ঢাকা বৃহস্পতিবার, ০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫

এমদাদ হোসেনের দ্বিতীয় কাব্যগ্রন্থ ‘বেদনার দুর্দিনে তুমি আমার প্রার্থনা হও’

আরফান হোসাইন রাফি
প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৪, ২০২৫, ০৩:৫৬ পিএম
ছবি-রূপালী বাংলাদেশ

আগামী অমর একুশে বইমেলায় ‘বই চত্বর পাবলিকেশন’ থেকে প্রকাশিত হতে যাচ্ছে কবি এমদাদ হোসেনের দ্বিতীয় কাব্যগ্রন্থ ‘বেদনার দুর্দিনে তুমি আমার প্রার্থনা হও’। এটি শুধু চিরায়ত প্রেমের রোম্যান্টিক উদযাপন নয়; বরং আধুনিক মানুষের বিচ্ছেদ, শূন্যতা, অনুশোচনা ও কঠোর বাস্তবতার কাছে পরাজিত হৃদয়ের নীরব স্বীকারোক্তি হিসেবে এরই মধ্যে সাহিত্যমহলে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

এই গ্রন্থে কবিপ্রেমের উচ্ছ্বাসের চেয়ে বেশি তুলে ধরেছেন বিচ্ছেদের যন্ত্রণা, দীর্ঘশ্বাস এবং অন্তর্দাহের দ্রোহ। ভূমিকা অংশে তিনি সততার সঙ্গে স্বীকার করেছেন, তার কবিতাগুলো সেই অদৃশ্য যুদ্ধের শব্দ, যা প্রিয়জনকে হারানোর শূন্যতা থেকে কিংবা বাস্তব জীবনের সংকটে সম্পর্কের স্বাভাবিক সূত্রগুলো ভেঙে যাওয়ার বেদনা থেকে জন্ম নেয়। ব্যক্তিগত বিরহের সীমানা অতিক্রম করে এই সংকলন হয়ে উঠেছে এক সার্বজনীন অভিজ্ঞতার দলিল, যেখানে প্রত্যেক পাঠক নিজের না-বলা কথাগুলো খুঁজে পাবে নতুন করে। সরল প্রেম থেকে জটিল জীবনবোধে উত্তরণের ক্ষেত্রে কবির কাব্যিক দক্ষতা বইটিকে করেছে আরও গভীর, আরও পাঠযোগ্য।

‘সুন্দরী তমা’ কবিতায় কুয়াশাঢাকা পথে হাঁটার সহজ আকাক্সক্ষা ফুটে উঠেছে; যেখানে ‘অরুমিনা’ কবিতায় প্রেম টিকিয়ে রাখতে একজন মানুষকে কখনো কখনো ‘জোচ্চর, ঠগ, প্রতারক’ হতে হয়, এই স্বীকারোক্তি সম্পর্কের জটিলতাকে নতুনভাবে উদ্ভাসিত করেছে। আবার ‘মুসিবতের নাম ভালোবাসা’ কবিতাটি তার আঞ্চলিক ভাষার সহজ-সরল টানেই বাড়িয়েছে গ্রন্থের মাটিঘেঁষা আবেদন।

এখানে কবি বলেন, প্রেমিকার মন বোঝার চেয়ে মহাকাশবিদ্যা বা আগ্নেয়গিরি বোঝা যেন অনেক সহজ। বইয়ের মর্মকথা হিসেবে কবি জানান, বেদনার দিনে প্রিয়জনের কাছে আশ্রয় চাওয়া মানে কোনো ধ্বংস নয়; বরং নতুন জীবনের জন্য প্রেরণা খোঁজা। কষ্ট যেন ঝরা পাতার মতো নয়, বরং বসন্তের প্রথম কুঁড়ির মতো আশা জাগায়, এই গভীর প্রার্থনাই বইটির নামের অন্তরালে লুকিয়ে আছে। বইটির মনোমুগ্ধকর প্রচ্ছদ করেছেন শিল্পী আশরাফুল ইসলাম। পাঠকের সামর্থ্যরে কথা বিবেচনায় রেখে মূল্য রাখা হয়েছে মাত্র ২৫০ টাকা। সাহিত্যপ্রেমীদের হৃদয়ের শূন্যতা পূরণের এক নীরব প্রচেষ্টা হিসেবে কাব্যগ্রন্থটি ২০২৬ সালের বইমেলায় বিশেষ অবস্থান দখল করবে, এমনটাই প্রত্যাশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।