ঢাকা বুধবার, ২৬ নভেম্বর, ২০২৫

৫ ঘণ্টার চেষ্টায় কড়াইল বস্তির আগুন নিয়ন্ত্রণে

রূপালী প্রতিবেদক
প্রকাশিত: নভেম্বর ২৫, ২০২৫, ১০:৫৯ পিএম
ছবি- সংগৃহীত

রাজধানীর কড়াইল বস্তিতে লাগা ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড প্রায় পাঁচ ঘণ্টার চেষ্টায় নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়েছে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স।

মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) বিকেল ৫টা ২২ মিনিটে আগুনের সূত্রপাত হয়। টানা প্রচেষ্টার পর রাত ১০টা ৩৫ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে বলে নিশ্চিত করেছে ফায়ার সার্ভিস।

আগুন নিয়ন্ত্রণে আসার পরও দমকল কর্মীরা বস্তির বিস্তীর্ণ অংশে ছড়িয়ে থাকা আগুন নিভিয়ে ফেলার কাজে ব্যস্ত রয়েছেন। এখনও পর্যন্ত হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি।

ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে, আগুন লাগার খবর তারা পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় সন্ধ্যা ৫টা ২২ মিনিটে। শুরুতে সরু গলি, যানজট এবং বৈদ্যুতিক তার ঝুলে থাকা পরিস্থিতির কারণে আগুন নিয়ন্ত্রণে সময় লেগেছে। বস্তির সরু গলির কারণে দমকল গাড়ি সরাসরি প্রবেশ করতে না পারায় দূর থেকে দীর্ঘ পাইপ টেনে পানি ছিটানো হয়েছে।

পানি সংকট মোকাবিলায় সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে বৌবাজার সংলগ্ন নালায় সেচপাম্প স্থাপন করে পানি সরবরাহ করা হয়। এরপরও পাইপ কেটে যাওয়ার কারণে দমকলকর্মীদের কাজ কিছুটা ব্যাহত হয়।

আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত বাসিন্দারা জানান, তাদের সবকিছু পুড়ে গেছে। বাসিন্দা সুমন আহমেদ বলেন, ‘আগুনের সময় আমি বাসার বাইরে ছিলাম। খবর শুনে এসে দেখি সব শেষ। স্ত্রী ও দুই সন্তানকে বের করতে পেরেছি, কিন্তু কিছুই সঙ্গে নিতে পারিনি।’

আরেক বাসিন্দা ফজলু বলেন, ‘এ অংশে অন্তত ৫ শতাধিক ঘর পুড়ে গেছে। কিছুই বাকি নেই।’

সালেহা বেগম নামে একজন কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘আমি কেমনে বাঁচমু? আমার সব শেষ হয়ে গেছে।’

রাত সাড়ে আটটার দিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের পরিচালক (অপারেশন ও মেইনটেন্যান্স) লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী।

তিনি জানান, আগুনের উত্তর-পূর্ব অংশ তীব্রভাবে ছড়িয়েছে। সরু গলি, মানুষের ভিড় এবং পাইপ কাটা—সব কারণে আগুন নিয়ন্ত্রণের কাজ কঠিন ছিল।

তার বলেন, ‘আমরা সর্বোচ্চ সক্ষমতা দিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ চালাচ্ছি। আরও ইউনিট সংযোজন ও পানি সরবরাহ নিশ্চিত করে আগুন সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করছি।’

ঘটনাস্থলে বিপুলসংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়। তারা সাধারণ মানুষের ভিড় নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে। দমকল ও পুলিশের তৎপরতায় এখন পর্যন্ত হতাহতের খবর না থাকলেও, ক্ষতিগ্রস্ত বাসিন্দাদের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বিপুল।

ফায়ার সার্ভিসের ১৯টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করেছে। আগুনের প্রকৃত কারণ এখনো নির্ণয় করা হয়নি।