ঢাকা শুক্রবার, ০৮ আগস্ট, ২০২৫

কাঁচা রাস্তার জন্য যে গ্রামে ছেলে-মেয়ের বিয়ে দিতে চায় না কেউ!

রূপালী ডেস্ক
প্রকাশিত: আগস্ট ৭, ২০২৫, ১০:১৩ পিএম
লালপুরে বৃষ্টি মানেই আতঙ্ক। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

নাটোরের লালপুরে বৃষ্টি মানেই আতঙ্ক। আর এই আতঙ্কে ভেঙে যাচ্ছে বিয়ের সম্বন্ধ! লালপুর উপজেলার অবহেলিত ইউনিয়ন নামে পরিচিত কদিমচিলানের দাঁইড়পাড়া হাইওয়ে রোড হতে ধলা শেখচিলানের কাঁচা রাস্তা যেন আজও সভ্যতার ছোঁয়া পায়নি।

মাত্র দুই কিলোমিটার রাস্তা, কিন্তু বর্ষা এলেই রূপ নেয় দুর্ভোগের পাহাড়ে। সামান্য বৃষ্টিতেই মাটি আর পানি মিশে একাকার হয় কাদায়। যানবাহন চলাচল তো দূরের কথা, পায়ে হাঁটাও দায়। আর এই রাস্তার কারণে ভেঙে যাচ্ছে একের পর এক বিয়ের সম্বন্ধ।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানালেন, ছেলের ভালো চাকরি বা মেয়ের গুণ থাকলেও পাত্র বা পাত্রী পক্ষ রাজি হচ্ছে না, কারণ এই কাদামাখা  রাস্তা!

এলাকাবাসী বলছেন, ভোট এলেই দেওয়া হয় প্রতিশ্রুতি, কিন্তু বৃষ্টি নামলেই দেখা মেলে শুধু কাদা, আর হতাশা। বৃষ্টির দিনে কেউ অসুস্থ হলে অ্যাম্বুলেন্স তো দূরের কথা, ভ্যান রিকশাও ঢোকে না এই এলাকায়। লাশ টানা খাটিয়াতে করে নিয়ে যেতে হয় রোগীকে। কৃষক তার ফসল সঠিক সময়ে বাজারজাত না করার কারনে ন্যায্য মূল্য থেকেও বঞ্চিত হতে হচ্ছে। 

এলাকার শিক্ষার্থীরা স্কুলে যেতে পারছে না, তাদের চোখেমুখে হতাশার ছাপ। বাড়ি থেকে স্কুলের পথে পা বাড়ালেই চরম ভোগান্তিতে পড়ছে তারা, পা পিছলে পড়ে বই-খাতা-ড্রেসে কাদা লেগে যাওয়ার কারণে সঠিক সময়ে ক্লাসে উপস্থিত হতে পারছে না ক্ষোভ অভিভাবকদের কণ্ঠেও।

বিয়ে ভেঙে যাচ্ছে, সন্তানদের স্কুলে পাঠানো দুঃস্বপ্ন হয়ে উঠছে, আর অসুস্থ হলে মৃত্যুঝুঁকির মধ্যে পড়তে হচ্ছে এলাকাবাসীকে। এই রাস্তার উন্নয়ন না হলে শুধু চলাচল নয়, গ্রামবাসীর ভবিষ্যৎ, সম্পর্ক আর জীবনও থাকছে কাদার ভেতরেই আটকে। তাই দ্রুতই জনদুর্ভোগের লাঘব হবে এমনই ব্যবস্থা নেবে উপজেলা  প্রশাসন, এমনটাই প্রত্যাশা অবহেলিত এলাকাবাসীর।

এ বিষয়ে কদিমচিলান ইউনিয়ন পরিষদের ৩ নম্বর ওয়ার্ড ইউপি সদস্য বলেন, ‘তিনি বারবার উপজেলা চেয়ারম্যান, ইউনিয়ন চেয়ারম্যান, এমপি, ইউএনও মহোদয়কেও এই রাস্তার ব্যাপারে অবগত করেছেন, তাতেও কোনো কাজ হয়নি। এমনকি তিনি মনে করেন এই রাস্তা পাকাকরন করা হলে এলাকার মানুষ নির্বিঘ্নে তাদের জীবন চলাচলের মান স্বাভাবিক ভাবে চলবে।’

লালপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইউএনও মেহেদী হাসান বলেন, ‘বিষয়টি আমি উপজেলা প্রকৌশলীকে নির্দেশনা দিয়েছি রাস্তার আইডি অন্তর্ভুক্ত করে প্রস্তাব পাঠানোর, যেন এলাকাবাসির ভোগান্তি লাঘব হয়।’