পিরোজপুরের নেছারাবাদে ১১ বছর বয়সি এক শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের ঘটনায় আপস-মীমাংসার কথা বলে এক লাখ টাকা ঘুস নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে বিএনপির এক নেতার বিরুদ্ধে। নজরুল কবির নামের ওই নেতা চামী গ্রামের ৩ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি।
ভুক্তভোগী পরিবার ওই নেতার সালিস না মেনে থানায় মামলা দেওয়ার পর টাকা নেওয়ার বিষয়টি জানাজানি হয়। গত শুক্রবার উপজেলার বলদিয়া ইউনিয়নের চামী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত ধর্ষক মো. মনির হোসেন ফরাজীকে (৫৫) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বিষয়টি সোমবার (২৮ জুলাই) দুপুরে ওসি মো. বনি আমিন নিশ্চিত করেছেন।
জানা গেছে, ভিকটিম উপজেলার চামী মুসলিমিয়া দাখিল মাদ্রাসার ৫ম শ্রেণির ছাত্রী। গত ২৫ জুলাই বেলা ১১টার দিকে বাড়ির পাশের মনির হোসেন ফরাজির দোকানে যায় ওই শিশুটি। দোকানি মনির তাকে জোর করে দোকানের ভেতর নিয়ে ধর্ষণ করেন। ঘটনা জানাজানি হলে ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য এবং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মো. মনজুরুল কবির অভিযুক্ত পরিবারকে আপস-মীমাংসার কথা বলে এক লাখ টাকা আদায় করে নেয়।
ধর্ষিতার পরিবার বিষয়টি জেনে নেছারাবাদ থানায় মনির হোসেন ফরাজীকে আসামি করে শনিবার রাতে থানায় মামলা দেয়। পুলিশ আসামি মনিরকে গ্রেপ্তার করে রোববার সকালে পিরোজপুর আদালতে পাঠায়।
অভিযুক্ত মনিরের মা মোসাম্মৎ মাহাফুজা বেগম বলেন, ‘ছেলে একটু অপরাধ করে বসেছে। এ জন্য তাকে ধরে অনেক মারধর করেছে সাবেক মেম্বার মনজুরুল কবির। পরে চৌকিদার সজীব মাঝির মাধ্যমে মেম্বার এক লাখ টাকা নিয়েছেন। টাকা দেওয়ার পরও আমার ছেলের নামে মামলা হলো কেন?’
গ্রাম্য চৌকিদার সজীব মাঝি বলেন, ‘হাত থেকে কোনো টাকা নেইনি। ওয়ার্ড বিএনপির নেতা ও সাবেক ইউপি সদস্য মো. মনজরুল কবির মীমাংসার কথা বলে সবার সামনে ৫০ হাজার টাকা নিয়েছিলেন। পরে মামলা হওয়ায় সে টাকা ফেরত দেওয়া হয়েছে। আমি কোনো টাকা ধরিনি।’
তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অভিযুক্ত মনজুরুল কবির। তিনি বলেন, ‘কোনো টাকা নেইনি। কারা নিয়েছে তা আমি জানি না। আমি ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি, সাবেক ইউপি সদস্য। একটা সালিস বিচারে গেলে নানা লোকে নানা কথা বলতেই পারে। তাতে কি প্রমাণ হয় টাকা নিয়েছি?’
নেছারাবাদ থানার ওসি মো. বনি আমিন বলেন, ‘এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। রোববার ধর্ষণের শিকার ছাত্রীকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য সিভিল সার্জন অফিসে এবং গ্রেপ্তারকৃত আসামিকে পিরোজপুর আদালতে পাঠানো হয়েছে।’