শুঁটকি মৌসুম ঘনিয়ে আসায় পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার কুয়াকাটায় জমে উঠেছে শুঁটকিপল্লি নির্মাণের কাজ। শীতের বাজারকে সামনে রেখে চাং, কাঠামো, ঘর ও দোকান নির্মাণে এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন শ্রমিকরা। প্রায় সাড়ে চার মাসব্যাপী চলা এই মৌসুমে কেমিক্যালমুক্ত শুঁটকি উৎপাদন করে দেশ-বিদেশে সুনাম অর্জন করে আসছেন কুয়াকাটার ব্যবসায়ীরা।
মাঠঘাট ঘুরে দেখা গেছে, শুঁটকিপল্লিগুলোতে দ্রুতগতিতে চলছে নির্মাণকাজ। শ্রমিকদের থামার সুযোগ নেই বললেই চলে। পুরুষ শ্রমিকদের পাশাপাশি সমানতালে কাজ করছেন নারী শ্রমিকরাও। মাছ ধরার নৌযানগুলো সমুদ্র থেকে ফিরলেই শুরু হবে শুঁটকি প্রক্রিয়াজাতের মূল ব্যস্ততা। এতে মৌসুমি কর্মসংস্থানের সুযোগ পাচ্ছেন এলাকার বহু মানুষ।
স্থানীয় শ্রমিক হারুন বলেন, ‘নভেম্বরের শুরুতেই শুঁটকি মৌসুম শুরু হয়। তাই এখন দিনরাত পল্লি তৈরির কাজ করছি। নৌকা ভেড়ার পরই শুরু হবে আসল কাজ।’
নারী শ্রমিক সেলিনা বেগম বলেন, ‘একেকটি পল্লি তৈরিতে ১৮ থেকে ২০ দিন সময় লাগে। আমরা এখানে সম্পূর্ণ কেমিক্যালমুক্ত শুঁটকি প্রস্তুত করি।’
দীর্ঘ দুই দশক ধরে শুঁটকি উৎপাদনের সঙ্গে জড়িত ইউসুফ মৃধা জানান, ‘লইট্ট্যা, ফাইস্যা, ছুরি, ছোট চিংড়ি, পোয়া, রূপচাঁদা, লাক্ষাসহ প্রায় ৩০ প্রজাতির মাছ শুঁটকি করা হয়। মৌসুমে কয়েক কোটি টাকার শুঁটকি বিক্রি হয়।’
শুঁটকি ব্যবসায়ী সোহেল মাহমুদ বলেন, ‘আমাদের শুঁটকি পুরোপুরি স্বাস্থ্যসম্মত ও কেমিক্যালমুক্ত। পর্যটকরা সরাসরি দোকান থেকে কেনেন, পাশাপাশি আমরা অনলাইনেও দেশের যেকোনো জায়গায় সরবরাহ করি। মান বজায় রাখাই আমাদের অঙ্গীকার।’
এদিকে, শুঁটকি প্রস্তুতকারীদের জন্য পরিকল্পিত স্থায়ী জায়গা তৈরির কাজ চলছে বলে জানিয়েছেন কুয়াকাটা পৌরসভার প্রশাসক ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ইয়াসীন সাদেক। তিনি বলেন, ‘শৃঙ্খলাবদ্ধভাবে শুঁটকি উৎপাদন ও পরিবেশ-স্বাস্থ্য রক্ষায় একটি নির্দিষ্ট এলাকা তৈরি করা হচ্ছে। দ্রুতই কাজ শেষ করা হবে।’
অনুকূল আবহাওয়া ও পর্যাপ্ত মাছ ধরা পড়লে এ বছর শুঁটকি উৎপাদনে ভালো মৌসুম যাবে বলে আশা করছেন ব্যবসায়ী ও শ্রমিকরা।


