স্বাধীনতার ৫৪ বছর পেরিয়ে গেলেও সীমান্তবর্তী শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলার রানীশিমুল ইউনিয়নের খাড়ামোড়া এলাকার প্রায় ১০ হাজার মানুষ এখনও যোগাযোগ বিচ্ছিন্নতায় ভুগছেন। বিশেষ করে ভারতের মেঘালয়ের কোল ঘেঁষা খাড়ামোড়া গ্রামের কৃষিনির্ভর জনগণের জন্য খরস্রোতা সোমেশ্বরী নদী এখন এক চির দুঃখের নাম।
স্থানীয়রা জানান, নদীর উপর সেতু না থাকার কারণে পণ্য আনা-নেওয়া ও নিত্যপ্রয়োজনীয় যাতায়াতের সময় সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। খাড়ামোড়া গ্রাম থেকে আশেপাশের বালিজুরী, তাওয়াকুচা, বালিজুরী ফরেস্ট রেঞ্জ, গুরুচরনদুধনই, মালাকোচা, বিলভরাট, কালিবাড়ি সহ ১২টি গ্রামের মানুষ নদীর উপর দিয়ে যাতায়াত করেন।
নদীর কোল ঘেঁষে অবস্থিত বালিজুরী উচ্চ বিদ্যালয়, খাড়ামোড়া দাখিল মাদ্রাসা ও প্রাথমিক বিদ্যালয়। বর্ষার সময় নদী ভয়ংকর খরস্রোতা রূপ ধারণ করে। তখন নদীর দুই পাড়ে বাঁশের দড়ি বেঁধে নৌকা দিয়ে মানুষ পারাপার হয়। শুকনো মৌসুমে জনসাধারণ ছোট্ট ঝুঁকিপূর্ণ কাঠের সাকো ব্যবহার করে মোটরসাইকেল, ভ্যান ও অটো ঠেলে নদী পার হন।
বালিজুরী বাজার থেকে খাড়ামোড়া ও রাঙ্গাজান গ্রামের শেষ প্রান্ত ভারতীয় সীমানার দুরত্বও প্রায় ৪/৫ কিলোমিটার। সেতু না থাকায় যাতায়াতে করুন অবস্থা স্থানীয় বাসিন্দাদের।

স্থানীয়রা মনে করছেন, মাত্র কয়েকশ ফুটের একটি সেতু পুরো অঞ্চলের জীবনযাত্রার চিত্র বদলে দিতে পারে।
সরেজমিনে গিয়ে ‘রূপালী বাংলাদেশে’র প্রতিবেদক একাধিক স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছে তাদের দূর্ভোগের কথা জানতে চাইলে তাচ্ছিল্য ভরা জবাব দেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
স্থানীয়রা সরেজমিনে তাদের সমস্যার কথা জানান। নাম প্রকাশ না করা এক ভ্যানচালক বলেন, বহুত ইন্টারভিউ দিছি, কাম কিছুই অয় নাই। রাজনৈতিক নেতারা ভোট আইলে বড় বড় কথা কয়, ভোট গেলে খোঁজ নাই।
৮০ বছর বয়সী মোঃ গোলাম মাওলা বলেন, খুব কষ্টে আছি। পাকিস্তান আমল থাইকা আজ পর্যন্ত কেউ খোঁজ নেয়নি। মালামাল পার করতে হলে কান্দে কইরা বাঁশ দিয়ে পার করতে হয়। আমাদের কাছে একটি ব্রীজ স্বপ্নের মতো। বর্ষায় পার হওয়া যায় না, রোগী পার করতেও সমস্যা হয়।
স্থানীয় ছাত্র মিল্লাত বলেন, আমাদের নদী পার হয়ে স্কুলে যেতে অনেক কষ্ট হয়। গাড়ি পার করা সম্ভব হয় না। সরকার আমাদের জন্য ব্রিজ করে দিলে ভালো হয়।
এ বিষয়ে শেরপুর এলজিইডি নির্বাহী প্রকৌশলী মোস্তাফিজুর রহমান জানান, সেতু প্রকল্প প্রণয়ন করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে। অর্থ বরাদ্দ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।



সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন