ঢাকা মঙ্গলবার, ০৭ অক্টোবর, ২০২৫

রূপালী বাংলাদেশে সংবাদ প্রকাশ

আর্থিক সহায়তা পেলেন বিদ্যুৎহীন লিলিমন

সজিবুল ইসলাম পাভেল, কালাই (জয়পুরহাট) প্রতিনিধি
প্রকাশিত: অক্টোবর ৭, ২০২৫, ০৫:১৩ পিএম
স্বামী পরিত্যক্তা লিলিমন বিবিকে বিদ্যুৎ সংযোগে আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

টাকার অভাবে ২০ বছরেও ঘরে বিদ্যুতের আলো জ্বালাতে পারেননি স্বামী পরিত্যক্তা লিলিমন বিবি। অবশেষে সংবাদ প্রকাশের পর মানবিক উদ্যোগে খুলে গেল তার অন্ধকার ঘরে আলো জ্বালানোর স্বপ্ন।

সম্প্রতি দৈনিক রূপালী বাংলাদেশসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে ‘ভাঙা টিনের ঘরে বিদ্যুৎবিহীন জীবন লিলিমন বিবির’, ‘গরম-অন্ধকারের যুদ্ধে একা লিলিমন: ২০ বছর বিদ্যুৎবিহীন জীবন’-সহ নানা শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে বিষয়টি নজরে আসে স্থানীয় প্রশাসন ও সমাজের সচেতন মহলের।

এরই অংশ হিসেবে চ্যানেল আই জয়পুরহাট প্রতিনিধি শফিউল বারী রাসেলের উদ্যোগে লন্ডন প্রবাসী সালেহ আকরাম মেরিনের সহযোগিতায় লিলিমন বিবিকে বিদ্যুৎ সংযোগ দিতে আর্থিক সহায়তা দিতে এগিয়ে আসে মানবিক সংগঠন ‘মৌলিক বাংলা’।

সোমবার (৬ অক্টোবর) বিকেলে মৌলিক বাংলার জয়পুরহাট শাখার আয়োজনে কালাই প্রেসক্লাব মিলনায়তনে আনুষ্ঠানিকভাবে লিলিমন বিবির হাতে বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য ৫ হাজার টাকার আর্থিক সহায়তার চেক তুলে দেন প্রধান অতিথি কালাই প্রেসক্লাবের সভাপতি সেলিম সারোয়ার শিপন।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন প্রেসক্লাব কালাইয়ের সভাপতি আতাউর রহমান, কালাই প্রেসক্লাবের সহসভাপতি তানভিরুল ইসলাম রিগান, সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. নাফিউৎ জামান তালুকদার ডলার, দপ্তর সম্পাদক আসাদুজ্জামান নয়ন, আইনবিষয়ক সম্পাদক আবু বক্কর সিদ্দিক প্রিন্স, আপ্যায়ন সম্পাদক লিটন তালুকদার, নির্বাহী সদস্য সজিবুল ইসলাম পাভেল, মৌলিক বাংলার প্রতিনিধি সাকিব হোসেনসহ অন্যরা।

সহায়তা পেয়ে আনন্দে কান্না জড়িত কণ্ঠে লিলিমন বিবি বলেন, ‘২০ বছর অন্ধকার ঘরত আচোনো বাবা। হারকেন কুপির আলোয় রাত পার করিছি। এখন বিদ্যুৎ লেওয়া পারমু, খুব খুশি লাগোছে। যারা হামাক সাহায্য করলো, আল্লাহ তাদের ভালো করুক।’

অবশেষে দীর্ঘ ২০ বছরের অন্ধকার জীবনে আলো জ্বালার স্বপ্ন পূরণের অপেক্ষায় এখন লিলিমন। বিদ্যুৎ সংযোগ পেলে তার ভাঙা টিনের ঘরেও জ্বলবে আলোর হাসি।

জয়পুরহাটের কালাই পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সড়াইল গ্রামের বাসিন্দা স্বামী পরিত্যক্তা লিলিমন বিবি (৫৫) দীর্ঘ দুই দশক ধরে ভাঙা টিনের ছাপড়া ঘরে বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায় বসবাস করছিলেন। তীব্র গরমে কুপি ও হারিকেনের আলোয় রাত কাটানো এই নারী জীবনের সাথে যুদ্ধ করে বেঁচে ছিলেন নীরবে।

তার গল্প সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে দারুণ সাড়া পড়ে। বিষয়টি মানবিকভাবে গ্রহণ করে মৌলিক বাংলা সংগঠন, যারা অসহায় ও প্রান্তিক মানুষের পাশে দাঁড়াতে কাজ করে যাচ্ছে নিয়মিত।