ঢাকা সোমবার, ২১ জুলাই, ২০২৫

হঠাৎ পানি বৃদ্ধি, বন্যার শঙ্কায় উত্তরাঞ্চলের মানুষ

রংপুর ব্যুরো
প্রকাশিত: জুলাই ২১, ২০২৫, ০৯:৩৯ এএম
বন্যার শঙ্কায় উত্তরাঞ্চলের মানুষ। ছবি- সংগৃহীত

দেশের উত্তরাঞ্চলের নদনদীগুলোর পানি হঠাৎ করেই দ্রুত বৃদ্ধি পেয়েছে। উজানে টানা ভারি বর্ষণের কারণে তিস্তা, ধরলা, দুধকুমার ও ব্রহ্মপুত্রসহ বেশ কয়েকটি নদীর পানি বিপৎসীমার কাছাকাছি চলে এসেছে। ফলে রংপুর, কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, নীলফামারীসহ নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল ও চর এলাকায় স্বল্পমেয়াদি বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) জানায়, রোববার (২০ জুলাই) সন্ধ্যা ৬টায় দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে পানিপ্রবাহ ছিল ৫২.০৮ সেন্টিমিটার, যা বিপৎসীমার মাত্র ৭ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

গত ২৪ ঘণ্টায় তিস্তা নদীর পানিপ্রবাহ ১৪ সেমি, ধরলা ৪ সেমি, দুধকুমার ১৮ সেমি ও ব্রহ্মপুত্র ২১ সেমি বেড়েছে বলে কুড়িগ্রাম পাউবো সূত্রে জানা গেছে।

রংপুরের গঙ্গাচড়ার চরাঞ্চলের বাসিন্দা একরামুল হক বলেন, সকাল থেকেই পানি বাড়ছে। রাতের মধ্যে বন্যা হতে পারে। আমরা খুব চিন্তায় আছি।

একই এলাকার নয়া মিয়া জানান, গত রাত থেকেই পানি বাড়তেছে। ইতোমধ্যে গঙ্গাচড়ার অন্তত সাতটি ইউনিয়নের নিচু চরাঞ্চলে পানি ঢুকেছে।

কুড়িগ্রামের চর ভগবতীপুরের রশিদ আলী বলেন, আজ রাইত থাকি নদীত পানি বাড়তেছে। কিন্তু কোনো সরকারি লোক দেখি নাই, মাইকও বাজে না।

পাউবোর বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী সরদার উদয় রায়হান বলেন, তিস্তা নদী সংলগ্ন রংপুর, কুড়িগ্রাম, নীলফামারী ও লালমনিরহাটের নিম্নাঞ্চলে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে স্বল্পমেয়াদি বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে।

পাউবো আরও জানায়, ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, আসাম, অরুণাচল ও মেঘালয়ে ভারি বৃষ্টিপাতের কারণে বাংলাদেশের উত্তর ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলে নদীগুলোর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে।

কুড়িগ্রাম জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. আব্দুল মতিন বলেন, সরকারিভাবে প্রস্তুতি রয়েছে। তবে এখনো আগাম প্রচার শুরু হয়নি। পরিস্থিতি বুঝে চরাঞ্চলে প্রচার চালানো হবে।

স্থানীয় কৃষকরা জানান, কয়েক সপ্তাহ আগেও নদীতে পানি না থাকায় খরার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। এখন হঠাৎ করে পানি বাড়ায় পাকা ধান ও সবজির জমি ডুবে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

স্থানীয়রা বলছেন, আগে থেকেই সতর্কতা থাকলে এবং প্রচার কার্যক্রম চালানো হলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ অনেকটাই কমিয়ে আনা সম্ভব হতো। তারা দ্রুত সরকারি সহযোগিতা ও ত্রাণ কার্যক্রম শুরুর দাবি জানিয়েছেন।