ময়মনসিংহের নান্দাইলে এক প্রতিবন্ধীর বসতবাড়ি ও দোকান-ঘর ভেঙে ফেলার পর লুটপাট করে জায়গা দখলের অভিযোগ উঠেছে প্রতিবেশী প্রভাবশালী একটি চক্রের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ দায়েরের পর আজ (১৪ অক্টোবর) ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে পুলিশ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার মোয়াজ্জেমপুর ইউনিয়নের শারীরিক প্রতিবন্ধী আনোয়ার হোসেন (৪০) পৈতৃক সূত্রে পাওয়া প্রায় ৪ শতক জমিতে বসতঘর নির্মাণ করে বসবাস ও সামনে দোকানঘর তৈরি করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছিলেন। এর মধ্যে বেশ কয়েক বছর ধরে ওই জায়গা নিজেদের দাবি করে দখলে নেওয়ার চেষ্টা করে প্রতিবেশী আদম আলীর ছেলে মাসুদ ও সোহরাব মিয়া এবং তাদের দলবল। এ নিয়ে গ্রামে অনেকবার সালিশ বৈঠক হলেও কোনো সিদ্ধান্তই মানতে চাননি তারা।
এ অবস্থায় গতকাল সোমবার সকাল থেকে ওই জায়গা দখলে নিয়ে বেপরোয়া হয়ে ওঠেন সোহরাব ও মাসুদরা। তারা ভাড়াটিয়া লোকজন নিয়ে প্রতিবন্ধী আনোয়ার হোসেনের বসতঘর ও দোকান ভেঙে চুরমার করে দেন। পরে ওই জায়গায় প্লাস্টিকের জাল দিয়ে বেড়া দেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বসতঘরের টিন ও বেড়া খুলে অন্যত্র ফেলে দিয়েছেন দখলবাজরা। আর ওই খালি ভিটেতে বসে আহাজারি করছেন প্রতিবন্ধী আনোয়ার হোসেনের মা নুরজাহান বেগম ও ভাই নুরুল হক। অপরদিকে, বাড়ির সামনে একটি চায়ের দোকানঘর করে দিয়েছিল পাড়ার একটি মানবিক সংগঠন। ওই দোকানও ভেঙে দেওয়া হয়েছে।
প্রতিবন্ধী আনোয়ারা হোসেনের মা নুরজাহান বেগম বলেন, ‘আমি অহন কই থাকবাম আর কিবায় চলবাম। আমার এই জমির সকল কাগজপত্র থাকতেও তারা বসতঘর ও দোকান ভাইঙ্গা মাডিতে মিশাইয়া দিছে। এর বিচার কেলা করব?
প্রতিবেশিরা জানান, প্রতিবন্ধী আনোয়ার হোসেন অত্যন্ত অসহায় ও হতদরিদ্র। তাকে এলাকার লোকজন সবসময় দেখাশোনা করে থাকে। বিধবা মা ও স্ত্রী সন্তানদের নিয়ে কোনোভাবে চলে আসছে। এর মধ্যে তার বসতঘর ও আয়ের একমাত্র সম্বল ধুলিসাৎ করে দেওয়া ন্যক্কারজনক।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত সোহরাব বলেন, ‘এই জায়গা আমার ক্রয়কৃত। দীর্ঘদিন ধরে আনোয়ার দখল করে রেখেছিল। বারবার বলার পরেও বসতঘর তৈরি করে বসবাস করে আসছিল। এখন আমি আমার জায়গা দখলে নিয়েছি।’
ঘটনাস্থলে এসে নান্দাইল থানার এসআই মো. সাইদুল ইসলাম বলেন, প্রাথমিকভাবে জায়গা দখলের সত্যতা পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন