ঢাকা শনিবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৫

শীত নামতেই খেজুর গাছ পরিচর্যায় ব্যস্ত গাছিরা

রূপালী ডেস্ক
প্রকাশিত: নভেম্বর ২২, ২০২৫, ০৯:৩২ এএম
খেজুর গাছ পরিচর্যায় গাছিরা । ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

শীতের আগমনে নড়াইলের খেজুর গাছিগুলো ব্যস্ত সময় পার করছেন খেজুর গাছ পরিচর্যায়। রাস্তার দুপাশ, ফসলের মাঠ কিংবা বাড়ির আঙিনায় যেখানে খেজুর গাছ আছে, সেখানেই চলছে পরিচর্যার কাজ। রস সংগ্রহের প্রস্তুতি হিসেবে গাছ পরিষ্কার ও ছাঁটাইয়ে দক্ষ হাতে কাজ করছেন গাছিরা।

কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই শুরু হবে রস সংগ্রহ, আর সেই রস থেকেই তৈরি হবে সুস্বাদু খেজুরের গুড়। যা জেলার গণ্ডি পেরিয়ে পৌঁছে যাবে সারা দেশে, এমনকি বিদেশেও। শীত যত ঘনাচ্ছে, ততই বাড়ছে গাছিদের ব্যস্ততা।

কৃষি বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, নড়াইল জেলায় ২৩ হাজার ৫৫০টি খেজুর গাছ রয়েছে। এসব গাছ থেকে চলতি মৌসুমে ৩৫৪ মেট্রিক টন খেজুর রস সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। সেই রস থেকে প্রায় ৫৩ মেট্রিক টন গুড় উৎপাদন হবে বলে কৃষি বিভাগ জানিয়েছে।

গাছি কবীর মোল্যা বলেন, ‘শীতের শুরুতে আমরা খেজুর গাছের মাথা পরিষ্কার করি। এক সপ্তাহ পর থেকে গাছে টিলেপাতা শুরু হবে। রস সংগ্রহ করে গুড় তৈরি করি। প্রতি কেজি গুড় ৩০০ টাকায় বিক্রি হয়। আশা করছি এ বছর রস ও গুড় বিক্রি করে ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকা আয় করতে পারবো।’

তিনি আরও বলেন, ‘নড়াইলে খেজুর রস ও গুড়ের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। জেলার চাহিদার তুলনায় উৎপাদন কম। তাই কাঁচা রস কিনতে বিভিন্ন এলাকা থেকে ক্রেতারা গাছতলায় ভিড় করেন।’

শেখহাটি গ্রামের আরেক গাছি শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘তুলারামপুর, শেখহাটি, বেনহাটি, মুলিয়া, আগদিয়া এলাকার মানুষ রস কিনতে গাছতলায় আসে। রসের চাহিদা বেশি, কিন্তু খেজুর গাছ কমে যাওয়ায় উৎপাদনও কমে গেছে। নতুন গাছ না লাগালে নড়াইলের ঐতিহ্যবাহী খেজুর রস ও গুড় হারিয়ে যেতে পারে।’

দেবভোগ গ্রামের পরিমল বিশ্বাস জানান, ‘রাস্তার ধারের খেজুর গাছ প্রতি বছর কাটা হচ্ছে। বিশেষ করে ইটভাটা মালিকরা গাছ কিনে কেটে ফেলছেন। এভাবে গাছ কাটতে থাকলে নড়াইল থেকে খেজুর বিলুপ্ত হয়ে যাবে।’

সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রোকনুজ্জামান বলেন, ‘নিরাপদ ও স্বাস্থ্যসম্মত রস সংগ্রহে আমরা বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছি। প্রতিটি ইউনিয়নে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তারা গাছিদের নিয়মিত পরামর্শ দিচ্ছেন, যাতে তারা নিরাপদ পদ্ধতিতে রস সংগ্রহ ও গুড় উৎপাদন করতে পারেন।’