পিরোজপুরে তিন দফা দাবিতে পূর্ণদিবস কর্মবিরতি পালন করছেন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা।
রোববার (২৬ মে) থেকে শুরু হওয়া এই কর্মবিরতির ফলে বিদ্যালয়ে এলেও পাঠদান না হওয়ায় অলস সময় কাটিয়ে ফিরে যাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষকদের দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে- সহকারী শিক্ষক পদকে ‘এন্ট্রি পদ’ হিসেবে ১১তম গ্রেডে বেতন নির্ধারণ, ১০ ও ১৬ বছর পূর্তিতে উচ্চতর গ্রেড প্রাপ্তির জটিলতা নিরসন এবং শতভাগ পদোন্নতির মাধ্যমে প্রধান শিক্ষক পদে দ্রুত পদোন্নতির সুযোগ নিশ্চিত করা।
জেলা শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, পিরোজপুর জেলার সাত উপজেলায় মোট ৯৮৯টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এসব বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক কর্মরত আছেন ৪ হাজার ৪৭২ জন এবং শিক্ষার্থী সংখ্যা ১ লাখ ৩৪ হাজার ৬৩০ জন।
সরেজমিনে জেলার বিভিন্ন বিদ্যালয়ে দেখা গেছে, শিক্ষার্থীরা যথাসময়ে বিদ্যালয়ে এলেও শ্রেণিকক্ষে পাঠদান হচ্ছে না। তারা খেলাধুলা, ছবি আঁকা ও গল্প করে সময় পার করছেন।
অপরদিকে, শিক্ষকরা স্কুলে উপস্থিত থাকলেও কর্মবিরতির অংশ হিসেবে শ্রেণিকক্ষে না গিয়ে স্কুল প্রাঙ্গণে ব্যানারসহ কর্মসূচি পালন করছেন।
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নজরুল ইসলাম জানান, ২০ থেকে ২৫ মে পর্যন্ত তারা অর্ধদিবস কর্মবিরতি পালন করেছেন এবং ২৬ মে থেকে পূর্ণদিবস কর্মবিরতি শুরু করেছেন।
তিনি বলেন, ‘আমাদের দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।’
শিক্ষার্থীদের অনেকেই এ অবস্থায় ক্লাস না হওয়ায় হতাশা প্রকাশ করেছেন। তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী মেহেরিমা বলেন, ‘আমরা সময়মতো স্কুলে গেলেও শিক্ষকরা ক্লাস নিচ্ছেন না।’
পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী অলিউল্লাহ বলেন, ‘এভাবে ক্লাস না হলে পরীক্ষায় ফেল করব। আমরা চাই আবার আগের মতো ক্লাস হোক।’
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শাহ্ মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান বলেন, ‘শিক্ষকরা বিদ্যালয়ে উপস্থিত থাকলেও তারা কর্মবিরতিতে রয়েছেন। ফলে পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। অভিভাবকরা এ নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করছেন।’
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (চলতি দায়িত্ব) মোহাম্মদ মোস্তফা কামাল বলেন, ‘আমরা শিক্ষকদের ক্লাস নেওয়ার জন্য অনুরোধ করেছি। তাদের দাবিগুলো সম্পর্কে জানি, তবে শিশুদের স্বার্থে পাঠদান চালু রাখার জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে।’
আপনার মতামত লিখুন :