ঢাকা শনিবার, ১০ মে, ২০২৫

আন্ধারমানিক এখন আতঙ্কের নাম

মো. খায়রুল ইসলাম হৃদয়
প্রকাশিত: মে ১০, ২০২৫, ০৪:০৩ পিএম
মুন্সিগঞ্জের গজারিয়ার ইমামপুর ইউনিয়নে চলমান সহিংসতা আহত ব্যক্তি। ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার ইমামপুর ইউনিয়নের আন্ধারমানিক গ্রাম যেন এক আতঙ্কের নাম। এক পক্ষ মামলা করলে অপর পক্ষ জামিনে এসে আবার শুরু করে তাণ্ডব। থামছে না সহিংসতা।

এমনই ঘটনা ঘটছে ইমামপুর ইউনিয়নের বেশি কয়েটি গ্রামে। তার মধ্যে উল্লেখ যোগ্য হচ্ছে আন্ধারমানিক গ্রাম। এ ছাড়া করিমখাঁ, হুগলাকান্দি, রসুলপুর, বাঘাইকান্দি গ্রামেরও একই অবস্থা।

বিগত কয়েক মাস ধরেই এই ইউনিয়নের গ্রামগুলোতে চলছে সহিংসতা। কোনো গ্রামে পূর্ব শত্রুতা, আবার কোনো গ্রমে আধিপত্য বিস্তার, রাজনৈতিক প্রতিহিংসাসহ দখল দারিত্ব বজায় রাখতে হচ্ছে এসব সহিংসতা।  

শনিবার (১০ মে) দুপুরে  উপজেলার আন্ধারমানিক গ্রামে অস্ত্রের মহরা দেওয়া হয়েছে। বাজার থেকে যাবার পথে পূর্বশত্রুতার জেরে মৃত বদরউদ্দিন খানের ছেলে আরিফ খানকে (৩৪) পিস্তল ঠেকিয়ে দেশীয় অস্ত্র রামদা, হকস্টিক দিয়ে এলোপাতাড়ি নিলা ফোঁলা জখম করে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

আরিফ জানায়, সে বাজার থেকে বাড়ি ফেরার পথে বাড়ির সামনে আসলে পূর্ব থেকে পরিকল্পিত ভাবে দাঁড়িয়ে থাকা একই গ্রামের মৃত ছাবেদ বেপাড়ির দুই ছেলে মো. চুন্নু মিয়া (৪৫), মানিক মিয়া (৩৪), পান্নুর ছেলে রানা (২৮), চুন্নুর ছেলে হৃদয় (২৮), মৃত মজিদ মুল্লিকের ছেলে ইব্রাহিম (৪২), ইব্রাহিমের ছেলে দাইয়ান (২৭), মাসুমসহ (৩৫) আরও কয়েক জন তার উপর অতর্কিত ভাবে হামলা চালায় তাকে দুই জন পিস্তল ঠেকিয়ে দেশীয় অস্ত্রসহ হকস্টিক দিয়ে এলোপাতাড়ি ভাবে হত্যার উদ্দেশ্যে মারধর করেন। তার কাছে থাকা ২০ হাজার টাকা ও তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন নিয়ে গেছে বলে জানায়।

আরিফের বড় ভাই ইব্রাহিম খাঁন জানায়, তার ভাইয়ের আত্মচিৎকারে তাড়া ছুটে আসলেও ওদের হাতে অস্ত্র থাকায় ভাইকে উদ্ধার করতে এগিয়ে যেতে পারেনি। তারা আরিফকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালেও নিয়ে যেতে বাধা দেন।  পরে থানা থেকে ওসিসহ পুলিশ গেলে পুলিশের গাড়ির প্রবেশ করছে এমন খবর পেয়ে ওরা সরে যায়। তারপর আরিফকে হাসপাতালে নিয়ে যাই। 

এ ঘটানায় আরও জানা যায় ,আজ থেকে ৬ মাস পূর্বে গত বছর ২১ থেকে ২২ ডিসেম্বর ভোর পর্যন্ত আরিফদের পরিবারের সঙ্গে চুন্নু, পান্নু, হৃদয়ের আধিপত্য বিস্তার নিয়ে সংঘাত ঘটে। এতে আরিফের ভাতিজা পুলিশ সদস্য রুহুল আমিন গুলিবিদ্ধ হয়েছিল বলেও জানা যায়। সে ঘটনার মামলার আসামিরা জামিনে এসে আবারও গ্রামে তাণ্ডব শুরু করেন। তবে এ বিষয়ে প্রতিপক্ষ চুন্নু, মানিক, রানা, হৃদয় গ্রুপের সঙ্গে কথা বলে জানতে চাইলে একজন জানায় তাদের সঙ্গে রাস্তায় হাতাহাতি হয়েছে। এখানে তাদের কাছে কোনো অস্ত্র ছিলো না। উল্টো অভিযোগ করেছে ইব্রাহিম খাঁন তাদের বাড়ির ছাদ থেকে টেঁটা নিক্ষেপ করেছে তাদের উদ্দেশ্য করে।

বর্তমানে আরিফ গজারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন আছেন বলে জানা গেছে।

এ প্রসঙ্গে গজারিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ আনোয়ার আলম আজাদ ঘটনার সততা নিশ্চিত করে জানান, ‘একটি হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তিনি ফোর্স নিয়ে ঘটনা স্থলে যায়। বর্তমানে সেখানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। এখন পর্যন্ত কেউ কোনো অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’