সিলেটে প্রশাসনের আশ্বাসে অনির্দিষ্টকালের পরিবহন ধর্মঘট স্থগিত করা হয়েছে। মঙ্গলবার (৮ জুলাই) দুপুর ২টার দিকে পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়ন এই ধর্মঘট প্রত্যাহারের ঘোষণা দেয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করেন সিলেট জেলা সড়ক পরিবহন বাস-মিনিবাস কোচ-মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি ময়নুল ইসলাম।
তিনি বলেন, ‘বিভাগীয় কমিশনারের নির্দেশে আমাদের সঙ্গে প্রশাসনের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হয়েছে। আমাদের ছয় দফা দাবি আমলে নেওয়া হয়েছে এবং বিকেল ৩টায় আলোচনাসভার জন্য ডাকা হয়েছে। মানুষের দুর্ভোগ বিবেচনায় আমরা আপাতত ধর্মঘট প্রত্যাহার করছি। বৈঠকের পর পরবর্তী সিদ্ধান্ত জানানো হবে।’
এর আগে মঙ্গলবার সকাল ৬টা থেকে সিলেটে শুরু হয় অনির্দিষ্টকালের পরিবহন ধর্মঘট। ফলে সকাল থেকে কোনো বাস, মিনিবাস, ট্রাক বা পণ্যবাহী যান সিলেট ছেড়ে যায়নি। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রীরা, বিশেষ করে অফিসগামী মানুষ, পরীক্ষার্থীরা ও চিকিৎসাসেবাগ্রহীতারা।
ধর্মঘটের পেছনে পরিবহন শ্রমিকদের ছয়টি প্রধান দাবি ছিল, যেগুলো হলো:
১) যানবাহনের ‘ইকোনোমিক লাইফ’ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন বাতিল: সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮-এর ৩৬ ধারা প্রদত্ত ক্ষমতাবলে সরকার বাস-মিনিবাসের জন্য ২০ বছর, ট্রাক-পিকআপ-কাভার্ডভ্যানের জন্য ২৫ বছর এবং সিএনজি, ইমা, লেগুনার জন্য ১৫ বছর মেয়াদ নির্ধারণ করেছে। এই প্রজ্ঞাপন বাতিল করতে হবে।
২) পাথর কোয়ারি ও বালুমহাল খুলে দেওয়া: সিলেট অঞ্চলের সব পাথর কোয়ারির ইজারা স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার এবং সনাতন পদ্ধতিতে বালু মহাল ও পাথর কোয়ারি চালু করতে হবে।
৩) ফিটনেস সনদের প্রক্রিয়ায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বাতিল ও ট্যাক্স প্রত্যাহার: বিআরটিএ কর্তৃক যানবাহনের ফিটনেস সার্টিফিকেট দিতে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের ছাড়পত্রের বাধ্যবাধকতা বাতিল করতে হবে। একই সঙ্গে গণপরিবহন ও পণ্য পরিবহনের ওপর আরোপিত অতিরিক্ত ট্যাক্স প্রত্যাহার করতে হবে।
৪) ক্রাশার মিল ও মালামাল জব্দ সংক্রান্ত সমস্যার সমাধান: সিলেটের সব ক্রাশার মিলের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্নকরণ বন্ধ করতে হবে, বিদ্যুৎ মিটার ফেরত দিতে হবে এবং ভাঙচুরকৃত মিল ও গাড়ি থেকে নিয়ে যাওয়া পাথর-বালুর ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।
৫) জেলা প্রশাসক প্রত্যাহার: পরিবহন মালিক, শ্রমিক, ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ার অভিযোগে সিলেটের জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ শের মাহবুব মুরাদকে অবিলম্বে প্রত্যাহার করতে হবে।
৬) চালকদের হয়রানি বন্ধ: সড়কে বালু-পাথরসহ সব ধরনের পণ্যবাহী গাড়ির চালকদের পুলিশ ও প্রশাসনের দ্বারা হয়রানি বন্ধ করতে হবে।