বন্ধুত্বের টানে আটলান্টিক পাড়ি দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র থেকে চলে এসেছেন এক বিদেশি নাগরিক-জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যের ব্যবসায়ী তেরি পারসন। তার গন্তব্য কোনো পর্যটন শহর নয়, বরং নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার খুবজীপুর ইউনিয়নের এক ছোট গ্রাম চর বালশা। সেখানে থাকেন তার নতুন বন্ধু, রাজমিস্ত্রি ও ভ্যানচালক সেতু মোল্লা।
মঙ্গলবার ভোররাতে ঢাকা শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে তেরি পারসনকে রিসিভ করেন সেতু। এরপর প্রিয় বন্ধুকে নিয়ে নিজ গ্রামের বাড়িতে ফিরে যান তিনি। শুধু তাই নয়, নিজ হাতে চালানো ব্যাটারিচালিত অটোরিকশায় পুরো গ্রাম ঘুরিয়ে দেখান এই বিদেশি অতিথিকে।
সেতু মোল্লা বলেন, আমি পেশায় রাজমিস্ত্রি, ফাঁকে ফাঁকে ভ্যান চালাই। পাশাপাশি নিজের ফেসবুক পেজে নানা বিষয়ে ভিডিও বানিয়ে পোস্ট করি। প্রায় ২৫ দিন আগে তেরি আমার একটি ভিডিওতে লাইক দেন, তারপর মেসেঞ্জারে কথা হয়। সেখান থেকেই শুরু বন্ধুত্ব। মাত্র ২৫ দিনের সেই সম্পর্কেই তিনি বাংলাদেশে চলে এলেন আমাকে দেখতে।
তেরি পারসন ১৫ দিনের ছুটি নিয়ে বাংলাদেশে এসেছেন। সঙ্গে এনেছেন দুই ভরি ওজনের স্বর্ণের চেইন, শিশুদের জন্য খেলনা এবং সেতুর পরিবারের জন্য নানা উপহার। এখন গ্রামের মানুষদের সঙ্গে সময় কাটাচ্ছেন, শিশুদের সঙ্গে খেলছেন ও গল্প করছেন।
নিজের অনুভূতি জানাতে গিয়ে তেরি বলেন, এটা আমার জীবনের সবচেয়ে অনন্য অভিজ্ঞতা। বাংলাদেশে এসে বুঝেছি, সরল মানুষ কতটা হৃদয়বান হতে পারে। আমেরিকায় জীবন বিলাসী ও ব্যয়বহুল, কিন্তু এখানে মানুষ খুব সাধারণভাবে বাঁচে- আর সেটাই অসাধারণ। আমি আবারও ছয় মাস পর বাংলাদেশে আসব এবং আমার বন্ধুদের বলব, বাংলাদেশে ঘুরে যেতে। এটা সত্যিই এক চমৎকার দেশ।
তিনি আরও জানান, বাংলাদেশে এসে মুরগির মাংস, চা ও কফি খেয়েছেন- যা তার খুব ভালো লেগেছে। এখানকার মানুষের আন্তরিকতা ও ভালোবাসা তাকে মুগ্ধ করেছে।
এখনো আরও ১১ দিন দেশে থাকবেন তেরি পারসন। এই সময় তিনি গ্রামের মানুষের সঙ্গে সময় কাটাতে চান। বন্ধুত্বের এই গল্প হয়ে থাকছে দুই দেশের মানবিক বন্ধন ও আন্তরিকতার এক অনন্য দৃষ্টান্ত।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন