সিরাজগঞ্জ সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. আমিনুল ইসলামের বিরুদ্ধে একের পর এক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। কলেজের একটি হায়েস গাড়ি রক্ষণাবেক্ষণ, চালকের বেতন ও তেল খরচ বাবদ এক বছরে প্রায় ৬২ লাখ টাকা ব্যয় দেখানো হয়েছে।
এছাড়া পরিবহন বাবদ শিক্ষার্থী প্রতি বছরে ২৫০ টাকা করে আদায় করে বছরে প্রায় ৬২ লাখ ৫০ হাজার টাকা তোলা হলেও কলেজে কোনো পরিবহন ব্যবস্থা নেই।
অভিযোগে বলা হয়েছে, মাউশির মহাপরিচালকের আগমন উপলক্ষে খাবারের বাবদ দেড় লাখ টাকা বিল করা হয়েছে; বিভিন্ন পরীক্ষার সম্মানী বণ্টনে মন্ত্রণালয়ের নীতিমালা উপেক্ষা করে ২০ লাখ টাকার অতিরিক্ত আদায় করা হয়েছে; ভর্তির সময় আইসিটি খাতে নিয়ম বহির্ভূতভাবে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ১৫ লাখ টাকার বেশি অতিরিক্ত টাকা নেওয়া হয়েছে; এবং ভর্তি ও ফরম পূরণের সময় পৃথকভাবে অর্থ আদায় করে প্রতিবছর প্রায় ২০ লাখ টাকা অতিরিক্ত তোলা হয়েছে।
এছাড়া জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার কেন্দ্র ফি বাবদ ১৩ লাখ ৫০ হাজার টাকার মধ্যে প্রায় অর্ধেক অর্থ ভুয়া বিল-ভাউচার দেখিয়ে আত্মসাৎ করার অভিযোগও রয়েছে।
গত ২৪ আগস্ট সিরাজগঞ্জে দুদকের ১৮১তম গণশুনানিতে এসব অভিযোগ উপস্থাপন করা হয়। দুদকের কমিশনার (তদন্ত) মিঞা মুহাম্মদ আলি আকবার আজিজী অভিযোগগুলোকে তফসিলভুক্ত করেন। পরে দুদক এবং মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) যৌথভাবে তদন্ত শুরু করে।
অভিযোগ অস্বীকার করে অধ্যক্ষ প্রফেসর আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘কিছু শিক্ষক ও বখাটে শিক্ষার্থী আমার সুনাম ক্ষুণ্ণ করতে অভিযোগ দিয়েছে। কলেজের একটি হায়েস গাড়ি আছে, যা শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করা হয়। গাড়ির মেইনটেন্যান্স খরচ স্বাভাবিক বিষয়। তবে এক হায়েস গাড়ির পেছনে বছরে ৬২ লাখ টাকা খরচের বিষয়ে আমি কোনো সঠিক ব্যাখ্যা দিতে পারিনি।’
মাউশির তদন্ত দলের প্রধান ও কলেজ ও প্রশাসন শাখার পরিচালক প্রফেসর বি. এম. আব্দুল হান্নান বলেন, ‘অধ্যক্ষ আমিনুল ইসলামের বিরুদ্ধে অসংখ্য অভিযোগ পাওয়া গেছে। নিরপেক্ষ তদন্ত চলছে। আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে প্রতিবেদন জমা হবে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’