ঢাকা শুক্রবার, ২৭ জুন, ২০২৫

জমি দখল নিতে এনআইডি বাতিলের চক্রান্তের অভিযোগ দুই সহোদরের

রূপালী প্রতিবেদক
প্রকাশিত: জুন ২৭, ২০২৫, ০৩:৫৫ পিএম
ছবি-রূপালী বাংলাদেশ

জমি দখল নিতে বাবাকে করা হয় হত্যা। এরপর হুমকির মুখে পরিবার নিয়ে গ্রাম ছাড়ে দুই সন্তান। জমি দখলে রাখতে দুই সন্তানের জাতীয় নাগরিক পরিচয়পত্র বাতিলের চক্রান্ত শুরু করেছে ভূমিদস্যু চক্রটি। প্রাণনাশের ভয়ে ভুক্তভোগীরা এখনো নিজ গ্রামে ফিরতে পারছেন না বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী দুই সহদোর ভাই। 

শুক্রবার (২৭ জুন) রাজধানীর ঢাকা রিপোর্টাস ইউনিটি ডিআরইউতে এসব অভিযোগ জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ উপজেলার খারিজা ভাজনী গ্রামের ভবেন্দ্রনাথ রায় প্রধান ও বজেন্দ্রনাথ রায় প্রধান নামের দুই সহোদর।

লিখিত সংবাদ সম্মেলনে ভবেন্দ্রনাথ রায় প্রধান জানান, তারা তিন ভাই ও এক বোন মিলে জন্মেছেন পঞ্চগড় জেলার টেপ্রীগঞ্জ ইউনিয়নের খারিজা ভাজনী গ্রামে। তাদের বাবা জলধর রায় প্রধান ওই ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান হিসেবে তিনবার দায়িত্ব পালন করেছেন। পরিবারটি দীর্ঘকাল ধরে ওই এলাকায় বসবাস করে আসছে এবং স্থানীয় শিক্ষা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানসহ জনকল্যাণে জমি দান করেছেন।

ভবেন্দ্রনাথ বলেন, “আমরা পৈত্রিক সম্পত্তি থেকে ২ দশমিক ৮৮ একর জমির ওপর ১৯৮১ সালে গাজুকাটি তফসিলি উচ্চ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করি এবং আমি নিজেই দলিল করে তা বিদ্যালয়ের নামে দান করি। এছাড়া গাজুকাটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মসজিদ, মন্দির ও বাজার প্রতিষ্ঠার জন্যও আমাদের পরিবার জমি দিয়েছে। তবে এসব জনহিতকর কাজে ভূমিদস্যুদের রোষানলে পড়েন তারা।”

লিখিত অভিযোগে বলেন, ১৯৭২ সালে আমার বাবা জলধর রায় প্রধানকে সন্ত্রাসীরা নির্মমভাবে হত্যা করে পৈত্রিক সম্পত্তি দখলের উদ্দেশ্যে। 

ভবেন্দ্রনাথ জানান, হত্যার পেছনে ফিরোজ শেখ, চাঁন মিয়া, আনোয়ার হোসেন হরমুজ, আমির আলী গার্ড ও ময়েজ উদ্দিনসহ কয়েকজন স্থানীয় ভূমিদস্যু জড়িত ছিলেন।

তিনি বলেন, “বাবার হত্যার পর আমরা প্রাণভয়ে এলাকা ছাড়ি। পরে ফিরে আসলেও হত্যাকারীদের সন্তানেরা আমাদের হুমকি দিয়ে যায়। এমনকি তারা আমাদের মৃত দেখিয়ে ভুয়া দলিল তৈরি করে সম্পত্তি আত্মসাৎ করে।”

তাদের অভিযোগ, স্থানীয় এক ইউনিয়ন চেয়ারম্যান বিগত ফাসিষ্ট আওয়ামী সরকারের ১৫ বছর তাদের নাগরিক সনদ ও জন্মনিবন্ধন প্রদান না করে ভূমিদস্যুদের পক্ষ নিয়েছেন। পরবর্তীতে পার্শ্ববর্তী মাড়েয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বিষয়টি অনুধাবন করে জাতীয় পরিচয়পত্রসহ নাগরিক সনদ প্রদান করেন। কিন্তু জাতীয় পরিচয়পত্র পাওয়ার পর ভূমিদস্যু স্থানীয় সন্ত্রাসী মোহাম্মদ নাজমুল হোসাইন চৌধুরী বাপ্পি ও তার সহযোগীরা কিছু গণমাধ্যমে মিথ্যা তথ্য দিয়ে সংবাদ প্রকাশ করিয়ে নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ দায়ের করে। সকল দলিল ও প্রমাণ থাকা স্বত্তেও তা সঠিকভাবে যাচাই-বাচাই ছাড়া অসাধু চক্রের মাধ্যমে এনআইডি প্রাথমিকভাবে স্থগিত করে।

ভবেন্দ্রনাথ রায় বলেন, আমরা গত ২৫ জুন জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক বরাবর আবেদন করেছি যাতে সঠিক তদন্তের মাধ্যমে আমাদের পরিচয়পত্র পুনরায় সচল করা হয়। আমরা চাই আমাদের মৌলিক অধিকার, ভোটাধিকার ও বসবাসের অধিকার—ফিরিয়ে দেওয়া দাবি জানাচ্ছি এবং আমার বাবা হত্যার সঠিক বিচার চাই।