সোমবার, ১৩ অক্টোবর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


সিলেট ব্যুরো

প্রকাশিত: অক্টোবর ১৩, ২০২৫, ০৪:১৪ পিএম

সিলেটবাসীর প্রাণ এখন মৃত্যু ফাঁদে: বিএনপি নেতা কাইয়ুম

সিলেট ব্যুরো

প্রকাশিত: অক্টোবর ১৩, ২০২৫, ০৪:১৪ পিএম

সিলেটবাসীর গণঅবস্থান ও মানববন্ধন কর্মসূচি। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

সিলেটবাসীর গণঅবস্থান ও মানববন্ধন কর্মসূচি। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী বলেছেন, ‘ঢাকা–সিলেট মহাসড়ক কেবল একটি সড়ক নয়, এটি সিলেটবাসীর প্রাণরেখা। কিন্তু সরকারের অব্যবস্থাপনা ও চরম উদাসীনতায় এই মহাসড়ক আজ এক ভয়াবহ মৃত্যু ফাঁদে পরিণত হয়েছে।’

তিনি অভিযোগ করেন, বছরের পর বছর এই সড়কের সংস্কারের নামে হাজার কোটি টাকা ব্যয় হলেও বাস্তবে এর অবস্থা আরও করুণ হয়েছে। প্রতিদিন দুর্ঘটনায় প্রাণহানি ঘটছে, ব্যবসা-বাণিজ্য ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, আর সাধারণ মানুষের যাত্রা পরিণত হয়েছে এক দুর্বিষহ অভিজ্ঞতায়।

সোমবার (১৩ অক্টোবর) দুপুরে দক্ষিণ সুরমার হুমায়ুন রশিদ চত্বরে ‘সিলেটবাসীর গণঅবস্থান ও মানববন্ধন’ কর্মসূচিতে এসব কথা বলেন তিনি।

কাইয়ুম চৌধুরী আরও বলেন, ‘জাতীয় রাজনীতি, সিভিল সার্ভিস কিংবা সামরিক বাহিনীর মতো গুরুত্বপূর্ণ জায়গাগুলোতে সিলেটবাসীর যথাযথ প্রতিনিধিত্ব নেই। এমনকি সরকারের উপদেষ্টা পরিষদেও সিলেটের কেউ নেই। ফলে সিলেট বিভাগ এক ধরনের অবহেলার শিকার হয়ে পড়েছে। যোগাযোগ ব্যবস্থায় এই বঞ্চনা আর সহ্য করা হবে না।’

তিনি দাবি করেন, সিলেটবাসী সবসময় বিএনপির ওপর আস্থাশীল, কারণ একমাত্র বিএনপিই জনগণের পাশে থাকে এবং সুনির্দিষ্ট উন্নয়ন পরিকল্পনা নিয়ে এগোয়। তারেক রহমান প্রস্তাবিত ৩১ দফা সংস্কার কর্মসূচিতে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের সুস্পষ্ট রূপরেখা রয়েছে বলেও জানান তিনি।

কিন্তু শুধুমাত্র ভবিষ্যতের জন্য নয়, বর্তমান সরকারের কাছ থেকেও দ্রুত পদক্ষেপ দাবি করে কাইয়ুম বলেন, ‘বর্তমান সরকারকে এখনই সিলেটবাসীর দুর্ভোগ লাঘবের ব্যবস্থা নিতে হবে। শুধু চট্টগ্রামে তিন ঘণ্টায় যাওয়া নিশ্চিত করলেই চলবে না, সিলেটকেও সমান গুরুত্ব দিতে হবে।’

তিনি জানান, সড়ক ব্যবস্থার নাজুক অবস্থার প্রতিকার দাবিতে পরবর্তী কর্মসূচি হিসেবে আগামী ২০ অক্টোবর জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করবে সিলেট জেলা বিএনপি। এ ছাড়া, প্রতিটি উপজেলায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বরাবর একই দাবিতে স্মারকলিপি দেবে উপজেলা বিএনপি।

