মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার নবগ্রাম ইউনিয়নে দুই জনপ্রতিনিধির প্রেমের সম্পর্ক এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু। ইউনিয়ন পরিষদের দুই সদস্য—চৈতী আক্তার ও আজম আলীর মধ্যে গড়ে ওঠা ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক শেষ পর্যন্ত গড়িয়েছে আদালতে। বিয়ের আশ্বাসে স্বামীকে ডিভোর্স দেওয়ার পর প্রতারণা ও নির্যাতনের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ তুলেছেন নারী সদস্য চৈতী আক্তার।
চৈতী ও আজম মেম্বারের এই ঘটনা প্রকাশের পর পুরো নবগ্রাম ইউনিয়নে শুরু হয়েছে তুমুল আলোচনা। কেউ একে তাদের ব্যক্তিগত বিষয় বলে মনে করলেও অনেকেই এটিকে জনপ্রতিনিধিদের নৈতিকতার প্রশ্ন হিসেবে দেখছেন।
জানা যায়, নবগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের সংরক্ষিত আসনের সদস্য (৭, ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ড) চৈতী আক্তার সম্প্রতি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলা করেছেন একই ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. আজম আলীর বিরুদ্ধে। আদালত অভিযোগের তদন্তে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) নির্দেশ দিয়েছেন।
চৈতী আক্তার জানান, তিনি দুই সন্তানের জননী, আর তার স্বামী প্রবাসে কর্মরত। অপরদিকে অভিযুক্ত আজম আলী তিন সন্তানের জনক। একই ইউনিয়নের সদস্য হিসেবে বিভিন্ন সরকারি প্রকল্প ও উন্নয়নমূলক কাজে তাদের একসঙ্গে কাজ করতে হতো। সেই সূত্রে দুই বছর আগে তাদের মধ্যে ঘনিষ্ঠতা তৈরি হয়।
চৈতী আক্তারের অভিযোগ, একপর্যায়ে আজম আলী তাকে বিয়ের প্রলোভন দেখান। বলেন, “তুমি তোমার স্বামীকে ডিভোর্স দাও, আমিও আমার স্ত্রীকে ডিভোর্স দেব, তারপর আমরা বিয়ে করব।” আজম আলীর আশ্বাসে বিশ্বাস করে গত ২৭ জুলাই স্বামীকে ডিভোর্স দেন চৈতী আক্তার।
ডিভোর্সের পর আজম আলী চৈতীর বাবার বাড়িতে রাতযাপন করেন। কিন্তু পরে বিয়ের বিষয়ে চাপ দিলে তিনি নানা অজুহাতে এড়িয়ে যান। চৈতীর দাবি, আজম আলী এরপর তাকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করেন এবং তার চরিত্র নিয়ে অপবাদ ছড়ান।
চৈতী আক্তার বলেন, ‘আজম আলীর প্ররোচনায় আমি সংসার ভাঙলাম। এখন তিনি উল্টো আমার মান-সম্মান নষ্টের চেষ্টা করছেন।’
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে আজম আলী বলেন, দেখি বিষয়টি কি করা যায়। এখন মোটরসাইকেলে আছি, আপনার সাথে পরে কথা বলব।
মানিকগঞ্জ সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নবগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসক রিক্তা খাতুন বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। অভিযোগ পেলে তদন্তসাপেক্ষে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবগত করা হবে।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন