মঙ্গলবার, ২৮ অক্টোবর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: অক্টোবর ২৮, ২০২৫, ০৮:১৬ পিএম

ভুয়া সাংবাদিক শাকিলের বিচার দাবি স্থানীয়দের

রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: অক্টোবর ২৮, ২০২৫, ০৮:১৬ পিএম

কাজী শরিফুল ইসলাম ওরফে শাকিল। ছবি- সংগৃহীত

কাজী শরিফুল ইসলাম ওরফে শাকিল। ছবি- সংগৃহীত

নরসিংদীর মনোহরদী উপজেলায় কাজী শরিফুল ইসলাম ওরফে শাকিল নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, ফেসবুকে হুমকি ও তথ্য অপপ্রচারের অভিযোগে বিক্ষুব্ধ, বিব্রত মনোহরদী উপজেলার রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, সরকারি কর্মকর্তাসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ। স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাকর্মী, প্রশাসনিক কর্মকর্তা, শিক্ষক সমাজ, মুক্তিযোদ্ধাসহ সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ তার অত্যাচারে অতিষ্ঠ। স্থানীয় স্বীকৃত গণমাধ্যমের সংবাদকর্মীরাও তার সাংবাদিকতার নামে অপসাংবাদিকতা ও অপ্রচারে নানাভাবে বিব্রত।

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মনোহরদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) উদ্দেশ করে ‘বিদায় ঘণ্টা বেজে গেছে’ এবং সাবেক সংসদ ও জেলা বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা সরদার সাখাওয়াত হোসেন বকুল ও তার পরিবার নিয়ে মন্তব্য করে আলোচনার আসেন শাকিল।

স্থানীয়দের দাবি, ইউএনও তার অন্যায় দাবি পূরণ না করায় তিনি অপপ্রচারে লিপ্ত হন। এমনকি পূর্বেও বিভিন্ন ইউএনওর বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমন অপপ্রচার করেছেন।

স্থানীয়দের অভিযোগ, শাকিল তার ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডিতে নানা বিভ্রান্তি-অপপ্রচার ছড়িয়ে সামাজিকভাবে নানা শ্রেণি-পেশার মানুষের মানহানি করে থাকেন। তিনি মানসিকভাবে বিকারগস্ত কি না তা নিয়েও জনমনে প্রশ্ন।

মনোহরদী উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব মাসুদুর রহমান সোহাগ ও পৌর যুবদলের আহ্বায়ক আব্দুস সামাদ বকুলসহ অসংখ্য নেতাকর্মী তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করে বলেন, ‘ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে তিনি সাবেক শিল্পমন্ত্রীপুত্র মঞ্জুরুল মজিদ মাহমুদ সাদীর ছত্রছায়ায় থেকে বেপরোয়া হয়েছে। সে উপদ্রবই এখনো বয়ে বেড়াচ্ছে মনোহরদীর জনগণ। সে মূলত আওয়ামী লীগ আমলে রাজনৈতিক কর্মীর ভূমিকা পালন করেছে। ৫ আগস্টের পর স্থানীয় বিএনপির বলয়ে আশ্রয় নেওয়ার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে দলীয় নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধেও ছড়াচ্ছেন বিষোদগার। তার বিষয়ে নানা মহলে অভিযোগ করেও প্রতিকার মেলেনি। বাধ্য হয়ে স্থানীয়রা একাধিকবার গণধোলাই দিয়েছে। তার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, বৈষম্যবিরোধী মামলাসহ বিস্তর অভিযোগ রয়েছে।’

চন্দনবাড়ী ইসলামিয়া কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আবু রায়হান ভূঁইয়া বলেন, ‘সম্প্রতি কাজী শরিফুল ইসলাম শাকিল আমার বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অসত্য, ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত কিছু লেখা প্রকাশ করেছেন। এসব লেখার মাধ্যমে আমার ব্যক্তিগত ও প্রাতিষ্ঠানিক মর্যাদা ক্ষুণ্ণ করার অপচেষ্টা চালানো হয়েছে। একজন শিক্ষক ও শিক্ষা প্রশাসক হিসেবে এটি অত্যন্ত দুঃখজনক ও মানহানিকর। তার এই সাইবার আক্রমণের শিকার শুধু আমি একা নই, মনোহরদী উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের বিরুদ্ধে প্রতিনিয়তই প্রোপাগান্ডা চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। আমি বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবহিত করে আইনি পদক্ষেপ নেব।’

