিতিতে ফ্লাইটের ক্যাপ্টেন হিসেবে পাইলটকে ধৈর্যশীল হয়ে নিজের দক্ষতা ও প্রশিক্ষণলব্দ জ্ঞান কাজে লাগাতে হয়। ফ্লাইটটির পাইলট জামিল তাই করেছেন।
আপনার মতামত লিখুন :