ঢাকা মঙ্গলবার, ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

নওগাঁয় ডেভিল হান্টে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা গ্রেপ্তার

নওগাঁ প্রতিনিধি
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৩০, ২০২৫, ০৫:৪৪ পিএম
মোখলেছুর রহমান। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

নওগাঁর মহাদেবপুর থানা পুলিশ ডেভিল হান্টে অভিযান চালিয়ে মোখলেছুর রহমান (৩৬) নামে স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে।

সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে মহাদেবপুর থানার এসআই আসাদুজ্জামান তাকে স্কুলপাড়া থেকে আটক করেন।

মোখলেছুর রহমান উপজেলা সদরের কলোনীপাড়ার জসীম উদ্দিনের ছেলে ও উপজেলা আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মনোয়ার হোসেন জানান, গত বছর ৫ আগস্ট ছাত্রজনতার গণঅভ্যুত্থানে আন্দোলনকারীদের ওপর হামলার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় মোখলেছকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বিকেলে তাকে নওগাঁ আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়।

স্থানীয়দের অভিযোগ, গত ৫ আগস্ট সকালে মহাদেবপুরের আন্দোলনকারী ছাত্র-জনতা উপজেলা আওয়ামী লীগের অফিসের দিকে মিছিল করলে মোখলেছ ও অন্যরা বিক্ষোভকারীদের ছবি ও ভিডিও করতে যান। পরে বিক্ষোভকারীদের ধাওয়ায় তারা পালিয়ে যান। দীর্ঘদিন ধরে এলাকাবাসী মোখলেছকে গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়ে আসলেও স্থানীয় কিছু বিএনপি অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতার প্রত্যক্ষ হস্তক্ষেপে থানা পুলিশ তাকে আটক করতে গিয়ে ব্যর্থ হয়।

তার বিরুদ্ধে স্থানীয়দের আরও অভিযোগ, ফ্যাসিবাদের আমলে মোখলেছুর রহমান সতীর্থদের নিয়ে একটি শক্তিশালী দল গঠন করে পুরো উপজেজুড়ে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেন। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা বা খবর লেখার যোগ্যতা না থাকলেও তিনি এশিয়ান টিভির মহাদেবপুর উপজেলা প্রতিনিধির পরিচয়পত্র সংগ্রহ করে টিভির লোগো নিয়ে এলাকায় চাঁদাবাজির বড় সিন্ডিকেট গড়ে তোলেন। এলাকার কোথাও কেউ কোনো গাছ কাটলে, পুকুর খনন করলে, মারামারি বা জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধ হলে সব জায়গায় গিয়ে নিউজ করার ভয় দেখিয়ে মোটা অঙ্কের চাঁদা আদায় করেন। এসবের খবর কোথাও প্রকাশ হয় না। চাঁদাবাজি সংক্রান্ত বিষয়ে তার দুটি কল রেকর্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। ৫ আগস্টের আগে ও পরে তিনি বিএনপি ও আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে কয়েকটি মিথ্যা মামলাও দায়ের করেন।

নিজে মৎস্যচাষি না হলেও রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তার করে উপজেলার প্রত্যন্ত এলাকার কয়েকটি ভুয়া মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির সভাপতি-সম্পাদক সেজে অসংখ্য সরকারি খাস পুকুর অবৈধভাবে লিজ নেন। এসব পুকুরের বেশিরভাগই ব্যক্তি মালিকানাধীন ও সরকারের সাথে আদালতে মামলা চলমান। এসব পুকুরে কোনো মাছের পোনা না ছাড়লেও ব্যক্তি মালিকানায় ছেড়ে দেওয়া মাছ গায়ের জোড়ে লুট করার অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

তার গ্রেপ্তারের খবরে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। গ্রেপ্তারের পর তাকে ছাড়াতে স্থানীয় বিএনপি অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতারা থানায় গিয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করেন বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন।