ঢাকা মঙ্গলবার, ২৫ নভেম্বর, ২০২৫

সার মিলছে না আক্কেলপুরে, ভোগান্তিতে কৃষকরা

আক্কেলপুর (জয়পুরহাট) প্রতিনিধি
প্রকাশিত: নভেম্বর ২৫, ২০২৫, ১০:৩৭ পিএম
সার নিতে দোকানে ভীড় করছে কৃষকরা। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

অর্থনৈতিক চাপ আর আবহাওয়ার অনিশ্চয়তার মধ্যে এবার নতুন করে যুক্ত হয়েছে সার সংকট। সকল জমি প্রস্তুত না হলেও কিছু জমি প্রস্তুত, তবে প্রয়োজনীয় সার না পেয়ে কৃষকরা দিশেহারা। স্থানীয় বাজারে ইউরিয়া ও টিএসপি সার মজুদ থাকলেও ডিএপি (ড্যাপ) সারের ঘাটতি সবচেয়ে বেশি।

জয়পুরহাটের আক্কেলপুরে পৌর শহরের সদর রাস্তায় নান্নুর সারের দোকানে দেখা মিলেছে কৃষকদের দীর্ঘ লাইন। অনেকের হাতে রয়েছে বস্তা, ব্যাগ ও জাতীয় পরিচয়পত্র।

জানা গেছে, শুধুমাত্র সোনামুখী ইউনিয়নের কৃষকদের সার প্রদান করা হবে। কেউ কেউ দূর থেকেও সার কেনার জন্য লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন। ডিলার ও কৃষি অফিস জানিয়েছে, কতটুকু সার এসেছে এবং কতটুকু দোকানে পৌঁছেছে তা যাচাইয়ের পরই অনুমতি দেওয়া হবে।

সোনামুখী ইউনিয়নের কৃষক ইসমাইল হোসেন বলেন, ‘সকাল থেকে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে আছি, কিন্তু কিছু সার দেওয়া হচ্ছে না। সার দোকানদার বলছে, কৃষি অফিস থেকে লোক এসে অনুমতি দিলে তবেই সার দেওয়া হবে। কতটুকু সার পাবো তা দিয়ে পুরো জমিতে প্রয়োগ করা সম্ভব হবে কি না, জানি না।’

সাবিনা হক অভিযোগ করেন, ‘অন্যান্য জায়গায় ব্যবসায়ীরা সুযোগ বুঝে সার মজুত করছেন এবং বেশি দামে বিক্রি করছেন। বড় কৃষকরা কোনোভাবে টিকে থাকলেও ক্ষুদ্র কৃষকরা চরম বিপাকে পড়বে।ৎ

সার ডিলার নান্নু জানান, ‘এ মাসে ৮২৬ বস্তা ডিএপি (ড্যাপ) সার শুধু সোনামুখী ইউনিয়নে দেওয়া হয়েছে। এখনও যত লোক সার চাচ্ছে, সঠিক মজুদ না থাকায় আরও দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।’

কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, প্রতি বিঘায় ডিএপি (ড্যাপ) সার সরকারি হিসেবে ২৭ কেজি বরাদ্দ থাকে। তবে জমি হিসাব করে বরাদ্দ পাওয়ায় সব সময় চাহিদা মিটছে না। কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে, আপাতত অল্প করে সার ব্যবহার করুন এবং মাটি বেধে দেওয়ার সময় আবার সার প্রয়োগ করুন। উপজেলা এলাকার অনেক জমি এখনও প্রস্তুত নয়, ফলে কৃষকরা পরে সার পাবেন কি না ভেবে এখনই নিকটস্থ ডিলারের কাছে ছুটছেন।

উপজেলা কৃষি অফিসার ও কৃষিবীদ মো. ইমরান হোসেন বলেন, ‘নভেম্বর মাসে ডিএপি (ড্যাপ) সারের জন্য মোট ৫৩৩ মেট্রিক টন বরাদ্দ ছিল, যা ইতোমধ্যে শেষ হয়ে গেছে। ডিসেম্বর মাসের জন্য ৩৭৭ মেট্রিক টন বরাদ্দ নিশ্চিত করেছি। আজ উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘চেষ্টা করছি আগামী ২৬ নভেম্বর বরাদ্দপত্র ঘোষণা যেন পাই। বরাদ্দপত্র পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ডিলাররা টাকা জমা দিলে ডিসেম্বরের ১ তারিখে সার মজুদ হবে।’

কৃষকরা জমিতে সার প্রয়োগ করতে না পারলে ভালো ফলন আশা করা যায় না। তাই বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে এবং দ্রুত সার সরবরাহ বাড়ানোর জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা চলছে।