ঢাকা শুক্রবার, ০৪ জুলাই, ২০২৫

১৬ বছর নিজ উপজেলায় কর্মরত দুই কৃষি কর্মকর্তা, অনিয়মের অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ময়মনসিংহ
প্রকাশিত: জুলাই ৩, ২০২৫, ১১:৫৭ পিএম
আজহারুল ইসলাম ও হাবিবুল্লাহ বাহার। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলায় দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে কর্মরত দুই উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অনিয়ম, স্বেচ্ছাচারিতা ও রাজনৈতিক পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ উঠেছে। সম্প্রতি সরকারি কৃষি প্রণোদনা বিতরণে এসব অভিযোগ তোলেন স্থানীয় কৃষকরা।

অভিযুক্ত দুই কর্মকর্তা হলেন উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. আজাহারুল ইসলাম এবং মো. হাবিবুল্লাহ বাহার। তারা দুজনেই ভালুকা উপজেলা কৃষি অফিসে কর্মরত রয়েছেন। 

অভিযোগ অনুযায়ী, দীর্ঘ সময় ধরে নিজ উপজেলায় থেকেই তারা স্থানীয় প্রভাব খাটিয়ে পছন্দের লোকদের সরকারি সুবিধা দিয়ে যাচ্ছেন।

আজাহারুল ইসলাম উপজেলার ভরাডোবা ইউনিয়নের ভাটগাঁও গ্রামের বাসিন্দা এবং আব্দুল খালেক মাস্টারের ছেলে। অন্যদিকে হাবিবুল্লাহ বাহার বিরুয়ানি ইউনিয়নের মাহমুদপুর গ্রামের বাসিন্দা। তিনি আগে ইউনিয়ন কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

স্থানীয় কৃষক আ. মালেক, জুয়েলসহ একাধিক কৃষক অভিযোগ করেন, প্রকৃত কৃষকদের বাদ দিয়ে এসব কর্মকর্তা রাজনৈতিক সম্পর্ক বা ব্যক্তিগত পছন্দের ভিত্তিতে প্রণোদনার তালিকা তৈরি করে থাকেন। ফলে প্রকৃত ও দরিদ্র কৃষকরা বছরের পর বছর সরকারি সহযোগিতা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে হাবিবুল্লাহ বাহার বলেন, ‘২০০৮ সাল থেকে আমি নিজ উপজেলায় কর্মরত আছি। আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সঠিক নয়। হ্যাঁ, চাকরিতে যোগদানের আগে আমি কৃষক লীগে ছিলাম, তবে এখন আর কোনো রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা নেই। আমি এখানেই চাকরি শেষ করতে চাই।’

অপরদিকে মো. আজাহারুল ইসলাম নিজ উপজেলায় দীর্ঘদিন ধরে কর্মরত থাকার বিষয়টি স্বীকার করলেও সাবেক ছাত্রলীগ সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, ‘আমি নিয়ম মেনেই চাকরি করছি। এ বিষয়ে ফোনে কিছু বলব না, চাইলে অফিসে এসে কথা বলুন।’

তবে এসব অভিযোগ সম্পর্কে অবগত নন বলে জানিয়েছেন ভালুকা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নুসরাত জামান। তিনি বলেন, ‘সারা দেশে অনেকেই নিজ উপজেলায় চাকরি করছেন। তবে সরকারের সাম্প্রতিক নির্দেশনা অনুযায়ী এখন থেকে নিজ উপজেলায় চাকরি করা যাবে না। নির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

এ বিষয়ে ময়মনসিংহ বিভাগীয় কৃষি অফিসের অতিরিক্ত পরিচালক ড. সালমা লাইজু বলেন, ‘অভিযোগের বিষয়টি আমরা গুরুত্বসহকারে দেখব। আগে নিজ উপজেলায় চাকরি করার সুযোগ থাকলেও এখন সেটি বাতিল হয়েছে। নিয়ম ভঙ্গ করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’