রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে মাজারে হামলা, পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর, লাশ উত্তোলন ও পুড়িয়ে ফেলার মতো সহিংস ঘটনায় জড়িত সন্দেহে এখন পর্যন্ত ১৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। গ্রেপ্তারদের মধ্যে রয়েছেন স্থানীয় এক মসজিদের ইমাম, যিনি ঘটনার পর থেকেই পলাতক ছিলেন।
মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) সকালে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, গ্রেপ্তার হওয়া মসজিদের ইমাম লতিফকে মানিকগঞ্জের একটি চর এলাকা থেকে ভোররাতে আটক করা হয়।
এর আগে গতকাল সোমবার রাতে এই ঘটনায় নিহত রাসেল মোল্লার বাবা মো. আজাদ মোল্লা (৫৫) বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় মাজার ভাঙচুর, সম্পদ লুটপাট, মরদেহ উত্তোলন, আগুনে পুড়িয়ে ফেলা এবং প্রাণহানির অভিযোগ আনা হয়।
গত ২৩ আগস্ট মৃত্যু হয় স্থানীয়ভাবে ‘নুরাল পাগলা’ নামে পরিচিত নুরুল হক নামের এক ব্যক্তির। তার অনুসারীরা গোয়ালন্দ উপজেলার একটি দরবার শরিফে তাকে দাফন করেন এবং পরে কবরের ওপর কাবা শরীফের আদলে ১০-১২ ফুট উঁচু একটি স্থাপনা নির্মাণ করেন। এ নির্মাণ নিয়ে স্থানীয়দের একটি অংশ আপত্তি জানালে এলাকাজুড়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
এই উত্তেজনার সূত্র ধরে ৫ সেপ্টেম্বর জুমার নামাজের পর শত শত মানুষ ওই দরবার শরিফে হামলা চালায়। তারা কবর থেকে নুরুল হকের মরদেহ উত্তোলন করে এবং সেটি আগুনে পুড়িয়ে দেয়। এ সময় ‘নুরাল পাগলার অনুসারী’ ও ‘ঈমান-আকিদা রক্ষা কমিটি’র মধ্যে ভয়াবহ সংঘর্ষ হয়। এতে একজন নিহত এবং সাংবাদিকসহ অন্তত ২২ জন আহত হন।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসন। তবে বিক্ষুব্ধ জনতা তাদের বাধা দেয় এবং ইউএনও, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ও গোয়ালন্দ ঘাট থানার ওসির গাড়ি ভাঙচুর করে। হামলায় পাঁচ পুলিশ সদস্য ও দুই প্রশাসনিক কর্মকর্তা আহত হন।
পুলিশ জানিয়েছে, সহিংসতায় জড়িতদের শনাক্ত করে গ্রেপ্তার অভিযান চলছে। আটককৃতদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাস, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, হত্যাচেষ্টা এবং ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগে একাধিক ধারায় মামলা করা হয়েছে।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন