ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের ১০ মাস পরও ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তার দপ্তরের তথ্য বাতায়নে দেখা যাচ্ছে শেখ মুজিব ও ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার ছবি।
এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় বিএনপি-জামায়াতসহ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধিরা।
রোববার (১ জুন) দুপুরে উপজেলার মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তার দপ্তরের তথ্য বাতায়নের ওয়েবসাইটে গেলে ফ্যাসিস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তাঁর বাবা শেখ মুজিবের ছবি দেখা গেছে।
জানা যায়, গত ৫ আগস্টের পর সরকারি-বেসরকারি সব প্রতিষ্ঠান থেকে শেখ হাসিনার ছবিসহ আওয়ামী আমলের সব ছবি সরানো হয়েছে। তবে উপজেলা মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তার নিয়ন্ত্রণে থাকা জাতীয় তথ্য বাতায়নের ওয়েবসাইটের কভার ফটোতে বহাল আছে শেখ হাসিনা ও তার বাবা শেখ মুজিবের ছবি।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা রবিউল ইসলাম রবি বলেন, ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মাধ্যমে ফ্যাসিস্ট হাসিনার বিদায় হলেও তার ছবি না সরানোর অর্থ হচ্ছে ফ্যাসিবাদী শাসন ব্যবস্থার চর্চা পুনর্বহাল রাখা। আমরা অতিসত্তর হাসিনাবাদি শাসন ব্যবস্থার চর্চা বিলোপ চাই। সেই সঙ্গে এ ব্যাপারে উপজেলার কর্মকর্তাদের সজাগ থাকার আহ্বান জানাই।
বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক ইলিয়াস আলী হৃদয় বলেন, ছাত্র-জনতার আন্দোলনের ফ্যাসিস্ট হাসিনার পতন হয়েছে ঠিকই, কিন্তু কিছু আমলারা এখনো শেখ হাসিনার শাসনব্যবস্থা বহাল রেখেছে এবং তার গুণগান গাইছে।
তিনি আরও বলেন, মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা এই উপজেলায় ৭-৮ বছর ধরে আছে। এতদিন তিনি কীভাবে এক উপজেলায় থাকেন? তার বিরুদ্ধে অনেক অনিয়মের অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি প্রশাসন। আমরা তার শাস্তি দাবি করছি।
ঠাকুরগাঁও জেলা ও বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা বিএনপি এবং উপজেলা জামায়াতের একাধিক নেতা বলেন, গত ৫ আগস্ট স্বৈরাচারের পতন ঘটানো সম্ভব হলেও প্রশাসন ও বিভিন্ন দপ্তরে তাদের রেখে যাওয়া দোসরদের এখনো সরানো সম্ভব হয়নি। এই কারণে বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে তাদের রেখে যাওয়া দোসররা এখনো টিকে আছে।
উপজেলা মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা মো. আবু বেলাল ছিদ্দিক বলেন, ওয়েবসাইটের তথ্য বাতায়নের সমস্যার কারণে ঢুকতে পারিনি। তাই ছবিটি সরাতে পারিনি।
বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পলাশ কুমার দেবনাথ বলেন, সরকার পতনের পরই উপজেলার সব দপ্তরকে তথ্য বাতায়নসহ অফিস ও ওয়েবসাইট থেকে বর্তমান সময়ের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ না, এমন ছবি সরিয়ে ফেলার জন্য বলা হয়েছে। যদি এমন ছবি থেকে থাকে, তবে ওনার (মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার) ঊর্ধ্বতন কতৃপক্ষকে বিষয়টি জানাব।
আপনার মতামত লিখুন :