মনোহরদী কারিগরি কলেজের অধ্যক্ষ সাইফুল ইসলাম জানান, ‘শাকিল কলেজের কমিটিতে যুক্ত হতে চেয়েছিল। তার দাবি পূরণ না হওয়ায় সে ইউএনও এবং আমাকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে হুমকি ও কুৎসা রটায়।’

খিদিরপুর ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি আপন ভূঁইয়া জানান, ‘আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে শাকিল সাদীর ভয়ভীতি দেখিয়ে আমার কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা নেয়। ৫ আগস্টের পরেও সে আবারও চাঁদা দাবি করে। না পেয়ে ফেসবুকে আমার নামে অপপ্রচার শুরু করে। শুধু আমি নই, এমন অসংখ্য মানুষ তার কথামতো টাকা না দিলেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভ্রান্তিকর পোস্ট করে সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করেছে এই শাকিল।’

স্থানীয় সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ‘এই শাকিলকে কেউ সাংবাদিক হিসেবে স্বীকৃতি দেয় না। তার মতো অপসাংবাদিকের কারণে আমাদের পেশার সুনাম ক্ষুণ্ণ হচ্ছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে মানুষের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালিয়ে অর্থ আদায় করাই তার মূল লক্ষ্য। সবচেয়ে কষ্টের বিষয় হচ্ছে তার এই সাইবার হামলার ভয়ে তার বিরুদ্ধে এত অভিযোগ থাকার পরও পুলিশ নীরব ভূমিকা পালন করছে।’

মনোহরদী প্রেস ক্লাবের সভাপতি ও পৌরসভা জামায়াতে ইসলামীর আমির আসাদুজ্জামান নূর বলেন, ‘কাজী শরিফুল ইসলাম শাকিল আমার বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কুরুচিপূর্ণ ও মিথ্যা মন্তব্য প্রকাশ করেছেন। তার উদ্দেশ্য মানুষের বিরুদ্ধে কাল্পনিক পোস্ট দিয়ে সামাজিকভাবে মানহানির ভয় দেখিয়ে অর্থ উপার্জন করা।’

নরসিংদী জেলা বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য সরদার শাখাওয়াত হোসেন বকুল, মনোহরদী উপজেলা বিএনপির সদস্যসচিব আমিনুর রহমান সরকার দোলনসহ অসংখ্য বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভ্রান্তিকর-মিথ্যা-কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করেই যাচ্ছেন। মূলত তিনি আওয়ামী লীগের ‘দোসর’ হিসেবে পরিচিত। এ ধরনের মানুষের কারণেই সমাজে নৈতিক অবক্ষয় তৈরি হয়।

এ ছাড়া শাকিলের বিরুদ্ধে পূর্বেও মাদক কারবার, চাঁদাবাজি ছিনতাই ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একাধিক মামলা রয়েছে বলে জানা যায়। এককথায় সাবেক মন্ত্রীপুত্র সাদীর রাজত্বের সেনাপতি ছিলেন এই শাকিল।

এমনকি জাতীয় পত্রিকা তার বিরুদ্ধে প্রতারক হিসেবে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ২০১৫ সালের ২ সেপ্টেম্বর রাজধানীর ধানমন্ডি থানায় প্রতারণা ২০১২ সালে মনোহরদী থানায় মাদক আইনে এবং ২০২২ সালে তথ্য প্রযুক্তি আইনে তার বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে। তা ছাড়া তার বিরুদ্ধে জুলাই আন্দোলনে ছাত্র হত্যার অভিযোগ তদন্তাধীন।

একাধিক অভিযোগের বিষয়ে শাকিলের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে, তিনি নিজেকে সাংবাদিক দাবি করেন। মানুষকে হয়রানি ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করে ব্ল্যাকমেইল করার বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে সংযোগ কেটে দিয়ে মোবাইল নম্বর ও হোয়াটসঅ্যাপে ব্লক করে দেন।

এই বিষয়ে মনোহরদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এম এ মুহাইমিন আল জিহান জানান, ‘বিষয়টি আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি, তাদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!