ঢাকা শনিবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

এক চ্যালেঞ্জের অভিজ্ঞতা, এক নতুন স্বপ্নের আহ্বান

মোস্তাফিজুর রহমান
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২০, ২০২৫, ০৯:২১ পিএম
ভাইয়া গ্রুপের চেয়ারম্যান মারুফ সাত্তার আলী রাসেল। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

কয়েকদিন আগে ব্যবসায়িক কাজে সিলেটে যাচ্ছিলেন ভাইয়া গ্রুপের চেয়ারম্যান মারুফ সাত্তার আলী রাসেল। হঠাৎ ঝুম বৃষ্টি নেমে আসে। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ডোমেস্টিক টার্মিনালে যাওয়ার পথে তার গাড়ি কয়েক মুহূর্তের মধ্যে জমে ওঠা পানিতে আটকে যায়। চোখের পলকে রাস্তা যেন ছোট নদীতে পরিণত হয়। বিএমডব্লিউটি ডুবে গেলে তিনি বাধ্য হয়ে গাড়ির ছাদে দাঁড়িয়ে রইলেন। চালক ও বডিগার্ড তাকে উদ্ধার করার চেষ্টা করলেও পানির প্রবাহ এতই প্রবল ছিল যে ফ্লাইট ধরাও সম্ভব হয়নি। কয়েক মিনিটের বৃষ্টিতে ঘটে যাওয়া এই দৃশ্যের ভিডিও ও ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়।

এই অভিজ্ঞতা শুধু এক ব্যক্তিরই নয়, এটি যেন দেশের অবকাঠামোর চ্যালেঞ্জের একটি ছোট উদাহরণ। প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা অব্যবস্থাপনার মুখোমুখি হলে বোঝা যায়—পরিকল্পনা ও উদ্যোগ ছাড়া দেশের অগ্রগতি থেমে যেতে পারে। ছোট নদীতে পরিণত হওয়া সেই রাস্তাই যেন আমাদের জন্য একটি সতর্কবার্তা।

ঠিক এই প্রেক্ষাপটে, আজ রাজধানীর চীন-মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে ভাইয়া হোটেলস আয়োজিত ‘সল্ট বে কিডস ফেস্ট’ পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে মারুফ সাত্তার আলী নতুন সূচনার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে ৫০ বছর আগে। কিন্তু সিঙ্গাপুর, দুবাই, মালয়েশিয়ার মতো দেশগুলো ট্যুরিজম খাতে অনেক এগিয়ে গেছে। আমাদের ইঞ্জিনিয়ার, আর্কিটেক্ট, শ্রমিকরা সেই দেশে কাজ করছে। ৫ আগস্টের পর দেশ যেন নতুনভাবে স্বাধীন হয়েছে। এখনই সময় নতুন করে শুরু করার, যাতে আগামী ৫০ বছর অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকে। ইনশাল্লাহ, আমরা এগিয়ে যাব।”

 

ট্যুরিজম খাতের পরিকল্পনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আমার গভীর ইচ্ছা ট্যুরিজম খাতকে আরও এগিয়ে নেওয়ার। আমি আশাবাদী আগামী ১০–১৫ বছরের মধ্যে ভাইয়া হোটেলস, ভাইয়া হাউজিং ও বাংলাদেশ ট্যুরিজম ইন্ডাস্ট্রিজকে এমন এক উচ্চতায় নিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে, যা দেশের পর্যটন শিল্পকে নতুন মাত্রা দেবে। সিঙ্গাপুর, দুবাই, ব্যাংকক—এই লেভেলে পৌঁছানোই লক্ষ্য।”

তার বক্তব্যে স্পষ্ট হয়ে ওঠে- যেভাবে ছোট নদীতে আটকে পড়া অভিজ্ঞতা আমাদের সতর্ক করেছে, ঠিক তেমনিভাবে দেশের পর্যটন খাত ও অন্যান্য খাতে নতুন উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন। শুধু পরিকল্পনা নয়, দৃঢ় সংকল্প ও সাহসিকতাও সমান জরুরি। বৃষ্টিতে আটকে পড়া সেই মুহূর্তটি যেন প্রতীক হয়ে দাঁড়ায়—যেখানে সমস্যা ও বাধা আছে, কিন্তু সঠিক উদ্যোগে এগিয়ে যাওয়া সম্ভব।

আমাদের চারপাশে অসংখ্য সম্ভাবনা রয়েছে। পর্যটন, ব্যবসা, শিল্প- সব ক্ষেত্রেই উদ্যোগ ও পরিকল্পনার সমন্বয় ছাড়া অগ্রগতি সম্ভব নয়। মারুফ সাত্তার আলী এই বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষণীয় বার্তা দিয়েছেন, যা নতুন প্রজন্ম ও উদ্যোক্তাদের জন্য প্রেরণা। ছোট নদী থেকে শুরু হওয়া এক অভিজ্ঞতা, এখন পরিণত হলো নতুন স্বপ্নের আহ্বান। আমাদের দায়িত্ব হলো সেই আহ্বানকে বাস্তবে রূপ দেওয়া, যাতে আগামী দিনে দেশের অগ্রযাত্রা স্থায়ী হয়।