বাংলাদেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক অবস্থা এক বছর আগের তুলনায় অনেকটাই উন্নত অবস্থায় রয়েছে বলে মন্তব্য করেছে বিশ্বব্যাংক। প্রতিষ্ঠানটির দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের নতুন ভাইস প্রেসিডেন্ট জোহানেস জুট এই মূল্যায়ন দেন।
রোববার (১৩ জুলাই) রাজধানীর সচিবালয়ে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি এ মন্তব্য করেন।
বৈঠক শেষে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, বিশ্বব্যাংকের মন্তব্য হলো, বাংলাদেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক অবস্থা এখন খুবই ভালো। প্রায় এক বছর আগে আমরা আশঙ্কা করেছিলাম পরিস্থিতি কঠিন হতে পারে। কিন্তু এখন আমরা সঠিক পথে এগোচ্ছি বলে মনে হচ্ছে।
তিনি জানান, ভাইস প্রেসিডেন্ট জোহানেস জুট এখন থেকে দক্ষিণ এশিয়ার কার্যক্রম দেখবেন এবং তার অফিস ওয়াশিংটনের পরিবর্তে নয়াদিল্লিতে থাকবে। তিনি বাংলাদেশে বিশ্বব্যাংকের চলমান প্রকল্প ও বাজেট সহায়তার বিষয়ে আগেই অবগত।
অর্থ উপদেষ্টা আরও জানান, প্রায় এক বছর আগে অনেকেই মনে করেছিলেন, বাংলাদেশ কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হবে। কিন্তু এখন বিশ্বব্যাংক সামগ্রিক পরিস্থিতি নিয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছে।
অর্থ উপদেষ্টা বলেন, বিশ্বব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট দেশের আর্থিক খাত, পেমেন্ট ব্যালেন্স এবং বৈদেশিক মুদ্রা খাতের উন্নত অবস্থা স্বীকার করেছেন। তিনি বেসরকারি খাতের বিকাশ এবং আরও বৈদেশিক বিনিয়োগ আকর্ষণের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন।
তিনি আরও বলেন, ১০-১২ বছর আগে যখন জোহানেস জুট বাংলাদেশে বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন, তখনকার তুলনায় দেশের অবকাঠামো উন্নয়নকে তিনি ইতিবাচকভাবে উল্লেখ করেছেন।
এক প্রশ্নের জবাবে ড. সালেহউদ্দিন জানান, আন্তর্বর্তীকালীন সরকার ইতোমধ্যে বিশ্বব্যাংকের কাছ থেকে প্রত্যাশিত সহায়তা পেয়েছে। আগামী অক্টোবর মাসে বিশ্বব্যাংক-আইএমএফ বার্ষিক সভায় সহায়তার পরবর্তী ধাপ উত্থাপন করা হবে।
তিনি বলেন, বিশ্বব্যাংক জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) পুনর্গঠন ও সংস্কারে সন্তুষ্ট। বাংলাদেশ ব্যাংকের তত্ত্বাবধানে ব্যাংকগুলোর পুনর্গঠন কাজ শুরু হয়েছে। এনবিআরকে দুটি পৃথক সংস্থায় ভাগ করার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন দেখতে চায় বিশ্বব্যাংক, যদিও এতে সময় লাগবে।
বৈঠকে চট্টগ্রাম বন্দর ও লালদিয়ায় কনটেইনার টার্মিনাল নির্মাণ নিয়েও আলোচনা হয়। বিশ্বব্যাংক অবকাঠামো খাতে সহযোগিতা দিতে আগ্রহী বলে জানান তিনি।
মার্কিন শুল্ক ইস্যু নিয়ে জানতে চাইলে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, বাণিজ্য উপদেষ্টা ও আলোচনা প্রতিনিধি দলের প্রধান দেশে ফেরার পর বিস্তারিত জানানো হবে।
স্বাধীনতার পর থেকে বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে বিশ্বব্যাংক এখন পর্যন্ত প্রায় ৪৬ বিলিয়ন ডলার সহায়তা দিয়েছে, যার বেশিরভাগই অনুদান বা স্বল্প সুদে ঋণ।