ঢাকা শনিবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

খানকা শরিফে হামলা-ভাঙচুর, আসামি ৬০

নিজস্ব প্রতিবেদক, ময়মনসিংহ
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২০, ২০২৫, ০৮:০৮ পিএম
আতে রাসুল খাজা বাবার দায়রা শরিফ নামে একটি খানকা। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

ময়মনসিংহ নগরীতে ‘আতে রাসুল খাজা বাবার দায়রা শরিফ’ নামে একটি খানকায় গান-বাজনার আয়োজন করায় ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে।

শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে খানকা শরিফের খাদেম আব্দুল গনি বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ৫০ থেকে ৬০ জনকে আসামি করে কোতোয়ালি থানায় মামলা করেন।

এর আগে শুক্রবার দুপুরের পর নগরীর ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের সুতিয়াখালী বাজারে ‘আতে রাসুল খাজা বাবার দায়রা শরিফ’ ভাঙচুর করে স্থানীয় জনতা।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নগরীর সুতিয়াখালী বাজারে ‘আতে রাসুল খাজা বাবার দায়রা শরিফে’ প্রতি শুক্রবার রাতে সামা কাওয়ালি গানের আসর বসত। স্থানীয় বাসিন্দা উসমান গণি ফকির প্রায় ১৭ বছর আগে সরকারি জমিতে একটি ঘর তুলে সেখানে খানকা প্রতিষ্ঠা করেন। এখানে তিনি ভক্তদের নিয়ে আড্ডা দিতেন। স্থানীয়রা এটি ‘গনি ফকিরের আস্তানা’ নামেই চিনতেন। সম্প্রতি কাওয়ালি গানের আয়োজনকে অসামাজিক কার্যকলাপ আখ্যা দিয়ে একদল মুসল্লি এটি বন্ধের দাবি জানিয়ে আসছিলেন।

দায়রা শরিফের খাদেম উসমান গণি ফকির বলেন, ‘জুমার নামাজের পর একটি গ্রুপ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সন্ত্রাসী কায়দায় খানকায় ভাঙচুর ও মালামাল লুট করে নিয়ে গেছে। হামলার সময় আমরা কেউ সেখানে ছিলাম না। ঘর-দরজা ভেঙে তছনছ করেছে, সাউন্ডবক্স নিয়ে গেছে। প্রায় সাড়ে ১৭ বছর ধরে এখানে আস্তানা ছিল। এখানে মিলাদ হতো, গান-বাজনা হতো। কিন্তু কোনো কিছু না বলে হঠাৎ ভেঙে দেওয়া হয়েছে।’

বাংলাদেশ সুফিবাদ ঐক্য পরিষদের সভাপতি খলিলুর রহমান চিশতী বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও গণি ফকির ফোনে তার আস্তানা ভাঙচুরের খবর জানিয়েছেন। সরকারি জায়গায় কার্যক্রম চলায় লোকজন ক্ষুব্ধ ছিল।’

ঘটনার নিন্দা জানিয়ে ময়মনসিংহ বাউল সমিতির সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম (আসলাম) বলেন, ‘সুফি ও বাউল দর্শন কখনোই সহিংসতা সমর্থন করে না। দরবার, দরগা, মাজার বা আস্তানা ভেঙে যারা মুসলিম সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য বিনষ্ট করছে, আমরা তাদের প্রতি ঘৃণা জানাই।’

ময়মনসিংহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘ওই এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে একটি পীরের আস্তানা রয়েছে। সেখানে গান-বাজনা ও নানা কার্যক্রম হয়, যা স্থানীয়দের পছন্দ হচ্ছিল না। এর আগেও কয়েকবার স্থানীয়রা সতর্ক করেছিল। শুক্রবার গান-বাজনার আয়োজন করলে কিছু যুবক সাউন্ড সিস্টেম ভেঙে দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ সেখানে যায়। এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।’