পুলিশ ব্যারাকে এক নারী কনস্টেবলকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। শুধু তাই নয়, ভিডিও ধারণ করে একাধিকবার তাকে ধর্ষণ করা হয় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনাটি ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার পুলিশ ব্যারাকের।
এমন অভিযোগের কথা শুনেছেন ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দ মোহাম্মদ আখতার হোসেন। তবে তার কাছ থেকে বিস্তারিত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) সন্ধ্যায় ওসি সৈয়দ মোহাম্মদ আখতার হোসেন রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, ‘এমন অভিযোগের একটা তথ্য আমি শুনেছি। সিনিয়র কর্মকর্তারা সেটি তদন্ত করছেন। এর বেশি বলতে পারব না।’
পুলিশ সূত্র জানায়, এ ঘটনার তদন্তে দুই জনকেই পুালিশ লাইন্সে সংযুক্ত করে তদন্ত কাজ শুরু হয়েছে।
জানা গেছে, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে আশুলিয়া থানা থেকে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জে যোগদান করেন ভুক্তভোগী ওই নারী কনস্টেবল। অভিযুক্ত কনস্টেবল গত রমজানের ঈদের পরের দিন ভুক্তভোগীকে ব্যারাকের রুমে ঢুকে ধর্ষণ করেন। সে সময় ওই নারী পুলিশ সদস্য রুমে একা ছিলেন। এ ঘটনার ভিডিও ধারণ করে আরও একাধিকবার তাকে ধর্ষণ করা হয় বলেও অভিযোগ করেছেন ভুক্তেভোগী।
এ বিষয়ে চলতি মাসে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আল আমিনকে অভিযোগ দেন নারী কনস্টেবল। তবে ওই কর্মকর্তা শুরুতে কোনো ব্যবস্থা নেননি বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীর। তার এও অভিযোগ, পুলিশ পরিদর্শক আল আমিনের বাড়ি অভিযুক্তের এলাকায় হওয়ায় কোনো ব্যবস্থা নেননি তিনি। তবে পরিদর্শক আল আমিন তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
ওই ঘটনার বিষয়ে থানা সূত্র জানায়, অভিযোগকারী ও অভিযুক্তের মধ্যে প্রেম সংক্রান্ত বিষয় কর্মকর্তা কর্মচারীরা জানতেন।
এদিকে ওই ঘটনায় তদন্তে দোষ পেলে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছে ঢাকা জেলা পুলিশ।
এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জেলা পুলিশ জানায়, ঢাকা জেলার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় পুরুষ কনস্টেবলের বিরুদ্ধে নারী কনস্টেবলকে বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণের অভিযোগ সংক্রান্তে বিভিন্ন মিডিয়ায় প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ ঢাকা জেলা পুলিশের দৃষ্টিগোচর হয়েছে।
‘উল্লিখিত নারী ও পুরুষ কনস্টেবল ঢাকা জেলার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় কর্মরত ছিলেন। গত ১৯ আগস্ট উক্ত নারী কনস্টেবল দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জের নিকট অভিযোগ করেন যে, অভিযুক্ত পুরুষ কনস্টেবল তাকে ৫ মাস যাবৎ বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণ করে আসছে। ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার বিষয়টি অবগত হওয়ার পর তাৎক্ষণিকভাবে উভয় পুলিশ সদস্যকে জেলা পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করেন এবং ঘটনাটি তদন্তের জন্য তদন্তকারী কর্মকর্তা নিয়োগ করেন। এ বিষয়ে ইতোমধ্যে তদন্ত শুরু হয়েছে।’
বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, ‘বাংলাদেশ পুলিশ একটি পেশাদার ও সুশৃঙ্খল বাহিনী । পুলিশের কোনো সদস্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ উত্থাপিত হলে তদন্ত সাপেক্ষে বিভাগীয় ও আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়ে থাকে। উল্লেখিত ঘটনায় অভিযুক্ত দোষী সাব্যস্ত হলে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় এবং আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন