ঢাকা বুধবার, ০৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

উত্তরা ইপিজেডে শ্রমিকদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংঘর্ষ, নিহত ১

নীলফামারী প্রতিনিধি
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২, ২০২৫, ০২:০০ পিএম
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে শ্রমিকদের সংঘর্ষ। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

নীলফামারীর উত্তরা ইপিজেডে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে শ্রমিকদের সংঘর্ষে এক শ্রমিক নিহত হয়েছেন এবং শতাধিক আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে পাঁচজনের অবস্থা গুরুতর, যাদের নীলফামারী জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। বর্তমানে পুরো ইপিজেড এলাকা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) সকাল ৮টার দিকে ইপিজেডের এভারগ্রিন কারখানার সামনে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

নিহত শ্রমিকের নাম হাবিব, তিনি ইকু প্লাস্টিক কারখানার কর্মী এবং কাজিরহাট এলাকার বাসিন্দা দুলাল হোসেনের ছেলে।

প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে জানা যায়, এভারগ্রিন কোম্পানির শ্রমিকরা কয়েকদিন ধরেই বিভিন্ন দাবিতে আন্দোলন করছিলেন। এরই মধ্যে সোমবার কোম্পানিটি অনির্দিষ্টকালের জন্য কারখানা বন্ধের ঘোষণা দেয়। এই ঘোষণার প্রতিবাদে আজ মঙ্গলবার সকালে শ্রমিকরা ইপিজেডের মূল গেটে অবস্থান নেয় এবং অন্য কারখানার শ্রমিকদের কাজে যোগ দিতে বাধা দিতে থাকে।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গেলে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। শ্রমিকদের অভিযোগ, শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচি চলাকালে পুলিশ ও সেনাবাহিনী এক নারী শ্রমিককে মারধর করে, তখন উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী গুলি চালায়। এতে হাবিব গুলিবিদ্ধ হন এবং পরে হাসপাতালে মারা যান।

শ্রমিক মমিনুর রহমান বলেন, ‘আমরা শান্তিপূর্ণভাবে অবস্থান নিয়েছিলাম। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী হঠাৎ আমাদের ওপর গুলি চালায়।’

আরেক শ্রমিক মো. রায়হান বলেন, ‘আমরা কোনো রাজনৈতিক ইস্যুতে আন্দোলন করিনি। এটা ছিল আমাদের ন্যায্য অধিকার আদায়ের শান্তিপূর্ণ দাবি।’

শ্রমিক লিপি আক্তার বলেন, ‘ডিউটিতে এসে দেখি গেট বন্ধ। এর কিছুক্ষণ পরই আমাদের ওপর গুলি চালানো হয়। একজন ভাই মারা গেলেন, এর জবাব কে দেবে?’

নীলফামারী জেনারেল হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. তানভীরুল ইসলাম জানান, ‘আমাদের এখানে ছয়জন আহত শ্রমিককে আনা হয়। তাদের মধ্যে হাবিব নামে একজনকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়।’

৫৬ বিজিবি নীলফামারীর অধিনায়ক লে. কর্নেল এসএম বদরুদ্দোজা বলেন, ‘বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে এবং ইপিজেডের সব কারখানা বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। প্রশাসনিক পর্যায়ে আলোচনা চলছে।’

এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত উত্তরা ইপিজেডের মহাব্যবস্থাপক কার্যালয়ে শ্রমিক নেতারা, এভারগ্রিন কর্তৃপক্ষ, জেলা প্রশাসন, পুলিশ, বিজিবি ও সেনাবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের মধ্যে বৈঠক চলছিল। তবে তাদের কাছ থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক বক্তব্য পাওয়া যায়নি।