রাজশাহী-১ (গোদাগাড়ী-তানোর) আসনে বিএনপির প্রাথমিক মনোনয়ন পাওয়া মেজর জেনারেল (অব.) শরীফ উদ্দিন ও মনোনয়ন বঞ্চিত বিএনপি নেতা সুলতানুল ইসলাম তারেকের অনুসারীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন।
মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) সন্ধ্যায় তানোর উপজেলা সদরে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়রা জানান, শরীফ উদ্দিনের মনোনয়ন বাতিলের দাবিতে সন্ধ্যায় তানোর মিনি স্টেডিয়াম মাঠ থেকে মশাল মিছিল বের করেন সুলতানুল ইসলাম তারেকের অনুসারীরা। মিছিল থানার মোড়ের দিকে পৌঁছালে সামনে থেকে শরীফ উদ্দিনের সমর্থকরা হামলা চালিয়ে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করেন। পরে উভয়পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। এতে দুই পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হন। কয়েকজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
তানোর উপজেলা যুবদল যুগ্ম আহ্বায়ক ও তারেক গ্রুপের নেতা আতিকুর রহমান আতিক বলেন, ‘আমরা শান্তিপূর্ণভাবে মশাল মিছিল বের করছিলাম। হঠাৎ সামনে থেকে অতর্কিত হামলা চালানো হয়। তারা বৃষ্টির মতো ইট-পাটকেল ছোড়ে। এতে আমাদের বেশ কিছু নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। কয়েকজনকে লাঠিপেটা করে গুরুতর জখম করেছে।’
সুলতানুল ইসলাম তারেক বলেন, ‘তারা দল করে, আমরাও দল করি। প্রার্থী পছন্দ না হলে সারাদেশেই বিক্ষোভ হচ্ছে। আমাদের এখানেও হচ্ছে। আমার অনুসারীরা সন্ধ্যায় প্রার্থী পরিবর্তনের দাবিতে মশাল মিছিল বের করেন। তখন শরীফ সাহেবের অনুসারীরা হামলা করেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘শরীফ সাহেব তানোর পৌরসভার সাবেক মেয়র ও বহিষ্কৃত বিএনপি নেতা মিজানুর রহমান মিজানকে নির্দেশ দিয়েছেন—এলাকায় যেন কোনো বিক্ষোভ না হয়। তাই মিজান নিজেই লোকজন নিয়ে হামলা চালিয়েছে। আমাদের নেতাকর্মীদের পিটিয়ে পা ভেঙে দেওয়া ছাড়াও গুরুতর জখম করেছে। এ ঘটনায় আমরা থানায় অভিযোগ করব।’
তারেক অভিযোগ করেন, তাদের নেতাকর্মীদের বহনকারী অন্তত ১৮টি অটোরিকশা ভাঙচুর করা হয়েছে। বিভিন্ন স্থান থেকে নেতাকর্মীরা এসব অটোরিকশায় উঠে উপজেলা সদরে আসেন। হামলাকারীরা গাড়িগুলো ভাঙচুরের পর চাবি নিয়ে যায়। হামলার সময় তাদের কয়েকজন ভূমি অফিসে আশ্রয় নিলে সেখানেও হামলা চালানো হয়। এসময় ভূমি অফিসের এক কর্মকর্তার গাড়িও ভাঙচুর করা হয় বলে জানান তিনি।
তানোর পৌরসভার সাবেক মেয়র ও বিএনপির বহিষ্কৃত নেতা মিজানুর রহমান মিজান বলেন, ‘তারা হামলা করেনি, বরং বাধা দিয়েছে। মিছিল থেকে আমাদের কর্মীদের ওপর হামলা চালানো হয়েছে। এতে আমাদের বেশ কয়েকজন কর্মী আহত হয়েছেন।’
বিষয়টি নিয়ে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী শরীফ উদ্দিনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
তানোর থানার ওসি আফজাল হোসেন বলেন, ‘বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। বর্তমানে এলাকা শান্ত রয়েছে।’
রাজশাহী গোদাগাড়ী সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার মীর্জা মো. আব্দুস সালাম বলেন, ‘পুলিশের অনুমতি নিয়ে যে কেউ মিছিল-মিটিং করতে পারে, এতে কারও বাধা দেওয়ার এখতিয়ার নেই। তানোরে মিছিলে বাধা দেওয়া কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে। সংঘর্ষের সময় বেশ কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।’



