বিয়ের খবর জানতে পেরে ক্ষিপ্ত হয়ে প্রেমিকাকে ছুরিকাঘাত করেছেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (শাবিপ্রবি) শাখা নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সঞ্জীবন চক্রবর্তী পার্থ। ছুরিকাঘাতের পর তিনি নিজের শরীরেও ছুরি দিয়ে আঘাত করেন।
বৃহস্পতিবার (২৯ মে) বিকেলে সুনামগঞ্জ শহরে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় পার্থকে আটক করে পুলিশ। বর্তমানে তিনি পুলিশি হেফাজতে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
সঞ্জীবন চক্রবর্তী পার্থ শাবিপ্রবির সাবেক শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি। তার বাড়ি সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার মোহনপুর ইউনিয়নের নৌকাখালী গ্রামে। ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের ঘটনার পর থেকে তিনি সিলেটে আত্মগোপনে ছিলেন। প্রেমিকার বিয়ের খবর জানার পর তিনি সুনামগঞ্জে ফিরে আসেন।
ছুরিকাঘাতে আহত তরুণীও শাবিপ্রবির সাবেক শিক্ষার্থী। বর্তমানে তিনি সুনামগঞ্জের একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক হিসেবে কর্মরত। তাকে সিলেটের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
পুলিশ ও আহত শিক্ষিকার স্বজনরা জানান, পার্থ ও মেয়েটি একই বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী। মেয়েটি বর্তমানে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা হিসেবে কর্মরত। বিকেলে তিনি ভাবিকে নিয়ে সুনামগঞ্জ শহরের হাছননগর এলাকার একটি দোকানে কেনাকাটা করতে যান। এ সময় পার্থ তাকে ডেকে নিয়ে ধারালো ছুরি দিয়ে একাধিকবার আঘাত করে পালিয়ে যান।
পরে গুরুতর আহত অবস্থায় স্বজনরা প্রথমে মেয়েটিকে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে যান। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
একপর্যায়ে সুনামগঞ্জ সদর থানা পুলিশ পার্থকে শহরের ধোপাখালী শ্মশানঘাট এলাকা থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় গ্রেপ্তার করে।
মেয়েটির এক স্বজন জানান, শাবিপ্রবির ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সঞ্জীবন চক্রবর্তী পার্থ মেয়েটিকে পূর্বে থেকেই হুমকি দিয়ে আসছিলেন। তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক ছিল বলে ধারণা করা হচ্ছে। মেয়েটির বিয়ের খবর জানার পর পার্থ ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে হুমকি দিতে শুরু করেন। হুমকির বিষয়টি পার্থর পরিবারকে জানানো হলেও তিনি আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠেন।
বৃহস্পতিবার বিকেলে মেয়েটিকে অনুসরণ করে শহরের হাছননগর এলাকায় এসে এক পর্যায়ে ডেকে নিয়ে ধারালো ছুরি দিয়ে অন্তত ১০টি আঘাত করে। এর মধ্যে ৮টি গভীর ক্ষতের চিহ্ন রয়েছে।
সুনামগঞ্জ সদর মডেল থানার ওসি (তদন্ত) মনিবুর রহমান বলেন, “ছেলে ও মেয়ে একই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সাবেক শিক্ষার্থী। তাদের মধ্যে পূর্বপরিচয় ছিল। এর সূত্র ধরেই পার্থ মেয়েটিকে ডেকে নিয়ে ছুরিকাঘাত করে। পরে পালিয়ে শহরের ধোপাখালী শ্মশানঘাটে গিয়ে নিজের শরীরেও আঘাত করে।”
তিনি আরও জানান, পরে পুলিশ পার্থকে গ্রেপ্তার করে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উভয়কে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। পার্থ বর্তমানে সেখানে পুলিশ হেফাজতে চিকিৎসাধীন এবং মেয়েটি সিলেটের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।