রবিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রাজশাহী ব্যুরো

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৪, ২০২৫, ০৪:৪৪ পিএম

ঋণের বোঝায় ৪ জনের মৃত্যু, ধার নিয়ে ‘চল্লিশা’ আয়োজন

রাজশাহী ব্যুরো

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৪, ২০২৫, ০৪:৪৪ পিএম

ধার-দেনা করে মৃতদের জন্য চল্লিশা অনুষ্ঠানের আয়োজন। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

ধার-দেনা করে মৃতদের জন্য চল্লিশা অনুষ্ঠানের আয়োজন। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

ঋণের দায়ে ও খাওয়ার অভাবে রাজশাহীর পবা উপজেলার বামনশিকড় গ্রামে স্ত্রী ও দুই শিশু সন্তানকে হত্যার পর আত্মহত্যা করেছেন মিনারুল ইসলাম। কিন্তু এই ঘটনার পরও পরিবারের শিক্ষা হয়নি।

শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) লাখ টাকা ব্যয়ে আবারও ধার-দেনা করে মৃতদের জন্য চল্লিশা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছেন মিনারুলের বাবা রুস্তম আলী।

কেউ মারা গেলে ৪০ দিনের মাথায় ‘চল্লিশা’ করা হয়। কোনো কোনো এলাকায় এই অনুষ্ঠানকে ‘ফয়তা’ নামেও ডাকা হয়। এতে সমাজের মানুষরা আমন্ত্রিত হন এবং দুপুরের খাবার খাওয়া হয়। এই ধরনের আয়োজন করে রুস্তম আলী এক হাজার ২০০ মানুষকে খাইয়েছেন।

গত ১৪ আগস্ট রুস্তম আলীর ছেলে মিনারুল ইসলাম (৩৫), তার স্ত্রী মনিরা খাতুন (৩০), ছেলে মাহিম (১৪) ও মেয়ে মিথিলা (৩) আত্মহত্যা করেন। মৃত্যুর আগে মিনারুল চিরকুটে লিখে গেছেন, ‘আমরা মরে গেলাম, ঋণের দায়ে আর খাওয়ার অভাবে।’

স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান সাঈদ আলী মুর্শেদ বলেন, ‘ইসলামের দৃষ্টিতে এ ধরনের অনুষ্ঠানের আয়োজনের বিধান নেই; কিন্তু কেউ মারা গেলে এটি করতে হয়। এটা আমাদের এলাকার একটা প্রথা।’

শনিবার বামনশিকড় গ্রামের এই আয়োজনে ভ্যানে চড়ে দূরের গ্রাম থেকে আসেন আত্মীয়স্বজনরা। পুরো গ্রামের মানুষও খাওয়া-দাওয়ায় অংশ নেন। রুস্তম আলীর বাড়ির সামনে ও পেছনে দুটি প্যান্ডেল তৈরি করা হয়। প্যান্ডেলে বসে তারা খাওয়া-দাওয়া করেন। ভাতের সঙ্গে ছিল ডাল ও মুড়িঘণ্ট। রুস্তম আলী ঘুরে ঘুরে সবকিছু দেখেন।

রুস্তম আলী বলেন, ‘এ অনুষ্ঠানকে কেউ চল্লিশা বলে, কেউ বলে ফয়তা। সমাজের মানুষকে নিয়ে এটা করতে হয়। বাপ-দাদার আমল থেকেই দেখি। আমি মনের আবেগে করলাম। যে যার সামর্থ্য অনুযায়ী করে। আমি গরিব মানুষ, মাংস করতে পারিনি। মাছ দিয়ে মুড়িঘণ্ট আর ডাল করেছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘আশপাশের মানুষজন বলছিল চার জনের মরার কারণে বাড়ি ভারী লাগছিল। ছোটরা ভয় পাচ্ছিল। অনুষ্ঠানটা করলাম যাতে ভয় ভাঙে। বাড়ি যেন পাতলা না হয়। এ কারণে দুপুরে দোয়া হয়েছে। এরপর খাওয়া-দাওয়া হয়েছে। প্রায় এক লাখ টাকা খরচ হয়েছে। আত্মীয়স্বজন ও সমাজের মিলিয়ে ১,২০০ মানুষের জন্য আয়োজন করা হয়েছিল।’

টাকা জোগাড় কীভাবে হলো জানতে চাইলে রুস্তম আলী বলেন, ‘সবই ধার-দেনা। আমার তো জমানো টাকা নেই।’ শোধ করবেন কীভাবে? এ প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘১৫-১৬ কাঠা জমি আছে। এক কাঠা বেচব, বেচে ধার শোধ করব। তা ছাড়া আর কোনো উপায় নেই।’

Link copied!