পিরোজপুরের ইন্দুরকানীতে টেন্ডার বা কোনো অনুমতি ছাড়াই সহকারী শিক্ষকের সহযোগিতায় একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দরজা ভেঙে জোরপূর্বক শতাধিক পুরাতন বেঞ্চ কেজি দরে বিক্রি করে দেন কয়েকজন স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা। পরে বিক্রির টাকা নিজেদের মধ্যে ভাগ-বাঁটোয়ারাও করে নেন তারা।
রোববার (৭ সেপ্টেম্বর) সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেন ২৪ নম্বর ভবানীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নিগার সুলতানা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গত বুধবার উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক সোহেল সিকদার, নেতা শাহিন বয়াতি ও ইমাম শিকদার স্থানীয় ভাঙারি ব্যবসায়ী জাকির হোসেন গাজীর কাছে বেঞ্চগুলো বিক্রি করেন। শনিবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ভাঙারির গুদামে স্তুপ করে রাখা হয়েছে সেই বেঞ্চগুলো।
তিনি আরও জানান, বিষয়টি উপজেলা বিএনপির সভাপতি মো. ফরিদ আহম্মেদকে জানালে তিনি বলেন, বেঞ্চগুলো ওই তিন নেতাকে দিয়ে দিতে। তিনি আরও বলেন, যদি কেউ জিজ্ঞেস করে, তাহলে যেন বলে দেওয়া হয়, তার (সভাপতির) সাথে যোগাযোগ করতে।
এ বিষয়ে উপজেলা বিএনপির সভাপতি মো. ফরিদ আহম্মেদ বলেন, ‘বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মাওলানা জসিম উদ্দিন বিএনপি অফিসে বসে আমাকে বলেন, বেঞ্চগুলো আমাদের কোনো কাজে আসবে না, নিতে কোনো সমস্যা নেই। তবে যারা এই নিউজ করেছে, আমি তাদের বিষয়ে জানি। তাদের বিরুদ্ধে মামলা করব।’
তবে সহকারী শিক্ষক মাওলানা জসিম উদ্দিন বলেন, ‘আমি বেঞ্চ বিক্রি করিনি। তবে উপজেলা অফিসে বসে বিএনপির সভাপতিকে পুরাতন বেঞ্চ নিতে বলেছিলাম। আসলে না বুঝেই কথাটি বলেছি।’
উপজেলা শিক্ষা অফিসার আব্দুল হাকিম বলেন, ‘শুধু একটি পরিত্যক্ত ভবন ও কয়েকটি গাছের নিলাম হয়েছে। কোনো বেঞ্চ বিক্রির নিলাম হয়নি। কেউ এ বিষয়ে অনুমতি নেয়নি। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হাসান বিন মুহাম্মদ আলী বলেন, ‘পুরাতন বেঞ্চ বিক্রির কোনো সরকারি অনুমোদন বা নিলাম হয়নি। বিষয়টি তদন্ত করে সত্যতা পাওয়া গেলে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
গত ৪ আগস্ট ২৪ নম্বর ভবানীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একটি পরিত্যক্ত ভবন, ৮টি মেহগনি ও ৬টি চম্বল গাছের নিলাম বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয় এবং ১১ আগস্ট তা অনুষ্ঠিত হয়। স্কুলের ওই পরিত্যক্ত ভবনের কক্ষে শতাধিক পুরাতন লোহার বেঞ্চ সংরক্ষিত ছিল।