স্বাক্ষরিত জুলাই সনদের আইনগত ও সাংবিধানিক ভিত্তি, সকলের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড প্রস্তুত করে পিআর পদ্ধতিতে আগামী ফেব্রুয়ারিতেই অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের প্রতিনিধিদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহবান জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমীর মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন।
শনিবার (১৮ অক্টোবর) রাজধানীর মগবাজারস্থ আল ফালাহ মিলনায়তনে হাতিরঝিল পশ্চিম থানা জামায়াত আয়োজিত এক মহিলা কর্মী সমাবেশে প্রধান বক্তার বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
থানার ভারপ্রাপ্ত আমীর নূরুল ইসলাম আকন্দের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি রাশেদুল ইসলাম রাশেদের পরিচালনায় এবং হাফেজ মাহফুজুর রহমানের কুরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে শুরু হওয়া সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা-১২ সংসদীয় আসনে জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী সাইফুল আলম খান মিলন। বিশেষ অতিথি ছিলেন ঢাকা মহানগরী উত্তরের কর্মপরিষদ সদস্য ও আসন পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার নো’মান আহমেদী। উপস্থিত ছিলেন থানা কর্মপরিষদ সদস্য গোলাম মাওলা ও আকতার হোসেন প্রমূখ।
সেলিম উদ্দিন বলেন, ইসলাম নারীদেরকে অনন্য সাধারণ মর্যাদায় অভিষিক্ত করেছে। ইসলামের প্রাথমিক সময় সহ সকল যুগে নারীরা দ্বীন প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। প্রথম ইসলাম কবুলকারী ছিলেন উম্মুল মোমেনীন হযরত খাদিজাতুল কুবরা (রা.)। আর প্রথম শহীদ ছিলেন হযরত সুমাইয়া (রা.)। ওহুদ যুদ্ধে রাসূল (সা.)-এর সামনে মানবঢাল হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন হযরত সুবাইতা (রা.)। আর মুতার যুদ্ধে অসীম সাহসিকতা প্রদর্শন করেছিলেন হযরত হিন্দা (রা.)। তাই ইসলামী আন্দোলনের নারী সমাজকে হীনমন্য হলে চলবে না বরং দ্বীন প্রতিষ্ঠায় সর্বোচ্চ কুরবানীর নজরানা পেশ করতে প্রস্তুত থাকবে হবে। তিনি দেশকে ক্ষুধা-দারিদ্রমুক্ত করে ন্যায়-ইনসাফের এক নতুন বাংলাদেশ গড়ার জন্য পুরুষদের পাশাপাশি নারী সমাজকেও ময়দানে ঐতিহাসিক ভূমিকা পালনের আহবান জানান।
তিনি বলেন, জুলাই বিপ্লবের মাধ্যমে নতুন আশাবাদের সৃষ্টি হলেও সরকারের উপর্যুপরি ব্যর্থতার কারণে সাফল্য নিয়ে নানাবিধ সন্দেহ-সংশয়ের সৃষ্টি হয়েছে। পতিত ফ্যাসীবাদীরা নতুন করে মাথাচাঁড়া দিতে শুরু করেছে। দেশে চাঁদাবাজী সহ অপরাধ প্রবণতা বন্ধ হয়নি বরং চাঁদা না দেওয়ায় প্রকাশ্য রাজপথে পাথর মেরে মানুষ হত্যা করা হচ্ছে। বিপ্লবোত্তর এ পর্যন্ত প্রায় পৌণে ২শ মানুষকে একইভাবে হত্যা করা হয়েছে। প্রতিনিয়তই দেখা যাচ্ছে পতিতরা ঝটিকা মিছিল করছে। তাই পতিত আওয়ামী লীগের ওপর শুধুই নিষেধাজ্ঞা নয় বরং তাদের দোসর জাতীয় পার্টির সহ অন্যান্য সহযোগিদের নিষিদ্ধ করতে হবে। অন্যথায় জাতিকে কলঙ্কমুক্ত করা যাবে না এবং দেশে শান্তিও প্রতিষ্ঠিত হবে না।
মহানগরী আমীর বলেন, পতিত স্বৈরাচারি ও ফ্যাসিবাদী শক্তি রাষ্ট্রীয় অবকাঠামোকে পুরোপুরি ধ্বংস করে দিয়েছে। পরিকল্পিতভাবে ধ্বংস করা হয়েছে দেশের গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ। বিগত প্রায় ১৬ বছরে দেশে নির্বাচনের নামে প্রহসন ও তামাশা করা হয়েছে। তাই দেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য রাষ্ট্রের কার্যকর সংস্কার, মানবতাবিরোধী ও গণহত্যাকারীদের বিচার, স্বাক্ষরিত জুলাই সনদের আইনী ভিত্তি এবং পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন গণদাবিতে পরিণত হয়েছে। আর সে দাবি আদায়ের জন্য আমরা আজ গণসংযোগ করছি।
তিনি দেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য পুরুষদের পাশাপাশি নারীদেরকে ময়দানে সক্রিয় ভূমিকা পালনের আহবান জানান।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন