সিলেট বিভাগের উন্নয়ন নিয়ে ষড়যন্ত্র রুখে দেওয়া হবে: আরিফুল হক চৌধুরী

সিলেট বিভাগের উন্নয়ন নিয়ে ষড়যন্ত্র রুখে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন সিলেটের সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। তিনি বলেন, বিগত ১৬ বছরে সিলেটে কোনো দৃশ্যমান উন্নয়ন হয়নি। ঢাকা-সিলেট ৬ লেন নির্মাণাধীন সড়ক এখন সিলেটের গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এছাড়া, ব্রিটিশ আমলে নির্মিত রেললাইনে কোনো সংস্কার হয়নি। লক্কড়-ঝক্কড় রেললাইনে ঘন ঘন দুর্ঘটনা ঘটছে। নতুন একটি রেললাইন ও নতুন ট্রেন চালুর ঘোষণা দিলেও তা বাস্তবায়িত হয়নি। সিলেটের বিমান ভাড়াও প্রতি মুহূর্তে বাড়ছে। এর বাইরেও নানা ক্ষেত্রে সিলেট বঞ্চিত রয়েছে।

শনিবার (১৮ অক্টোবর) সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ‘ঢাকাস্থ বৃহত্তর সিলেটবাসী’ ব্যানারে আয়োজিত মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচিতে বক্তারা এসব কথা বলেন। ঢাকা-সিলেট রোডে টাঙ্গুয়ার এক্সপ্রেস ট্রেন চালু, দুই জোড়া স্পেশাল ট্রেনসহ রেলপথ সংস্কারে ৮ দফা দাবি এবং ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের কাজ দ্রুত শেষ করার দাবি জানানো হয়।

মানববন্ধনে জালালাবাদ এসোসিয়েশনের সভাপতি সি এম কয়েস সামীর সভাপতিত্বে ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট জসীম উদ্দিন এবং সিলেট বিভাগ সাংবাদিক সমিতি (সিবিসাস) সাংগঠনিক সম্পাদক সেলিম আহমদ পরিচালনায় অতিথির বক্তব্যে আরিফুল হক চৌধুরী আরও বলেন, ‘সরকারের কাছে আমরা জানতে চাই, কবে ঢাকা-সিলেট ৬ লেন সড়কের কাজ শেষ হবে, কবে রেললাইন সংস্কার ও নতুন ট্রেন চালু হবে? যদি ১৫ দিনের মধ্যে আমাদের দাবি পূরণ না হয়, আমরা কঠোর আন্দোলনে নামব। সিলেটের উন্নয়নের বিরুদ্ধে কোনো ষড়যন্ত্র মেনে নেওয়া হবে না। আমরা সকল ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াব।’

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামের সহকারী সম্পাদক এহসানুল মাহবুব জুবায়ের বলেন, ‘সিলেট বাংলাদেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল। প্রাকৃতিক ও খনিজ সম্পদের দিক থেকে এটি ভরপুর। তবে রেলপথ, সড়কপথ ও আকাশপথে সিলেট সবচেয়ে অবহেলিত। যদি সড়কপথের কাজ দ্রুত শেষ না হয় এবং নতুন ট্রেন চালু না করা হয়, এই আন্দোলন সিলেটজুড়ে ছড়িয়ে পড়বে।’

জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক এমপি নওয়াব আলী আব্বাছ খান বলেন, ‘সিলেটের রেলপথে অনুমোদিত টাঙ্গুয়ার এক্সপ্রেস ট্রেন চালু সহ প্রতিটি ট্রেনে নতুন বগি না দেওয়া হলে আগামী ১ নভেম্বর সিলেটজুড়ে ট্রেন অবরোধ করা হবে। কঠোর আন্দোলন ছাড়া আমাদের দাবি পূরণ হবে না।’

সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল কাইয়ুম চৌধুরী বলেন, ‘সারাদেশে যোগাযোগের ক্ষেত্রে উন্নয়নের জোয়ার বইছে, অথচ সিলেট অবহেলিত। বিগত সরকার সিলেটের কোনো উন্নয়ন করেনি। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উন্নয়ন তালিকাতেও সিলেট নেই। যদি আমাদের দাবিগুলো দ্রুত বাস্তবায়ন না হয়, আমরা রেমিট্যান্স বন্ধসহ কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করব।’

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন বিএনপি নেতা আবেদ রাজা, জালালাবাদ এসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি আকরব হোসেন মঞ্জু, নির্বাহী সদস্য তোফায়েল খান, প্রবীণ আইনজীবী তবারক হোসেন, দৈনিক দেশবার্তার সম্পাদক কাজী তোফায়েল আহমদ, বর্তমান সভাপতি আবুল কালাম, জামায়াতে ইসলামী পল্টন শাখার আমির শাহীন আহমদ খান, সিলেট বিভাগ যোগাযোগ উন্নয়ন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক কুতুব উদ্দিন সোহেল, রেল সংস্কারে ৮ দফা দাবি বাস্তবায়ন আন্দোলনের কুলাউড়া সমন্বয়ক আজিজুল ইসলাম, আতিকুর রহমান আখই, সংগঠক আবু বক্কর সিদ্দিক, সুজন মিয়াসহ সিলেটের বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।