মৌসুম শুরুর আগেই সক্রিয় হয়েছে সুন্দরবনের জলদস্যুরা। মুক্তিপণের দাবিতে গত মঙ্গলবার (২৫ আগস্ট) ও সোমবার সুন্দরবন সংলগ্ন বিভিন্ন নদী থেকে সাত জেলেকে অপহরণ করেছে তারা। মৌসুম শুরুর আগেই অপহরণের শিকার হওয়ায় জেলে পরিবারে আবারও নতুন করে দেখা দিয়েছে আতঙ্ক।
অপহরণের শিকার জেলেরা হলেন- মীরগাং গ্রামের সাকাত সরদারের ছেলে মো. ইবরাহিম, পারশেখালী গ্রামের আব্দুল গফুরের ছেলে আব্দুল হামিদ, টেংরাখালী গ্রামের সুসুজন মুন্ডার ছেলে সুজিত ও কালিঞ্চি গ্রামের কেনা গাজীর ছেলে রকিবুল ইসলাম।
অপহরণের শিকার জেলেদের বরাত দিয়ে তাদের ফিরে আসা সহকর্মী আবুল হোসেন, আব্দুল আজিজসহ স্থানীয়রা জানান, আগামী এক সেপ্টেম্বর থেকে তারা সুন্দরবনের গভীরে মাছ ধরতে যাওয়ার প্রস্তুত নিচ্ছিল। যার অংশ হিসেবে নৌকা ও জালদড়া মেরামতের কাজ করছিল সুন্দরবনের দাড়গাং নদী সংলগ্ন খালে। এ সময় ছয় সাতজনের একদল জলদস্যু দুই দফা সেখানে হানা দেয়। একপর্যায়ে তারা চারটি নৌকা থেকে চারজনকে অপহরণ করে নিয়ে যায়।
স্থানীয় ইউপি সদস্য ও প্যানেল চেয়ারম্যান আব্দুল হামিদ লালটু জানান, জলদস্যুরা নিজেদের কাজল বাহিনীর সদস্য বলে পরিচয় দিয়েছে। তারা প্রতিজন জেলের মুক্তিপণ বাবদ ৫০ হাজার টাকা দাবি করেছে।
তিনি আরও দাবি করেন, এই এলাকার কয়েকজন ব্যক্তি ৩-৪ দিন আগে ২৫-৩০ হাজার টাকার কাঁচামাল বাজার করে সুন্দরবনে পাঠিয়েছে।
এ বিষয়ে পশ্চিম সুন্দরবনের সাতক্ষীরা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক মো. ফজলুল হক জানান, এখন সুন্দরবনের প্রবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। বৈধভাবে কেউ সুন্দরবনে যেতে পারছে না। আগামী পহেলা সেপ্টেম্বর থেকে বন বিভাগের অনুমতি নিয়ে জেলেরা মাছ ধরার জন্য সুন্দরবন যাবে।
তিনি আরও দাবি করেন, সুন্দরবনের পার্শ্ববর্তী খালে নৌকা প্রস্তুত করার কাজে নিয়োজিত কয়েক জেলেকে অপহরণ করা হয়েছে বলে লোকমুখে শুনেছেন। তবে নিষেধাজ্ঞা চলমান থাকায় অপহরণের শিকার কোনো জেলের পরিবারের সদস্যরা তাদের কিছু জানায়নি।
শ্যামনগর থানার ওসি মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির মোল্লা জানান, কয়েকজন জেলেকে অপহরণের বিষয়ে তথ্য পাওয়ার পর ঘটনাস্থলের উদ্দেশ্যে পুলিশ রওনা দিয়েছে। জলদস্যুদের জন্য কেউ বাজার পাঠিয়ে থাকলে উপযুক্ত প্রমাণসাপেক্ষে তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন