সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় নিজ ঘরে গলায় বিছানার চাদর প্যাঁচানো অবস্থায় আমিনুল ইসলাম তুহিন (৩৭) নামের এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) দুপুরে উপজেলার গয়হাট্টা পারকুল গ্রাম থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পুলিশ ও পরিবারের দাবি, তুহিনের মৃত্যু ‘রহস্যজনক’।
আমিনুল ইসলাম ওই গ্রামের শামছুল আলম ভোলার ছেলে।
নিহতের স্ত্রী রুমা খাতুন জানান, তার স্বামী আগের রাতে স্বাভাবিকভাবেই নিজের শোবার ঘরে ঘুমাতে যান। তিনিও তার পাশে ঘুমান। মঙ্গলবার ভোর সাড়ে ৪টার দিকে ফজরের আজান হলে তিনি ঘুম থেকে উঠে পাশের ঘরে গিয়ে অজু করে নামাজ পড়েন। ঘর থেকে বের হওয়ার সময় স্বামীকে ঘুমন্ত অবস্থায় দেখতে পান।
তিনি আরও জানান, নামাজ শেষে ঘরের কিছু কাজ শেষে সকাল ৮টার দিকে স্বামীকে ডাকতে ঘরে গিয়ে দেখেন, আমিনুলের গলায় বিছানার চাদর প্যাঁচানো। তিনি আমিনুলকে ডাকলেও কথা বলেননি। তখন তিনি চিৎকার করলে পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা ছুটে আসেন। পরে উল্লাপাড়া থানা পুলিশকে খবর দেওয়া হয়।
নিহত আমিনুলের বাবা শামছুল আলম ভোলা দীর্ঘদিন ধরে পক্ষাঘাতে (প্যারালাইসিস) আক্রান্ত হয়ে পঙ্গু অবস্থায় আছেন। তিনি কথা বলতে পারেন না।
আমিনুলের বৃদ্ধ মা-ও ঘটনার বিষয়ে কিছু জানাতে পারেননি। আমিনুলের আরও পাঁচ ভাই রয়েছেন। তারা প্রত্যেকেই অন্যত্র পৃথকভাবে বসবাস করেন। তারাও আমিনুলের মৃত্যুর কোনো কারণ খুঁজে পাচ্ছেন না। বর্তমানে আমিনুলের বাড়িতে তার বাবা, মা ও স্ত্রী রুমা খাতুনই বসবাস করতেন।
রুমা খাতুন জানান, তার স্বামী বিছানার চাদর গলায় প্যাঁচিয়ে আত্মহত্যা করেছেন, নাকি অন্য কোনোভাবে তার মৃত্যু হয়েছে তা তিনি বুঝে উঠতে পারছেন না।
উল্লাপাড়া মডেল থানার এসআই মো. সেলিম জানান, মরদেহ উদ্ধারের সময় তারা জানতে পারেন, আমিনুল মাদকাসক্ত ছিলেন। প্রাথমিকভাবে এটি একটি রহস্যজনক মৃত্যু বলেই মনে হচ্ছে।
তিনি জানান, আমিনুলের গলায় বা শরীরের কোথাও কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। প্রতিবেশীরাও ঘটনার বিষয়ে কোনো তথ্য জানাতে পারেননি। এই অবস্থায় ময়নাতদন্ত রিপোর্ট না পাওয়া পর্যন্ত মৃত্যুর প্রকৃত কারণ নিশ্চিত করে বলা সম্ভব নয় বলে জানান তিনি।
এসআই সেলিম আরও জানান, আমিনুলের মরদেহ সিরাজগঞ্জ শহীদ এম. মুনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে। পুলিশ ইতোমধ্যেই তদন্ত শুরু করেছে। তবে এখন পর্যন্ত নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় কোনো লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়নি।