কাইয়ুম চৌধুরী অভিযোগ করেন, ‘বিগত ১৭ বছর ধরে আওয়ামী লীগ সরকার শুধু অবহেলা আর বৈষম্য করে এসেছে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কারিগরি শিক্ষাব্যবস্থা, সড়ক-রেল-পথ ও বিমান চলাচল—সব খাতে সিলেটকে বঞ্চিত রাখা হয়েছে। বিএনপি সরকারের আমলে যে সামান্য উন্নয়ন হয়েছিল, তাও এখন থমকে গেছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘সিলেট থেকে গ্যাস উৎপাদন হলেও এখানকার মানুষ গ্যাস সংকটে ভুগছে। রেলের কোচগুলো জরাজীর্ণ, ট্রেন সময়মতো চলে না। বিমানযাত্রায় ভাড়া অস্বাভাবিক হারে বাড়ানো হয়েছে। এই তিন পথেই আমরা বৈষম্যের শিকার।’

তিনি দাবি করেন, সিলেট আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি আজও বাস্তবায়ন হয়নি। তিন দফা বন্যায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির পরও সরকারের পক্ষ থেকে কোনো বড় ধরনের পুনর্বাসন কর্মসূচি গ্রহণ হয়নি। অথচ দেশের অন্যান্য অঞ্চলে নানা মেগা প্রকল্পে হাজার কোটি টাকা ব্যয় করা হচ্ছে।

বক্তব্যের একপর্যায়ে তিনি বলেন, ‘নিরাপদ, টেকসই ও স্বাচ্ছন্দ্যময় যোগাযোগ ব্যবস্থা জনগণের মৌলিক অধিকার। এই অধিকার রক্ষায় অবহেলা মানেই জনগণের জীবনের সঙ্গে ছেলেখেলা করা। আর সিলেটবাসী তা কোনোভাবেই মেনে নেবে না।’

গণঅবস্থানে অন্যান্য বক্তারা দ্রুত ঢাকা–সিলেট মহাসড়কের সংস্কার, পূর্ববর্তী প্রকল্পে দুর্নীতির তদন্ত ও দায়ীদের শাস্তি, দুর্ঘটনা রোধে বিকল্প নিরাপত্তা ব্যবস্থা এবং দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ নিশ্চিত করার দাবি জানান।

তারা উল্লেখ করেন, ‘এই আন্দোলন দলীয় নয়, এটি সিলেটবাসীর ন্যায্য অধিকার আদায়ের আন্দোলন।’

জাতীয় নির্বাচন প্রসঙ্গে কাইয়ুম বলেন, ‘গণতন্ত্র ও ভোটাধিকারের পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। ধানের শীষ গণতন্ত্র, অধিকার ও মুক্তির প্রতীক—এই প্রতীকের বিজয়ের মাধ্যমেই জনগণের শাসন প্রতিষ্ঠিত হবে।’

গণঅবস্থানে বক্তব্য রাখেন: জেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক তাজরুল ইসলাম তাজুল, নজমুল হোসেন পুতুল, অ্যাডভোকেট হাসান পাটোয়ারী রিপন, ফালাকুজ্জামান চৌধুরী জগলু, ডা. এনামুল হক, অধ্যাপক জিল্লুর রহমান সুয়েব, অধ্যক্ষ নিজাম উদ্দিন তরফদার, বদরুল ইসলাম জয়দু, অ্যাডভোকেট সাঈদ আহমদ, আব্দুল কাদির সমছু, অ্যাডভোকেট মোস্তাক আহমেদ, আলী আকবর আলী, মাহবুব আলম, মনিরুল ইসলাম তুরন, আবুল হাসনাত, ফজলে রাব্বি আহসান, শাহিন আলম জয়, আপ্তাব উদ্দিন, ছাদিকুর রহমান টিপু, রেজাউর রহমান চৌধুরী রাজু, ফখরুল ইসলাম পাপলু, জামাল মেম্বার, আব্দুল মালিক মল্লিক, সাহেদ মেম্বার, রুহুল আমীন, আমিনুর রহমান চৌধুরী সিফতা, পাবেল রহমান রাশেদুল হাসান চৌধুরী, দিনার আহমদ শাহ, রায়হানুল হক, মো. শাহিন আহমদ ও মেহেদি হাসান রফি।

Link copied!